(পর্ব-২)
রাত গভীর হলে যখন চোখের পাতা ভিজে ওঠে তখন বিস্তৃত খোলা সবুজ মাঠের ঘাসের বুকে চিৎ হয়ে শুয়ে মদ খেতে খেতে যে সাবালক আকাশের তারা দেখে, তারার সাথে কথা বলে ! হে আকাশ, হে আকাশ ভরা তারা, হে রাতের আঁধার - সেই সাবালকই ভালবাসতে জানে, শুধু তোমাকেই ভালবাসে । বুকের বামপাশটায় লুকিয়ে রাখা প্রেমিকার মত । পরম আদরে তোমাতে মিশে যেতে চায় । লুকাতে চায় তোমাতে । তোমাতেই ডুবতে চায় ।
পূর্ণ কোজাগরী প্রেয়সি তুমি ! আমি তোমাকে ভীষন ভালবাসি । আরও বেশী ভালবাসতে চাই । তোমাকে শেষ বিকেলের আকাশে জাগতে দেখি, ডুবতে দেখি সদ্য ভোরে । মাঝখানে রূপালি স্নিগ্ধ আলোর মিলনমেলায়, মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলায় ক্ষনে ক্ষনে দেখি তোমার রূপের বদল । বুকের মধ্যে যেন কেমন করে । চিৎকার করে বলতে মন চায়, আমি তোমাকে বহুত ভালবাসি প্রিয়ে । ভীষন ভালবাসি । আমার দৃষ্টির সীমানায় পরিপূর্ণ প্রেয়সী তুমি - বদলে যাও, ক্ষনে ক্ষনে বদলাও নিজেকে, তবুও ভালবাসি তোমায় । সাবালক যখন তার গ্রাম্য জগৎ ছেড়ে ইট, কাঠ, পাথরের ধূলি ভরা এই শহরে উচ্চশিক্ষার নেশায় প্রথম পদার্পন করে, তখন থেকে ভালবাসি ।
সহজ সরল জীবনের মায়ায় চোখ ফেটে কান্না আসতে চায়। মান- মর্যাদার সুনিপুন খেলায় বহু কষ্টে কান্না লুকাতে লুকাতে ঢলঢলে চোখের মাঝে তখন শুধুই মায়া। মায়াভরা এই চোখের মায়ায় তখন হঠাৎ ললনার আবির্ভাব। ললনা সভ্য, শান্ত, মোটামুটি দোহারা চেহারা এবং ভারী ব্যাক্তিত্ত সম্পন্ন । চোখে কাজল পড়ে , দীঘল চুল, চশমার আড়ালে কাজলে ঢাকা তার চোরা চোখের দৃষ্টি । সাবালক কুপোকাত হওয়ার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট ।
সাবালক তার স্থান, বাল্য বন্ধু-বান্ধব, মাতা-পিতা-ভাই-বোন, চিরপরিচিত পৃথিবী ছেড়ে আসার বেদনাময় জীবনের কাব্য পাঠ্য বই খাতায় লিপিবদ্ধ করত। ললনা তার ক্লাস বন্ধু । প্রথম প্রথম সামান্য কথা, মাঝে মধ্যে ক্লাসের সকল ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে এই শহরের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানো । ধীরে ধীরে বন্ধুত্বের খাতিরে ফোন নম্বর আদান-প্রদান হতে থাকল। কখনও কখনও বিকেলে চায়ের নিমন্ত্রন, দুজনাতে একটু ঘোরাঘুরি । সাবালকের নিষ্ঠুর একাকীত্বের এই শহরে ললনা একটু একটু করে তার পৃথিবীটা দখল করে নিয়েছিল । সেখানে সংগোপন ছিল, মেয়েলীপনার লুকোচুরি ছিল। চুপিসারের অতিশায্যে সাবালক জানতেও পারল না যে তার পৃথিবী আর তার দখলে নাই। সেটা কোন এক ললনা কখন, কিভাবে যেন দখল করে নিয়েছে ।
পর্ব-১ঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৯