রুমে এসে এক ফ্রেন্ড বলল, দোস্ত তোর তো নেট আছে, একটু ল্যাপটপটা দেয়না, ইন্টারনেট চালাই।বললাম হ্যাঁ চালা,তবে কেন?কি করবি?আরে কিছু করবনা,সর আমি ল্যাপটপে বসি। আচ্ছা ঠিক আছে।
ওকে ল্যাপটপ দিয়ে আমি বিছানায় শুয়ে রইলাম।পরে দেখি সে একটা খাতা নিয়ে লেখা শুরু করছে।কৌতুহলের সাথে জিজ্ঞেস করলাম, দোস্ত কি লিখিস? Assignment লিখিস নাকি?
-আরে না? কাজ করছি।
সন্দেহ আরো বেড়ে গেল, তাই নিজেই কষ্ট করে দেখতে গেলাম।দেখেতো আমি অবাক। বন্ধু আমার লিখছে- সিজার,অস্কার,নেইমার,আলভেজ... ... ...
বুঝতে বাকী নেই কী ঘটছে।তাই বললাম-
-কি মামা? এ গুলো কি?
-আরে তুই বুঝবি না।
-বুঝতে তো পারি। তা ব্রাজিলের প্লেয়ারের নাম লিখিস কেন?
-আরে না, এমনি।
-ও বিশ্বকাপের সময় কেউ জিগাইলে যাতে বলতে পারিস, তাই না?
-ধুর কি যে বলস না!
-হ, লেখ লেখ, এক মাস ধরে মুখস্ত কর কাজে দিবে। খিক্ খিক্...
এই হল মানুষের অবস্থা। গত চার বছর ধরে কোন খবর নাই, এখন আসছে প্লেয়ারের নাম শিখতে।বিশ্বকাপ বলে কথা। এরা না কি সাপোর্টার? নিজের দলকে জান দিয়ে সাপোর্ট করতে হবে।জান গেলে জান যাবে তবু মান দিতে পারব না।
এটা আর্জেন্টাইন সাপোর্টারের ক্ষেত্রেও ঘটে। সমান তালে। আসলে মূল কথা হচ্ছে, বাঙ্গালীদের হুজুগেপনা নিয়ে।বিশ্বকাপ হবে সাত সমুদ্র তের নদী বা তারও বেশির উপারে ব্রাজিলে। সেখানে বাংলাদেশ তো খেলবেই না বরং এদেশের কোন সাংবাদিক সেখানে যাবে কিনা সন্দেহ। কিন্তু আমরা খেলা দেখব। দেখার সময় আমার কয়েক বছরের প্রাণের বন্ধুটি হবে আমার বিপক্ষ দলের সাপোর্টার। ফলে কি হবে? বন্ধুটির সাপোর্ট করা টিম হারলে আমি তাকে খোঁচা দিব। পরদিন আমার সাপোর্ট করা টিম হারলে সে আমাকে খোঁচা দিবে। কথা কাটাকাটি হবে,রাগারাগী হবে, মারামারি হবে। কয়েক মাস কথা বন্ধ থাকবে। হয়তো একে অপরের মুখ দেখা বন্ধ করে দিবে। তবুও মান দিবে না।এটা কিছু হইল? আরে ভাই যে দেশের কারণে আমরা বা আপনারা একে অপরের সাথে মনোমালিন্য করছি তারা কি জানে? এই কারণে কি আমাদের কোন লাভ হবে? না কোন লাভ হবে না। বরং অনেক দিনের বন্ধুত্বটা নষ্ট হবে।আরে চ্যাম্পিয়ানতো হবে একটা টিম।সুতরাং আমার সাপোর্ট করা টিম হলে আপনারটা হারবে, আর আপনারটা জিতলে আমারটা হারবে। তাই খেলার কারণে কখনো আপনার প্রিয় বন্ধুটার/মানুষটার/প্রতিবেশীটার সাথে মনোমালিন্য করবেন না। একটা অনুরোধ, প্লিজ।