মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। এই হাসি এই কান্না। যেমন, গতকালের নিবেদন আজ ঝরে পড়েছে অশ্রু হয়ে। বাস্তবতার নিরিখেই ছিল সব।
>কিরে যাবে,না।ক্যান্টিনে বসে আছ কেন?
>না, মানে কই যাব?
>আমি, কিভাবে বলব কথা গুলো? এত মানুষের সামনে।
>ও হ্যাঁ, আসছি।
মোবাইলে হচ্ছিল কথা গুলো। এরপর দুজনে গেলাম পাহাড় ঘেরা রাস্তার ধারে।পাশাপাশি বসে আছি। আমি জানি সে আমায় অনেক ভালবাসে। অনেক পছন্দ করে। চায়, হয়তোবা মন থেকে। কিন্তু বাস্তবতার কাছে সে বারবার হার মেনে যায়। একটু রিস্ক সে নিতে পারে না। ভয় পায়।
>তোমাকে আমি আসলে কিভাবে কথা গুলো বলব বুঝছি না। আসলে, আসলে এটা হয় না।... ...
(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে সে বলে যাচ্ছে কথা গুলো। আমি নিশ্চুপ শ্রোতা। আমি বুঝতে পেরেছি সে কি বলছে। হ্যাঁ সে বলেছে, বলছে, বলবে, কিন্তু এটা তার মনের কথা না। মনকে সে অনেক প্রশ্ন করেছে। কিন্তু মন তাকে যে উত্তর দিয়েছে তা সে নেয় নি। নিয়েছে বিবেকের উত্তর। মন আর বিবেকের মাঝে যে একটা ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক আছে তা সে বুঝতে পারেনি।)
-আসলে দেখ, আমার ফ্যামিলি। আমি আমার ফ্যামিলিকে কষ্ট দিতে পারব না।আমি আসলে কথা গুলো গুছিয়ে বলতে পারছি না।
(এরপর কোন কথা আমার কানে প্রবেশ করে নি।হয়তো শ্রবণ ইন্দ্রেয় নিজেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।ক্ষণিকের জন্যে সে তার কাজের কথা ভুলে গিয়েছিল। হয়তো সেও বলতে চেয়েছ, “তুই যে কথা গুলো বলছিস তা একবার আয়নার সামনে গিয়ে বল। সব কথা বিপরীত হয়ে তোর চোখে ভেসে উঠবে”।
হ্যাঁ সেটাই ছিল। কথা গুলো সে মন থেকে বলেনি। সামান্য অভিনয় করেছে। আর আমি অপরিপক্ষ একজন। জীবনের বিশেষ মুহুর্তে এসে সব বুঝেও কিছু বলতে পারি নি।চোখের কোণায় জমা হওয়া জল, সে না বুঝে মত মুছে নিয়েছি।
আমি খুব অল্প সময়ই আহত হই। বিশেষ ভাবে বলতে গেলে, আহত হবার মত তেমন কোন উপলক্ষ আমি আজো তৈরি করতে পারিনি।তাই আজও আহত হতে পারিনি।হয়তোবা হয়েছি।হয়তোবা ব্যাথাটা হাঁড়ে লেগেছে।তাই বাহির থেকে দেখা যাচ্ছে না।)
মুখে মৃদু কৃত্রিম হাসি এসেছে আমার।
>হ্যাঁ, আসলে তুমি ঠিক বলেছ। আমার ভুল হয়েছে।আসলে অনেক চেষ্টা করেছি না বলার।কিন্তু আপেক্ষিক গতিতেও সব যেন দ্রুত হয়ে গেল। আসলেই লক্ষহীন জীবনে পরিনামহীন ভালবাসা মানায় না। তাই এর আগাছা জন্মানোর আগে ধ্বংস করা উচিত।
এরপর কিছুক্ষণ নীরবতা গ্রাস করেছিল।তারপর আবারও লক্ষহীন পথে হেঁটে চলা। কিছুটা ধীরে, কিছুটা দ্রুত।