; আম্মার কথায় টের পেলাম ভূমিকম্প হচ্ছে। মুহূর্তে আম্মার হাত ধরে টানতে টানতে ৬ তলার সিঁড়ি বেয়ে নেমে রাস্তায় চলে গেলাম। আম্মার হাত পা তখনও কাপছে আর আমার ধরেছে পানির পিপাসা। ভয় তো ছাড়েই নি বরং আপুদের কি অবস্থা তা জানতে ফোন নিয়ে বেগতিক ব্যস্ত। ঠিক এমন মুহূর্তে এক ভদ্রলোক আমাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। আম্মাকে সালাম দিয়ে বলতে লাগলেন,
-বুঝলেন ভাবি, হায়াত মউত তো আল্লাহ'র হাতে।
হুম, সেটাই।
-যাইতে তো হবেই। তবু আমরা ভয় পাই। কেউ যাইতে রাজি না!
হুম।
-আমাদের বিল্ডিং কিন্তু অনেক মজবুত। আমরা ভূমিকম্প প্রতিরোধে অনেক কাজ করেছি!
আচ্ছা।
-বিল্ডিং ভূমিকম্পে দেবে যাইতে পারে!! তবে ভেঙ্গে যাবে না!!!
আম্মা বোকা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকান। আমি কিছু বলার আগেই লোকটা আবার বলা শুরু করলেন,
-ভাবি তা এবার ভোটটা কাকে দেবেন? আমার বন্ধুকে দিয়েন। পাশের বাসার মানুষ। বিপদে আপদে পাশে পাব। রাস্তা ঘাট উন্নয়নে কাজে লাগবে। রেডিও মার্কা। মনে থাকবে তো, ভাবি?
এই কথা শুনে আমি ভ্রু কুঁচকে আম্মার হাত ধরে আরেক জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসলাম। মনে মনে বললাম, মমিনরে দিন দিন কমন সেন্স এইভাবে জাতি থেকে হাওয়া হইতেছে ক্যামনে। পালস বোঝে না? ভূমিকম্পের সময়ও ভোট চাওয়া লাগে?
এইটা ছাড়াও আমার দরজার সামনে লেখা আছে এখানে স্টিকার বা পোস্টার লাগাবেন না। তবুও নিয়ম করে দুই বেলা সেখানে প্রার্থীগন পোস্টার লাগিয়েছেন, স্টিকার সেঁটেছেন!! তাদের কাউকে কি আমি ভোট দিব?
কালকে একজন এসে বললেন বাবা, প্রমিস কর আমাকেই ভোট দিবা। আমি বললাম, আপনার ইশতেহার কই? দিয়ে যান। পড়ে বিবেচনা করব। বেটায় অদ্ভুত হাসি দিয়ে বলল, ইশতেহার কি কেউ সাথে নিয়ে ঘোরে! তবে আমি সিলেক্টেড হইলে রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করব। আমার বাসার সামনে রোড খুবই খারাপ। ভাড়াটিয়া থাকে না!
কি অদ্ভুত? তোমার বাসায় ভাড়াটিয়া থাকে না এই কারনে তুমি কাউন্সিলর ইলেক্টেড হয়ে রাস্তা ঠিক করবা?? আবার এই কারনে আমি তোমাকে ভোটও দিব? কমন সেন্স কই তোমার।
এবার কারও মার্কা কমন সেন্স হইলে ভাল হইত। কত মার্কাই তো দিছে!