ছেলেটি একটু লাজুক প্রকৃতির।
গায়ের রং হালকা শ্যামলা,মাথায় ঘন- কালো চুল।চুলগুলোর মধ্যে কেমন জানি ঢেউ খেলানো ভাব আছে।
ছেলেটার মুখটা গোলগাল,এজন্য তার চেহারায় এখনো একটু বাচ্চা-বাচ্চা ভাব আছে। তবে বেশিরভাগ দিন সে দাড়ি রেখে থাকে,তাই বাচ্চা বাচ্চা ভাবটা ঠিক বোঝা যায় না।
তবে আজ তার মুখে সেই খোঁচা খোঁচা দাড়ি নেই,আজ তার চুলে সেই উশকো-খুশকো ভাবটা নেই, কারণ, আজ একটা বিশেষ দিন।আজ সে সব প্রকাশ করে দেবে...সব। আর প্রতিদিনের মত বিষন্নতা সইতে হবে না,আর প্রতিদিনের মত একই স্বপ্ন বারবার দেখতে হবে না। মাত্র কয়েকটা মিনিট, তারপর সব বদলে যাবে...সব।
মেয়েটা কলেজের বেঞ্চে বসে তার এক বান্ধবীর সাথে কথা বলছে।আজ মেয়েটা আকাশী রংয়ের একটা জামা পড়েছে,যেটা তার সোনালি গায়ের রং এর সাথে খুব সুন্দরভাবে মানিয়ে গেছে।মেয়েটা প্রায় সবসময় চুল বেঁধে রাখে,কিন্তু আজ কেন জানি তার চুল বাঁধা না... তার বাদামি চুলগুলো গলার পাশ দিয়ে সামনের দিকে ছড়ানো।
মেয়েটা সবসময় চোখে কাজল দেয়।চোখের চারিদিকে হালকা কাজল দিয়ে চোখে টানা-টানা একটা ভাব আনতে চায়।টানা টানা ভাবটা ওভাবে আসে না,কিন্তু দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
ছেলেটা মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেল।মেয়েটা ছেলেটাকে দেখে হেসে বলল,
-- "কি খবর? কেমন আছ?"
ছেলেটি প্রশ্নের জবাব দিল না,কেমন জানি ইতস্তত করতে লাগল।
-"কি ব্যাপার কিছু বলবে?"
-"হ্যাঁ মানে... আমি...আমি অনেকদিন থেকে বলতে চাচ্ছিলাম...তোমাকে...আমি...."
-- "আমাকে...তুমি ...?"
ছেলেটা তার মনের সমস্ত শক্তি দিয়ে কথাটি বলতে চাচ্ছে,কিন্তু পারছে না।ভেতর থেকে কে যেন বাধা দিতে লাগলো।আর বরাবরের মত এবারও,ভালবাসা পাওয়ার আশা ব্যার্থতার আশঙ্কা'র কাছে হেরে গেল।
--"আচ্ছা থাক,পরে বলব।"
মেয়েটা হেসে বলল,"আচ্ছা"
ছেলেটা বাসায় ফিরে আসল।
শার্টের ভেতরের পকেট থেকে গোলাপ ফুলটা হাতে নিল।
তারপর একে একে পাপড়িগুলো ছিড়ে ময়লার ঝুড়িটায় ফেলে দিল।
ঝুড়িতে থাকা অজস্র শুকনো পাপড়ির মধ্যে .... সদ্য ছেড়া পাপড়িগুলো পড়ে থাকলো।
হয়তো এভাবেই আরও শতশত পাপড়ি ঝুড়িতে পড়ে থাকবে ....
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪