কাছের মানুষের দুঃখবোধ দেখে চুপ করে থাকার মধ্যে বিশ্লেষন খোজা অযৌক্তিক একটা ব্যাপার । চলে গেলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়? হয় না । আবার থেকে গেলেও কিন্তু সমস্যা রয়ে যায় । রাতগুলো ক্রমশ ভারী হতে থাকে । মনে হয়, এইতো, হয়তো ভোর হবে এক্ষুনি ।
কিছু মানুষ নিজের অনুভুতির কথা মানুষকে বোঝাতে লজ্জ্বা পায় । অনেক সেক্রিফাইস করেও যখন কাছের মানুষদের কাছে নিজের গুরুত্ব বোঝানো যায় না, তখন চুপ করে থাকাই শ্রেয় । কারন, গুরুত্ব বোঝানোর জন্য কারো পাশে থাকা উচিত না । পাশে থাকতে হয় সব স্বার্থ ত্যাগ করে । পাশে থাকার পেছনে উদ্দেশ্য থাকলে চলে না ।
আড়ালে থেকে তাদের ক্রমশ দেখতে থাকার মধ্যে একটা বিষানুভূতি কাজ করে । "আহা, এভাবে যদি ঘটতো ব্যাপারটা!"... "অতীতে গিয়ে কিছু জিনিস যদি একটু বদলানো যেতো... বেশী না, অল্প একটু" ।
সৃষ্টিকর্তা মানুষকে অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করার ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, যতদুর জানি আর কোনো প্রানী রাস্তা দিয়ে হাটার সময় মনে যন্ত্রনা নিয়ে হাটে না । যন্ত্রনা যতক্ষন আপনার মধ্যে থাকবে, ততক্ষন আপনি জীবিত ।
দুঃখবোধ থাকা ভালো, মাঝে মাঝে দুঃখবোধ মানুষকে বাধ্য হতে শেখায় । আমাদের মধ্যে যদি কোনো দুঃখবোধ না থাকে, হাহাকার না থাকে, তাহলে দিনদিন আমরা বেপরোয়া হয়ে যাবো । দুঃখবোধ আমাদের সে লাগামটা টেনে ধরতে সাহায্য করে ।
সে হিসেবে বলতে পারি, দুঃখবোধ-যন্ত্রনা যত বেশী থাকা যায়, তত ভালো, অন্তত সমাজের জন্য, বিনয়ী মানুষদের সংখ্যা বাড়ে এতে ।
পৃথিবীতে কোনো মানুষকেই আমরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গুরুত্ব দেই না । গুরুত্ব জিনিস টা খুব খারাপ । এটা একটা মানুষের মধ্যে উপযোগীতা সৃষ্টি করে । এবং, ওই উপযোগীতাই একটা সময় সে মানুষটাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে ধ্বংস করে ।
দিগন্ত বিস্তৃত জঞ্জালপূর্ন জীবনে, চায়ের কাপে ধোঁয়া ওঠা আড্ডার মানুষগুলোকে নিয়ে আমরা সেভাবে ভাবি না । চাইলেও পারি না । তাদের শুধুমাত্র আড্ডার টেবিলেই রেখে দেই ।
মনে রাখা উচিত, ভোরবেলার কুয়াশাতে আগমন ঘটা মানুষদের ভুলে যাওয়া সহজ এটা ঠিক, কিন্তু দুপুর রোদে ক্রমশ মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকা মানুষগুলোর অবদান কিভাবে অস্বীকার করি আমরা, হুম?
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫১