; ঢাকার মানুষের সব থেকে বিনোদনের জায়গা কোনটা?
খাওয়ার দোকান? উহু।
এমিউজমেন্ট পার্ক? উহু।
সঠিক উত্তর, লোকাল বাস।
আপনাকে নিজে থেকে কিছু করতে হবে না, খালি লোকাল বাসে উঠে, যে কোন একজনের দিকে মনোযোগ দিয়া তার কাজ কর্ম দেখতে থাকবেন। ব্যাস!
ক্রিকেট খেলা নিয়ে আমরা যত না জিরো টলারেন্স তার চেয়েও কোটিগুনে জিরো টলারেন্স লোকাল বাসে। এদের মাঝে আবার দুই গ্রুপ,
একদলের নাম, ওই চিনছ?
আরেকদলের নাম, সবজান্তা শমসের।
দুই দলেরই জিরো টলারেন্স। একজনের পেশি শক্তি, আরেকজনের জ্ঞানের শক্তি!
পেশি শক্তি নিয়া কিছু বলার নাই কারন মাইরের উপর ওষুধ নাই ।
তবে যাদের জ্ঞানের শক্তি বেশি, তারা দুনিয়ার তামাম ব্যাপার নিয়া ছুরি, কাঁচি, দা দিয়ে বাসের ভিতরেই ঘটনার পোস্টমরটেম করা পূর্বক 'আখেরি কমেন্ট' করে থাকেন। তাতে সেটা তিনি জানেন অথবা না জানেন!
সেদিন বাসে আসছিলাম। আমার পিছনে অনেক বয়সী এক আঙ্কেল বসা ছিলেন।
একটু পরে দেখি তিনি হটাত ফোনে চেচিয়ে ওঠেন,
-কি?
-রাতে বাস?
-চিটাগাং যাচ্ছ?
-ভাল, ভাল।
-রাতের জার্নি খুব সুন্দর।
-আবহাওয়া খুব ভাল।
-জানালা হাল্কা খুলে দিয়ে, বাতাস খাইতে খাইতে যাবা।
- শুন, বেশি খুলে দিও না কিন্তু! তাইলে আবার ঠান্ডা লাগবে।
-পূর্ণিমার রাতে, চাদের আলোতে সিন সিনারি দেখতে দেখতে যাবা। খুবই সুন্দর।
-চিটাগং এর রাস্তা খুব সুন্দর। অনেক সিন সিনারি আছে।
-মাঝে মাঝে হাইওয়ের বাসে আবার রুমান্টিক গান ছাড়ে বুঝলা?
-মান্না দে'র গান আছে না? ওইগুলা ছাড়ে।
এরপরে তিনি গান ধরেন,
-'আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙ্গে যায়, মনে পড়ে মোরে প্রিয় ও, চাঁদ হয়ে রব আকাশেরও গায়ে, বাতায়ন খুলে দিও'
-সুন্দর গান।
-যাও, যাও। ভাল লাগবে।
ওনার উপদেশ দেয়ার স্টাইল দেখে আমি শকড, আঙ্কেল রকড!
উপসংহারঃ
আমরা জিরো টলারেন্স হইতে পারি কিন্তু আমাদের মত এত্ত কিউট আর আবেগি জাতি আর কেউ নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১