শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পালিত হচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ৫২'র ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত জাতি। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি- এই মমত্ববোধ আর ভাই হারোনোর শোকগাঁথা নিয়ে ভাষা শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে দেশবাসীর পাশা পাশি সদূর ডেনমার্কে বসবাসরত বাংলাদেশীদের স্ত্রীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন লেডিস ক্লাব ও বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিয্য ও সাংস্কৃতিকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অঙ্গীকার নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন শিকড় এর উদ্যোগে পালিত হল মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
সকাল ১০টায় কোপেনহেগেন সিটি সেন্টারের সামনে প্রতিকী শহীদ মিনার স্থাপন করে দিবসটি পালন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে ডেনমার্কে বসবাসকৃত বাঙ্গালী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ এবং ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা উপস্থিত হয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাই সমবেত ভাবে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি” এই গানটি গেয়ে উঠেন। এরপর একে একে শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া স্থানীয় ডেনিশ নাগরিকবৃন্দও পুস্পমাল্য অর্পন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পুস্পমাল্য অর্পন শেষে অনুষ্ঠান মালার অংশ হিসাবে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় লেডিস ক্লাবের পক্ষে থেকে আজমেরি তুল আমেনা ও উম্মে হানী এবং শিকড় এর পক্ষ থেকে আনোয়ার উদ্দিন লেনিন, এস. আই. টিপু, আমিনুল ইসলাম, জিয়াউল হক এবং ডেনমার্কে বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোঃ সেলিম ও শহীদ আলতাফ মাহমুদ পরিবারের সদস্য জনাব সাঈদ উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন ১৯৫২ সালে এই দিনেই ঢাকার রাজপথে রচিত হয়েছিল বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিলেন বীর তরুণরা। বায়ান্নর আন্দোলন প্রকৃতপক্ষে ভাষার প্রশ্নে একুশের আন্দোলন হলেও তা ছিল শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ। সেদিন আত্ম-অধিকার, সমতাভিত্তিক সমাজ আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রবিনির্মাণের স্বপ্নে জেগে উঠেছিল পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। একুশের আন্দোলনেই ঘটে বাঙালির আত্মবিকাশ, যার ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে এসেছে স্বাধীনতা।
আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন জনাব সাঈদ উদ্দিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:২৪