somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ ২.০ (সত্ ও যোগ্য প্রার্থীর খোজে)

২১ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের খ্যাতনামা কিছু বুদ্ধিজীবি, প্রাক্তন আমলা, কলামিস্টরা মিলে একটা প্ল্যাটফর্ম করে এর নাম দিয়েছেন সুশীল সমাজ৷ বোঝা মুস্কিল ঠিক কারা এর সদস্য আর এর বাইরে কারা, মানে যারা সুশীল সমাজের বাইরে তারা কুশীল বা অন্য কিছু কি না৷ তো সুশীল সমাজের মুখপাত্রদের একটা দাবী ছিল সত্ ও যোগ্য প্রার্থী খুজে বের করতে হবে, তাদেরকে নির্বাচিত করতে হবে, তাহলে যদি দেশের ভাগ্য ফেরে৷ সুশীল সমাজের সমর্থক/বিরোধী নির্বিশেষে মোটামুটি আমরা এই স্টেটমেন্ট (সত্ ও যোগ্য প্রার্থীই বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান) মেনে নেই বা নিয়েছি৷

কিন্তু আসলেই কি তাই৷ সত্ আর যোগ্য প্রার্থী হলেই সমস্যার সমাধান হবে৷ তারওপর সত্ আর যোগ্য বিচারের মাপকাঠি কি? যদি দুজন প্রার্থী পাই একজন ৯০% সত্ কিন্তু ৫০% যোগ্য, আর আরেকজন ৫০% সত্ এবং ৯০% যোগ্য কাকে বেছে নেব৷ মতিয়া চৌধুরী আর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কে বেশী সত্ আর কে বেশী যোগ্য? কিভাবে বেছে নেব৷ আসলে এসব প্রশ্নের কোন সোজা সাপ্টা সমাধান নেই, পুরো ব্যাপারটাই আপেক্ষিক৷ আবার পারসেপশনের ব্যাপারও আছে৷ তারেক রহমান যে এত বড় দুর্নীতিবাজ হবে ২০০১ এ কয়জন ভবিষ্যদ্বানী করেছিল? এজন্য সত্ আর যোগ্য প্রার্থীর পিছনে দৌড়ঝাপ করাকে কেন যেন আমার মনে হয় পরশ পাথরের পেছনে দৌড়ানোর মতো৷

যেসব দেশ গনতান্ত্রায়নের মাধ্যমে উন্নতির মুখ দেখেছে, এবং সে উন্নতি ধরে রেখেছে, ধরা যাক যুক্তরাষ্ট্র, জাপান বা জার্মানী, এদের উন্নতির পেছনে সত্ বা যোগ্য লোকের নির্বাচিত হয়ে আসা কতটা ভুমিকা রেখেছে৷ ঠিক জানি না সুশীল সমাজ এসব কেস স্টাডি করেছে কি না৷ একটা ব্যাপার পরিস্কার যে যুক্তরাষ্ট্রের যে ইকোনমিক এঞ্জিন তা আসলে কে কোথায় নির্বাচিত হলো তার ওপর ভীষন ভাবে নির্ভর করে না৷ কিছু নির্ভরশীলতা তো আছেই, কিন্তু মোটের ওপর যেই আসুক না কেন দেশটা চলতেই থাকবে৷ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশকে চালাতে মোটেই হাই আই কিউ, নোবেল লরেট বা রকেট সায়েন্টিস্টের দরকার হয় না৷ কারন দেশটা আসলে চালায় সিস্টেম, কোন এক ব্যাক্তি বা ব্যক্তি গোস্ঠি না৷ দেশের ব্যবস্থাটা এমন যে কোন খারাপ লোক ক্ষমতায় গেলেও নিয়মের খুব বেশী বাইরে যাওয়া কঠিন৷

আর কংগ্রেসম্যান, সিনেটরদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এসব লেগেই আছে, তাই বলে দেশের চাকা ঘোরা বন্ধ নেই যুক্তরাষ্ট্রে৷ ভিশনারী কোন নেতা থাকলে ভালো, না থাকলেও, বা ভিশনটা যদি ভুলও হয় দেশের ভীষন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম, বা আসলে এখন যেমন দেখতে পাচ্ছি এত বড় ইরাক যুদ্ধের পরও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ধ্বসে পড়ে নি৷ আসলে ভালই চলছে৷

তো এসব কারনে আমার মতামত হচ্ছে সত্ আর যোগ্য প্রার্থী খোজার মতো গোলমেলে, গোজামিলে ভরা লক্ষ্যের চেয়ে জরূরী হচ্ছে এমন একটা সিস্টেম দাড় করানো যেখানে অসত্ আর অযোগ্য লোকও যদি নির্বাচিত হয়ে আসে তাহলেও দেশের যেন বিচ্যুতি না ঘটে, যেমন গত ৫ বছর হয়েছে৷ ভিশনওয়ালা নেতা খোজার আসলে কোন দরকার নেই, নেতার ভিশনে কিছু যায় আসে না, কারন গনতন্ত্রের লক্ষ্য জনগনের ভিশন বাস্তবায়ন করা, কোন নেতা কোন আমলে কি স্বপ্ন দেখে রেখেছেন তা নিয়ে আমাদের নষ্ট করার মত সময় নেই৷ ভিশনবাজ নেতা ঘুরে ফিরে আবার সেই ব্যক্তিপুজার জন্ম দেবে, নিকট অতীতে ড ইউনুসকে নিয়েও তো আমরা সেরকমই দেখলাম৷

আসলে আমাদের দেশের ব্যবস্থা যদি এরকম করা যায় যে, পুরো প্রশাসনিক, এবং বিচার প্রক্রিয়া ভীষনভাবে স্বচ্ছ, এবং রেসপন্সিভ হয় তাহলে ঠিক কে দেশ চালাচ্ছে সেটা কোন ব্যপারই না৷ জবাবদীহীতার প্রক্রিয়াটা ৫ বছরের মতো বড় সাইকেলে আটকে আছে বলেই পিন্টু/লালু/ফালু রা দুর্নীতি করার সুযোগ পায়৷ কারন যদি এমন হতো ফালুকে প্রতি সপ্তাহে তার কর্মকান্ডের জন্য সরাসরি জনগনের প্রশ্নোত্তরের মুখোমুখি হতে হতো এবং সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারলে সাংসদকে সাময়িক অব্যহতি দেয়া হতো, তাহলে আমার সন্দেহ হয় ফালুর পক্ষে কতটা দুর্নীতি করা সম্ভব হতো৷

ঠিক কি কি পরিবর্তন করলে বাংলাদেশকে সামন্ততান্ত্রিক ফাদ থেকে মুক্ত করা যাবে বলা মুস্কিল, তবে উপরে যেমন বল্লাম সরকারের ভেতর স্বচ্ছতা এবং যেকোন সময় দ্রুততার সাথে (ধরা যাক ২৪ ঘন্টা টার্নএরাউন্ড টাইম) জনগনের কাছে উত্তর দিতে পারার যোগ্যতাটা আসলে খুব জরুরী৷ হিমু বেশ কিছু প্রস্তাব রাখছে তার লেখায় ইদানিং, হাতে সময় থাকলে আপনাদের পড়ে দেখা উচিত, এবং বিতর্কে অংশ নেয়া উচিত৷ হিমুর লেখার লিংক - [wjsK=http://jongli.wordpress.com/]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ৯:৪৩
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×