; একদিন সময় করে এসো।
চারিদিক পাল্টে গেলেও, তোমার ঘরটা এখনও আগের মতই আছে। ক্যাসেট প্লেয়ারের যুগ কবে ফুরিয়ে গেলেও ক্যাসেটগুলো ঝকঝকে করে রেখেছি। আছে প্লেয়ারটাও। ফুলতোলা এক কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছি। আশেপাশের মানুষগুলোকে চিনতে না পারলেও ঘরটাকে তুমি ঠিকই চিনতে পারবে।
আচ্ছা জানও, সেই মানুষটি কিন্তু তোমার আজও খোঁজ নেয়নি। মনে আছে? তোমাকে জড়িয়ে সেদিন কি কান্না? তুমি ও আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলে? ভেবেছিলে তোমাকে এমন ভালবাসতে বুঝি আর কেউ পারে না? নিজের সব কিছু উজার করে দিয়েছিলে? তুমি বোধহয় জানতে না, আবেগ বাতাসে বাড়ে। তোমার ভাল দিনে সেই বাতাস হয়ত তার গায়ে লেগেছিল। কি অদ্ভুত না! এখন আর কোন বাতাস হয়ত তার গায়ে লাগে না।
নিচের বিড়ালটার কথা মনে আছে? হুম, কালো বিড়াল টা। আল্লাহ! কত ভয়ই না আমি পেতাম ওটা দেখে! কিন্তু তোমার কি একটুও ভয় লাগত না? তাড়াতে তো না কখনওই বরং পারলে ডেকে আদর করতে! ইশ! কালো বিড়াল ও বুঝি মানুষের পচ্ছন্দ? আমার কিন্তু এখনও পচ্ছন্দ না। হ্যাঁ, তবে এটা ঠিক যে এখন আর ভয় পাই না। কত কঠিন কঠিন ভয়ের সময় পার করেছি! বুঝেছি যে মানুষ যতটা ভয়ের
, একটা বিড়াল তার কাছে কিছুই না!
সেই চায়ের দোকানটার কথা মনে আছে? বাজারের পাশে? তুমি আমি কত্ত গিয়েছি। আসলে সত্যি বলতে কি বাজারের দিকটাতে যাওয়ার একমাত্র কারন ছিল সে চায়ের দোকানটা। তোমার সিগারেট আর চা সাথে আমার পরোটা, মিস্টি। উফফ! অদ্ভুত! এখন আর যাওয়া হয় না। কে জানে! এখন হয়ত আমার নিজেরই পচ্ছন্দ বদলেছে।
ফোনে ধরে সেই সালাম দেয়ার কথা মনে আছে? আমার কিন্তু এখনও সেই অভ্যাস। সবাই যেখানে ফোন ধরে 'হ্যালো' বলে আমি সেখানে এখনও ফোন ধরে গম্ভির গলায় 'আসসালামু আলাইকুম' বলি। তোমার স্বভাবগুলো চলে আসছে দিন দিন আমার মাঝে। আসলে আমি চাই মানুষ এখনও আমাকে বলুক অমুকের ছেলে। তোমার নামেই আমাকে চিনুক।
এসো একদিন, এসে দেখে যেও। এইতো সেদিনও তোমার সব জামা কাপড় ধুয়ে লণ্ড্রী থেকে আয়রন করে নিয়ে এসেছি। আলমারিতে রেখে দিয়েছি সব যত্ন করে।
জানিনা তুমি জান কি না! তোমার ওখান থেকে ছুটি নিয়ে বেড়াতে বের হওয়া যায় কি না। যদি পার, তবে এসো একদিন বাবা। সব কিছু প্রায় আগের মতই আছে। তুমি বলতে না যে আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না? হচ্ছে না তো! কথাটা খুব মিস করি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৪:৩৪