কিডনীষ্টোন........
কিডনীষ্টোন হলো এমন একটি শক্ত খনিজ পদার্থ যা কিডনীর ভেতর বা ইউরিনারী এরিয়ায় তৈরী হয়। এটি সাধারনত শরীরের ভেতর বিভিন্ন মিশ্রনের সম্নয়ে গঠিত হয়। যেমন... ক্যালসিয়াম কিডনীষ্টোন, ইউরিক এসিড ষ্টোন, সিস্টিক ষ্টোন । ইউরিক এসিড কে পাতলা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান পানি শরীরে না থাকলে কিডনীর ভেতর থাকা পি,এইচ লেভেল পড়ে যায় এবং এসিডিটি বেড়ে যায়। মাত্রারিক্ত এসিড একসময় পাথরে পরিনত হয়। ক্যালসিয়ামষ্টোন ঠিক একি রকম ভাবে গঠিত হয়।
কিডনীষ্টোনের কারন:-
কিডনীষ্টোনের কারন এখন পর্যন্ত সঠিক ভাবে নির্নয় করা যায়নি। এ নিয়ে বিস্তর গবেষনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত যে সকল কারন অনুমান করা হয়েছে তার মধ্যে শরীরের পানির অভাব অন্যতম। আরো কিছু কমন কারন আছে । যেমন....
---- যদি পরিবারের অন্য কারো কিডনীতে পাথর থেকে থাকে।
---- যদি পর্যাপ্ত তরল পানীয় পান না করা হয়।
---- যদি হঠাৎ করে কোন হাই পাওয়ার ওৌষুধ সেবন করা হয়।
---- যদি কিডনীর আকার - আকৃতি ও গঠন অস্বাভাবিক হয়।
---- যদি প্রচুর পরিমানে প্রোটিন খাওয়া হয়।
---- যদি হাটাচলা কম করা হয়।
---- যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন সি,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি অথবা এ্যান্টাসিড খাওয়া হয়।
কিডনীষ্টোনের লক্ষন সমূহ :--
কিছু কিছু কিডনীষ্টোন আছে যেগুলোর কোন লক্ষন আগে থেকে বোঝা যায়না । হঠাৎ করেই ধরা পড়ে।আবার কিছু কিছু ষ্টোন আছে যেগুলো কোন উপসর্গ ছাড়াই প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে লক্ষন গুলো প্রকাশ পায় তাহলো....
---- তলপেট,উরুগ্রন্থি বা তার আশেপাশে ছড়ানো ব্যাথা অনুভূত হয়।
---- প্রস্রাবের সাথে রক্ত যায়।
---- বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা বা মাথা ব্যথা হয়।
---- মাঝে মাঝে প্রস্রাবে পূঁজ যায়।
---- প্রস্রাব হওয়ার পরও যদি মনে হয় আরো প্রস্রাব হবে।
---- পেশাবের সময় জ্বালা পোড়া করা।
---- সব সময় প্রস্রাবের ভাব থাকা
---- শরীর সব সময় গরম থাকা ( জ্বর)
রোগ নির্নয় :-
আপনি যখন আপনার সমস্যা নিয়ে কোন ডাক্তারের কাছে যাবেন তখন তিনি আপনার উপসর্গ গুলো জানতে চাইবেন অর্থাৎ আপনার মেডিক্যাল হিস্ট্রি ডাক্তার কে জানাতে হবে । সব কিছু জেনে তিনি কিছু পরিক্ষা- নীরিক্ষার মাধ্যমে আপনার রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন । কিডনীষ্টোন আছে কিনা তা জানার জন্য ডাক্তার আপনাকে নিম্নোক্ত টেস্ট গুলো করাবেন....
---- ইউরিনের কোন ইনফেকশন আছে কি-না।
---- শরীরের কোন এক্সট্রা ক্যমিক্যাল আছে কি-না।
---- সিটি স্ক্যান
---- আল্ট্রা সাউন্ড স্ক্যান
---- বিভিন্ন ধরনের এক্সরে
---- বিশেষ ধরনের ইন্জেকশন যা ইউরিনারি সিস্টেমের অবস্থান প্রকাশ করে।
প্রতিকার:-
এসব মেডিক্যাল পরিক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যমে যদি কিডনীষ্টোন ধরা পড়ে তাহলে এর যেন বিস্তার না হয় বা পরবর্তিতে যেন আর না হয় তার জন্য প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহন করা অত্যন্ত জরূরী । যেমন...
---- শরীর যেন শুষ্ক না হয়ে পড়ে সে জন্য প্রচুর পরিমান পানীয় বা তরল জিনিস খেতে হবে। দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
---- সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রস্রাব ঠিক মতো হয় এবং যেন হলুদ না হয়।
---- গরম বা শুষ্ক আবহাওয়ায়,ভ্রমনে এবং জ্বরের সময় পর্যাপ্ত পরিমান পানীয় পান করতে হবে।
---- খাবারে লবণ কম খাওয়া এবং অতিরিক্ত কাঁচা লবণ না খাওয়ায় উত্তম।
তবে আরেকটা জিনিস জেনে রাখা ভালো যে কিডনীষ্টোন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে । সুতরাং খাবারটাও তেমন ভাবে মেনে খেতে হবে। যেমন উদাহরণ সরুপ বলা যায় ... যদি কিডনীষ্টোন ক্যালসিয়াম ওক্সালেট হয় তাহলে আপনাকে সে সব খাবার পরিহার করতে হবে যেসব খাবারে ওক্সালেট এর পরিমান বেশি থাকে । যেমন- চকলেট, চা, কিছু কিছু শাক এবং স্ট্রোবেরি। ভিটামিন সি এবং ডি প্রস্রাবে ওক্সালেটের পরিমান বৃদ্ধি করে।
আবার যদি ইউরিক এসিড ষ্টোন হয় তাহলে আপনাকে মাছ, মাংস , এবং পলট্রি পরিমানে কম খাওয়ায় ভালো । তবে উত্তম হয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা।
শব্দতরংগের সাহায্যে কিডনীষ্টোন অপসারণ
আমি ডাক্তার নই বেশীরভাগ আমার অভিগ্গতা থেকে এবং বাঁকি গুলো গুগল থেকে শেয়ার করলাম। ব্লগে যারা ডাক্তার আছেন আশা করছি ভুল গুলো ধরে দিবেন।