ওর সাথে আমার হঠাৎ দেখা। অনেকটা কাজের খাতিরে। ও ছিল আমার সহযাত্রী; সহযোদ্ধা। এক সাথে চলতে চলতে যেটুকু কাছে আসা তাতে আমি বলতে পারি না ও আমাকে নিয়ে ভাবে; আমার জন্য অপেক্ষা করে। আমিও দাবী করতে পারিনা যে আমি ওকে ভালোবাসি।
হঠাৎ একদিন আমার জ্বর হয়। কর্মক্লান্তির জ্বর। কাজে যাইনি। একা একা থাকি তাই শুশ্রুষা করার মত কেউ নেই। সকাল থেকে কিছু খাওয়াও হয়নি। তাছাড়া আমি জীবন সম্পর্কে বেশ উদাসীন। শক্তি বর্ধক কিছু ঘরে রাখব, সে খেয়াল কখোনো হয়নি। শরীর এত দূর্বল যে উঠে কিছু রান্না করব তার উপায় নেই। কি করা যায় তাই সাত পাঁচ ভাবছি...
সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটা হবে। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল। কোন রকমে দরজা খুলেই অবাক। ও এসে হাজির। কিছু বলার আগেই...
আমি জানতাম ও খুব আবেগ প্রবন। কিন্তু এতটা... । ও ঘরে ঢুকেই চলে গেল রান্নাঘরে। ওখান থেকেই চিল্লপাল্লা শুরু করে দিল। - এজন্যই তো আজকে এই হাল। আমি জানতাম, এরম একটা কিছু হবে। মানুষ এতো বুদ্ধু হয়! বাব্বাহ, অন্তত নিজের জন্য না হোক...
- বলো থামলে কেন?
- আমার মাথা। পেটে কিছু পড়েনি তো? পড়বে কি? রান্না ঘরের যে হাল কে বলবে এখানে কোন কষ্মিনকালে চুলো জ্বলেছিল।
- বিশ্বাস করো...
- থাক আর ছাপাই গাইতে হবে না। কতটা মুরোদ তা জানা আছে। দেখি শুয়ে পড়ো তো।
মুখে থার্মোমিটার দিতে দিতে ওর চোখের পাতা ভীজে আসছিল। পাছে আমি দেখে ফেলি তাই ছুতো করে উঠে যাচ্ছিল।
হাতটা ধরে শুধু বল্লাম- কাছে একটুখানি বসো না। বলতে না বলতেই গম্ভীর মেঘের বুক চীরে অঝোরে বর্ষণ শুরু হল। নেই কোন বিজলীর চমক কিংবা বজ্রনাদ। সে কী বর্ষণ- ভেতর বাহির ভেজে একাকার। মেঘের গভীরে যে জলবিন্দুটি ছিল সেও ঝরে পড়তে লাগল। নিঃশব্দ সে বর্ষণ আমার ভেতরটাও ভিজিয়ে দিল।
_________________________________(চলবে)_____