somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ত্রিভুজ গল্প।

১৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাতাল

এক মাতাল হঠাৎ দেখতে পেল তার আত্মা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে । আত্মা তাকে ভয় দেখাচ্ছে, সে তাকে ত্যাগ করে চলে যাবে বলে । তখন মাতাল অনুনয় করে বললো, আমি আর কখনো মদ খাবো না, এই তোমার মাথা ছুঁয়ে বলছি জীবনে আমি আর কখনো মদ পান করবো না । তার বৌ শাড়ীর আঁচল কোমরে গুঁজে বলছে, এসব কথা তুই প্রতিদিন বলিস হারামীরবাচ্চা, তোকে আর বিশ্বাস নেই, তুই তোর মদ নিয়ে পড়ে থাক, আমি আজই চলে যাচ্ছি। পরের রাতে মাতাল তার ঘরের দরজায় পড়ে রইল, সে চোখে পানি নিয়ে আত্মাকে বলছে, বউও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, তুইও চলে যাচ্ছিস? তারপর মাতালের বুক থেকে সকল উত্তাপ বের হয়ে গেল ।

গুপ্ত ঘাতক

লিটু মিতুর সাথে প্রতারণা করেছে । আজ অনেকদিন হলো মিতু কিছুতেই এই ব্যাপারটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না । সে এখনো ভাবছে লিটু কোনভাবেই এমনটা করতে পারে না, সে এতো জগণ্য হতে পারে না। মিতুর মনে যতটা না দুঃখ ব্রেকাপ হওয়ার কারণে তার চেয়ে সে বেশি ভুগছে তাদের অন্তরঙ্গের ভিডিও ক্লিপগুলোর কারণে । কখন লিটু এগুলো অনলাইনে ছেড়ে দেয় এ ভেবে সে বারবার কেঁদে উঠছে । তাকে ভিডিও ক্লিপগুলো দুঃস্বপ্নের মত তাড়া করছে । তার শরীর ভেঙ্গে পড়েছে, চোখের নিচে কালি পড়েছে । সে বাইরে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে কখন পথের মধ্যে লিটুর সাথে দেখা হয়ে যায় আর সে ব্ল্যাকমেইল করে বসে তাকে এই ভয়ে । এভাবে অসহ্য জীবনযাপণ করছে মিতু । পরিবারের কারো সাথে সে তেমন কথা বলে না, বান্ধবীদের সাথেও কোন যোগাযোগ নেই । সে ফোন বন্ধ করে দিয়েছে লিটু যদি তাকে ফোন করে ব্ল্যাকমেইল করে এই ভয়ে । এভাবে ভুগতে ভুগতে একরাতে মিতু আত্মহত্যা করে । আর পরদিন একটা ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে গেল, ভিডিওটির নাম 'মিতু'স ইরোটিক স্ক্যান্ডাল'।


দংশিলে সমাজ

এলাকার মান্যগণ্য সকলের আলোচনার ভিত্তিতে সিমিনের নতুন নাম দেয়া হলো ধর্ষিতা। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে এই নতুন নাম দেয়া হলো। নামটা যদিও নতুন নয়, এর আগেও অনেককে এমন নাম দেয়া হয়েছিলো। তাদের সবাই ছিলো নারী । ব্যাকরণ এবং মানব সমাজের ভাষায় এ নাম শুধুমাত্র স্ত্রীলিঙ্গের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে হঠাৎ এলাকায় বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা বেড়ে গেলো । ধর্ষণের কারণ এবং ধর্ষণের পেছনে ধর্ষিতার কী কী উপসর্গ এবং অনুসর্গ ছিলো তা নিয়ে চলছে অলিতে গলিতে চুলচেরা আলোচনা । যাবতীয় জ্ঞানগর্ব উক্তি এবং উদাহরণ দিয়ে একে অপরকে বুঝাচ্ছে সিমিনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি, পোষাক পরিচ্ছদ এবং চারিত্রিকগতভাবে কতটুকু ইন্ধন জুগিয়েছিল এই ধর্ষণের পেছনে । এ সুবাদে সুরজের চায়ের ব্যবসা হয়ে গেল চাঙ্গা, সে চা বানাতে বানাতে বারবার একটা দ্বন্ধের মধ্যে পড়ে যায় সিমিন মেয়েটার দোষ কোথায় তা ভেবে । সে যতটুকু সিমিনকে দেখেছে বা জানে তাতে সিমিন ভদ্র পরিবারের একজন নম্র ভদ্র এবং শালীন পোশাক পরেই চলাফেরা করা একটা মেয়ে। সিমিনকে দেখে সিরাজও মাঝে মাঝে ভাবতো তার ছোট্ট মেয়েটাকে সিমিনের মত বানাবে।

এলাকার এই উত্তাপের মধ্যে হঠাৎ পানি ঢেলে দিলো কুদ্দুস পাগলা, সে বলে বেড়াচ্ছে এই ধর্ষণের পেঁছনে সিমিনের কোন দোষ নাই, তোরা যারা সিমিনের দোষ দিচ্ছিস সবাই নরকে পুড়বি । এ কথা শুনে সবাই একটু ঘাবড়ে গেলো। কারণ কুদ্দুস পাগলাও একসময়ের ধর্ষক ছিল । এরপর থেকেই সে পাগল । সেই রাতে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো । যারা যারা সিমিনের দোষ দিয়েছিলো তারা স্বপ্ন দেখলো, ফুলসজ্জার নরম বিছানায় তাদেরকে ধর্ষণ করছে একদল পুলিঙ্গধারী নারী। রক্তে লাল হয়ে যাচ্ছে বিছানা। আর সিমিন তা দেখে হো হো করে হাসছে। পরদিন সকালে পাগলের বেশে একদল পুরুষ ধর্ষিতা কুদ্দুস পাগলের পেঁছন পেঁছন এলাকা থেকে বের হয়ে গেল, সিরাজ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।


সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জন্মদিনের উৎসব বা মৃত্যু চিন্তা

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৬ শে মে, ২০২৫ রাত ১০:১৪



এখনকার দিনে জন্মদিন উৎসব খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। বলতে গেলে একটু সচ্ছল পরিবার হলেই এখন ঘটা করেই জন্মদিন পালন করে। আমার ভাইয়ের ছেলের প্রথম জন্মদিনটা রীতিমতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী অধিকার সংস্কার কমিশন কেন বাতিল করা হচ্ছে না ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে মে, ২০২৫ রাত ১০:১৭


আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইন্টেরিম সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসে। তারা দেশকে আমূলে বদলে দেওয়ার জন্য কতগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে নারী অধিকার সংস্কার কমিশন নিয়ে দেশব্যাপী... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপির অবস্থান পরিবর্তন: মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে নতুন মাত্রা!

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৬ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:০৬


গত দেড় দশকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে বিষয়টি সবচেয়ে লক্ষণীয়, তা হলো মুক্তিযুদ্ধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রশ্নে বিএনপির নিরবতা। এক সময়ের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়েও তারা এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে স্পষ্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

একা আমেরিকা নয়, শেখ হাসিনা বিরোধী সকল পক্ষ ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে তাড়িয়েছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মে, ২০২৫ রাত ১:৩১



সোনাগাজী হাসিনা বিতাড়নের পুরো ক্রেডিট আমিরিকাকে দিচ্ছে। হাসিনা বিরোধী গণরোষের বিষয়টি তাহলে কি? আমেরিকা গণরোষকে কাজে লাগিয়েছে বলে গণরোষের কি কোন মূল্য নাই? কানা দাজ্জালের মত সোনাগাজী একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কি লিখি কবিতা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৭ শে মে, ২০২৫ সকাল ১১:০১


কবিতা কত রঙের পিঠ হয়ে গেছে
ভাবতেই বেদনা আর কবিতা কে
ছুঁইতে চায় না মন-ছুঁইতে চায় না-
শুঁকে যাচ্ছে সমস্ত নদ ভরা কালি;
এক দিকে কবিতা বেওয়ারিশ লাশ
অন্য দিকে ধর্ষণ খুন, আর কত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×