দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন, ১৪ই জুন দুপুর ১২টা বা তার কাছাকাছি। ততদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার দুই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরেও গিয়েছেন। ইমিগ্রেশনে ভিড় তেমনটা ছিল না, ৫ মিনিট অপেক্ষার পরই আমার পালা এলো।
(ভারতের অধিকাংশ মানুষই ধরে নেয় বাংলাদেশের প্রায় সবাই হিন্দি ভাষা বুঝতে পারবেন, ইমিগ্রেশন অফিসার আমার পাসপোর্ট হাতে নিয়ে হিন্দিতেই কথা বলা শুরু করলেন, একটু আধুটু হিন্দি বুঝি বটে কিন্তু বলতে না পারার দরুন আমাকে ইংরেজিতেই উত্তরগুলো দিতে হলো।)
ইমিগ্রেশন অফিসারঃ ভারতে এটাই আপনার প্রথম আসা?
আমিঃ না, এর পূর্বেও ভারতে এসেছিলাম কিন্তু দিল্লিতে এটাই প্রথম।
(এবার অফিসার আমাকে যা জিজ্ঞেস করলেন তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তত ছিলাম না)
ইমিগ্রেশন অফিসার (হেসে হেসে)ঃ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ভারত বা ভারতের মানুষকে দেখতে পারেন না, এটা কেন?
আমিঃ কিছুটা সামলে নিয়ে বললাম (আসলে হেসেই ফেলেছিলাম), আপনি কেন মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে দেখতে পারে না?
ইমিগ্রেশন অফিসারঃ ভারত বিদ্বেষী নিউজগুলো মাঝে মাঝেই আমার নজরে আসে। তাছাড়া, এ ব্যাপারে আপনার কি মতামত।
আমিঃ আসলে পাশাপাশি দুটি দেশ থাকলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও যেমন থাকে তেমনি কিছু কিছু ঝামেলা যে থাকে না তা নয়। এখানে অধিকাংশ মানুষের ব্যাপারটি সঠিক নয়। কিছু কিছু মানুষ হয়ত ভারত বিদ্বেষী তবে তারা নিশ্চয়ই সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়েই ভারতের উপর বেশি অসন্তুষ্ঠ, এক্ষেত্রে তাদের অভিযোগটা ভারত সরকারের নীতির প্রতি, অবশ্যই ভারতের মানুষের প্রতি নয়। এক্ষেত্রে সীমান্তে হত্যা ও তিস্তা চুক্তির মত বিষয়গুলোই মনে হয় বেশি প্রভাব ফেলছে।
ইমিগ্রেশন অফিসারঃ কয়েকদিন পূর্বে মি: মোদীতো বাংলাদেশ ঘুরে এল, বাংলাদেশে তিনি ব্যাপক সমাদর পেয়েছেন।
আমিঃ হেসে হেসে বললাম, আপনিও আসুন একদিন বাংলাদেশে তাহলেই বুঝতে পারবেন আসলে বাংলাদেশের মানুষ কেমন।
ইমিগ্রেশন অফিসারঃ আসলে দিনের অর্ধেক সময় এখানেই বসে থাকতে হয়, বাকী সময় ফ্যামিলি তবে অবশ্যই একদিন যাবো (বলতে বলতে আমাকে পাসপোর্ট ফেরত দিলেন)।
আমিও ধন্যবাদ জানিয়ে ও আবারো বাংলাদেশে আসার দাওয়াত দিয়ে চলে আসলাম।
আমার এই ব্লগটির উদ্দেশ্য ছিল দিল্লি ভ্রমণের কিছু ছবি শেয়ার করা কিন্তু কথপোকথনটি মজার মনে হওয়ায় শেয়ারের লোভ সামলাতে পারলাম না। যাইহোক, নিচে কিছু ছবি শেয়ার করছি (বাই দ্য ওয়ে, ছবি দিলেও আমি ছবির ক্যাপশন দেওয়ার অপশন খুঁজে পাইনি কেউ অনুগ্রহ করে জানালে ভালো হতো।) দিল্লি সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং ইন্ডিয়া গেইট ঈসা খান নিয়াজীর কবর হুমায়ুনের সমাধিসৌধ হুমায়ুনের সমাধিসৌধ অ্যাঙ্গেল থেকে হুমায়ুনের সমাধি তবে মূল কবরটি এর নিচে অবস্থিত লাল কেল্লা
লাল কেল্লার ভেতরের ভবনসমূহ
লাল কেল্লার ভেতর
কুতুব মিনার এটি কুতুব মিনারের ভেতরেই অবস্থিত একটি অসম্পূর্ণ মিনার যার কাজ শেষ করতে পারেননি কনট প্লেস, দিল্লির বিখ্যাত শপিংমল
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১২