(পর্ব-১)
বিলিভ মি ! কিংবা বিশ্বাস করো এমন কথা কথায় কথায় বলে না সাবালক । কখনোই না । মাঝে মাঝে ভুল করেও না । কারন বিশ্বাস যার যার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার । বিশ্বাস তো আর বলে কয়ে করানো যায় না , উচিত ও না । সবার চিন্তা শক্তি আছে । শুধু কেউ কেউ কম চিন্তা করে আর কেউ কেউ বেশী । স্বপ্ন সবাই দেখাতে পারে । কেউ কি কখন ও সাহায্য করে , পথ দেখায় সেই স্বপ্ন পূরণ করতে ?
উত্তর হল - না । আপনার পকেটে টাকা না থাকলে , একবেলা তার ঘরে ডেকে কেউ খেতে বলে ??? উত্তর হল - না । সবাই শুধু আশা ভরসাই দেয় আর কিছুই না । ম্যানহোলে মানুষ পরে গেলে , দাঁড়িয়ে থেকে সবাই আয়-হায় রব তুলতে পারে কিন্তু রশি ফেলে তুলতে চেষ্টা করার কথা খুব কম লোকই ভাবতে পারে ।
হতাশা , ব্যর্থতা পূর্ণ ইট-পাথরের এই নিষ্ঠুর শহরে সবাই , সবকিছু নিষ্ঠুর । এখানে আবেগ , ভালবাসা , মায়া - মমতা কিছুই নেই । কোন সৌন্দর্য্য নেই, স্বপ্ন নেই, অহংকার নেই, আশা নেই শুধু বেদনা আছে, হাহাকার আছে, দুঃস্বপ্ন আছে আর আগুনে পোড়া ক্ষতের মত এক আকাশ ভরা জ্বলজ্বলে তারা আছে ।
আকাশের সবথেকে জ্বলজ্বলে তারাটা দেখতে দেখতে যে সাবালক নীড়ে ফিরে তার কথা কেউ ভাবে না । সারাদিন এখানে সেখানে আড্ডা মেরে বন্ধু- পরিচিত জনদের হাসিয়ে বাসায় ফেরা ! আশেপাশের সবার হাসিমুখ দেখতে সে খুবই পছন্দ করে । ফাঁকা পকেটে সে ও মনে মনে রাস্তায় বসা বৃদ্ধ ভিক্ষুককে একদিন গুলশান বনানীর কোন দামী রেস্তোরায় খাওয়ানোর স্বপ্ন দেখে । অথচ আজ রাত তার ভাতের অভাবে পানি খেয়ে থাকতে হবে।
সে সারাটাদিন নিজে হাসে অন্যকে হাসায় । তার সঙ্গ সবাই পছন্দ করে, সবাইকে খুশী করে । কিন্তু গভীর রাতে তার নিঃশ্বাসেই ঘরের বাতাস ভারী হয় । সুনসান রাতের নিরবতায় ভেজা বালিশটা আরও ভিজে যায় ।
এতবড় পৃথিবীতে এত মানুষের ভীড়ে তার জন্য কেউ কোথাও অপেক্ষা করে নেই । দিনের আলোতে সবাইকে হাসিমুখ দেখিয়ে রাতের আঁধারে সেও মুখ লুকায় । মনে মনে ভাবে চব্বিশ ঘন্টার এই রাত দিনের খেলাটার একুশ ঘন্টাই রাত হলে ভাল হত ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৩৪