অস্বীকার প্রধাণত দু’প্রকারের হতে পারে। যেমন ধরুন আপনি মানবতার কল্যাণে কিছু কাজ করছেন, আমি তা জানি ও ভালভাবে বুঝি কিন্তু আমার ব্যক্তিগত কোন স্বার্থে আপনার এ কল্যাণকর কাজকে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়- এ কারনে আপনার এ কল্যাণকর কাজকে কোন অজুহাতে আমি আস্বীকার করলাম। এটা হল একধরনের অস্বীকারের উদাহরণ।এ ধরণের অস্বীকার নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় ও হীণ-কোন সন্দেহ নেই।
আরেক ধরনের অস্বীকারের উদাহরণ হল- ধরুন আপনি মানবতার কল্যাণে কোন কিছু করছেন এবং জন্য কিছু মুলনীতি নির্ধারণ করে সে আলোকে কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন।আপনার জ্ঞানানুসারে আপনার নীতি ও কর্মসূচী অতুলণীয় ও সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু আমার জ্ঞানানুসারে তা মানবতার জন্য ক্ষতিকর। এ কারনে আমি আপনার নীতি ও কর্মোকে অস্বীকার করলাম।
যেহেতু উভয়েই মানুষ, সুতরাং উভয়েই সীমিত জ্ঞানের অধিকারী। হতে পারে উভয়েরই চিন্তা পদ্ধতি ও অনুসিদ্ধান্ত ভূল অথবা একজনে ভূল অপরজন সঠিক।যেহেতু উভয়েরই উদ্দেশ্য এক তথা মানবতার কল্যাণ।কিন্তু জ্ঞান বা চিন্তা পদ্ধতির ভূলের কারণে পরস্পর পরস্পরকে অস্বীকার করছে।এক্ষেত্রে কোন অস্বীকার কারী দোষী নয়।
এবার আসি মুল কথায়।যারা ইসলামকে অস্বীকার করছে তাদের মধ্যে যদি কেউ প্রথম শ্রেণীর অস্বীকারকারী হয় তা হলে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে তারা অপরাধী।কিন্তু যদি তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর মধ্যে পড়ে,তাহলে তো তাদের অপরাধী বলা যায় না।অথচ ইসলাম সকল ধরণের অস্বীকারকারীকে (কাফেরদের) জাহান্নামী বলেছে।এটা সত্যিই যদি মানবরচিত না হতো তাহলে এ ধরনের অবিচারক বক্তব্য থাকতো না।
কেউ হয়ত প্রশ্ন তুলবেন যে ইসলাম যেহেতু মানবরচিত নয়, স্রষ্টার সুতরাং তার সাথে দ্বীমতের অবকাশ নেই। আমিও এ কথার সাথে একমত যে স্রষ্টার কথার সাথে দ্বিমতের স্পর্ধা দেখানোই মুর্খতা। তবে কোন কিছু স্রষ্টার বলে দাবী করলেই তা আসলে স্রষ্টার না মানবরচিত তা যাচাই-বাছাই না করে মেনে নেয়া তার চেয়ে বড় মুর্খতা।
কোনটি স্রষ্টার আর কোনটি স্রষ্টার নয় তা কিন্তু যাচাই বাছাই হয় মানুষের সীমিত জ্ঞান দ্বারা।কারো জ্ঞানে অমুকটি স্রষ্টার আবার কারো জ্ঞানে তা স্রষ্টার নয় হিসাবেও বিবেচিত হতে পারে।নিজের বিশ্বাস না মানলেই কাউকে জাহান্নামী বলা মানব প্রকৃতি হতে পারে-স্রষ্টার নয়। তাই প্রমাণীত হয় আল কুরআন মানব রচিত, স্রষ্টা প্রদত্ত নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১:২১