ধরুণ, আপনি ঘরকুনো স্বভাবের লোক। কিন্তু ক্লাসের সবচেয়ে চঞ্চল সুন্দরী মেয়েটাকে আপনার ভাল লাগে। কিন্তু লজ্জার কারণে তাকে কিছু বলতে পারেন নি। আর সেই সুযোগে ক্লাসের প্লেবয় টাইপের ছেলেটা আপনার ভালবাসার মানুষটির সাথে চুটিয়ে প্রেম করছে। ফলাফল নিরব ছ্যাঁকা।
লজ্জা, নারীর ভোষণ। লোকে বলে। তবে আমি বলি এটি একটি সামাজিক ব্যাধি।যে ব্যাধির কারণে আজ সমাজের ক্ষতি হচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু যারা এই ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে পেরেছে তারা চলে যাচ্ছে শিখরে।
কী, বিশ্বাস হচ্ছে না?উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে? তাহলে দুটি বাচ্চার কথা খেয়াল করুন।স্কুলে অনুষ্ঠান হচ্ছে, সেখানে তাদেরকে বলা হল গান/নাচ করতে।একজন কোন চিন্তা না করেই গাইল আর নাচল। আর অন্যজন শরীর মোচড় দিয়ে বলল-“হুমম, আমি পারব না। এএএ আমার লজ্জা লাগে”। ফলে কি হল, যে গাইল তাকে আমরা সবাই চিনি আর যে গাইল না তাকে আমরা চিনি না। এরূপ শত শত ঘটনা আমাদের সাথেও ঘটেছে।যার উদাহরণ অসীম।
আমাদের সমাজে সবচেয়ে বেশি লজ্জা চর্চা করে মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। তাই তারা আজীবন অপরিবর্তিত থেকে যায়। অন্য দিকে যে একটু লজ্জাহীন হয়েছে তার জীবনে উন্নয়নের দ্বার খুলে গেছে। একজন ফিল্ম স্টার যদি নির্লজ্জ না হত তবে সে সকলের সামনে খোলামেলা অভিনয় করতে পারত না। খেয়াল করলেই দেখবেন, যে নায়ক/নায়িকা যত বেশি নির্লজ্জ সে তত বেশি জনপ্রিয়। আবার ধরুন একজন রাজনীতিবিদ।তার যদি লজ্জা থাকত তবে সে কথা দিয়ে কথা রাখত। আর লজ্জাহীনতা তাকে সাহস দিয়েছে জনগণের টাকা নিজের করে নেওয়ার।ফলে সে হয়েছে হাজার কোটি টাকার মালিক।
আপনি চাকুরী করেন। আপনার লজ্জাবোধ আছে।তাই সংসারে অন্নের অভাব। অথচ আপনার কলিক আজ গাড়ি-বাড়ির মালিক।কারণ, তার লজ্জাবোধ নাই। সে মানুষের থেকে টাকা(ঘুষ) চেয়ে নিতে পারে। আপনি পারেন না। এটাই তফাৎ।
ব্যাধি সবার থাকে না। কয়েকজনের থাকে।তবে মাঝে মাঝে এটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজে লজ্জাবোধ একটি ব্যাধি। তাই তার উন্নতি করতে পারে না। সুতরাং সবারই উচিত লজ্জাহীন হয়ে হীনবস্ত্রে আর্কিমিডিসের মত রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো।
(বিঃদ্রঃ আল্লাহ্ সবাইকে বিবেক ও বুদ্ধি দিয়েছে ভাল-খারাপের পার্থক্য বুঝার জন্যে। তাই আমার মত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কারো কথায় বা স্ট্যাটাসে প্রলুব্ধ হবেন না। মনে রাখবেন, লজ্জাহীন মানুষ পশুর সমান।)