শৈশবের সময়পোড়া দুরন্ত বয়সকালীন অনুভূতির অত্যুক্তিটি এখনো কানে বাজে।
: এ্যই, এখানে কি করছ? বিজলীর চমকে চমকানো বিকেল। মাঠে দিগরা দেয়া গাভীর ডাক। বিবি’র তাগদায় লুকিয়ে থাকি দুয়ারের চিপায়। ভোঁ করে কাঁপিয়ে দিয়ে দৌঁড়ে যাই পালাবার পথে। দেখতে দেখতে বছর পেরিয়ে সমর্থ এক পুরুষ হলেও পেনশনের একভাগ আমারই ছিল। অনুজ’রা বলত, আমরা আধেক, তিনি আধেক। এভাবেই আদরে প্রশ্রয়ে বেড়ে উঠি অবশিষ্ট দিনে। দাদা’র আঁকা জাহাজের ছবিটি দেখিয়ে ইচ্ছে করেই বলতাম বিবি, ‘এ ছবিটি কি দাদা এঁকেছেন? চিত্রিত ছবিটির দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে বলতেন -হ্যাঁ।
এমনি এক রাতে হঠাৎ মা জোরে ডেকে ওঠেন: ওয়ালি দেখে যাও তোমার বিবি কি করছেন? দ্রুত খাবার টেবিল ছেড়ে গিয়ে দাঁড়াই উত্তর-দক্ষিণ করা দেহের পাশে। ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছে জীবন-দীপ। চোখের জলে কেঁপে ওঠে কন্ঠ।
দৃষ্টি সাক্ষী হয়ে গেল মৃত্যুর।
কালের আবর্তে হারিয়ে গেলেন - প্রিয় হুরজান বিবি এবং তদ্সংক্রান্ত শৈশবনামা।