somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের এই দূর্দিনে এখন প্রয়োজন তৃতীয় কোন জোট

০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক আশা-ভরসা নিয়ে পরিবর্তনের আশায় এদেশের মানুষ বিপুল ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা তুলে দেয় আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হাতে। সেই আশার গুড়ে বালি পড়েছে। মানুষের মোহ ভঙ্গ হয়েছে। পরিবর্তন এসেছে, তবে সেটি সাধারন মানুষের জীবনে নয়, সরকারদলীয় নেতা-পাতিনেতাদের জীবনে। তারা ক্ষমতা পেয়েছে, অবাধে লুটপাট করার স্বাধীনতা পেয়েছে। কিছু মানুষ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে। সাধারন মানুষের জীবন দুর্বিষহ থেকে দুর্বিষহতর হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দ্রব্যমূল্য সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে লিখতে লিখতে দেশের বুদ্ধিজীবীদের কলমের কালি শেষ হয়ে গেছে, বক্তৃতা দিতে দিতে শুকিয়ে গেছে নেতানেত্রীদের গলা। সেই দ্রব্যমূল্য আজ তখনকার দ্বিগুন হয়েছে। মধ্যবিত্তেরা লজ্জ্বায় কাঁদতেও পারে না। গৃহবধূরা আঁচলে মুখ ঢেকে ওএমএসের লাইনে দাঁড়াচ্ছে বলে বিবিসি রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের চেষ্টাতো করেইনি, বরং দেশের মানুষ খুবই ভালো আছে বলে মন্তব্য করেছে। তারা নাকি জনগনের আয়-রোজগাড় বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বানিজ্য মন্ত্রী মন্তব্য করেছে, দ্রব্যমূল্য সারা পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম আছে। শুধু এটা বলে নাই, সারা পৃথিবীর মানুষের তুলনায় আমাদের রোজগার কয়েকশ' গুণ কম আছে। তাদের কাছে সম্ভবত মানুষের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা শুনতে উপহাসের মত মনে হয়, তাই সাধারন মানুষকেও তারা উপহাসই করে।

দেশের মানুষের বিনিয়োগ করার মতো কোন জায়গা নেই, তাই তারা কিছু লাভের আশায় শেয়ার বাজারে গিয়ে বিনিয়োগ করেছে। জনগনের সেই টাকা তারা নিজ দলের কিছু মানুষকে লুট করার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রচণ্ড প্রয়োজন ছিল যেই সময়ে সরকারী শেয়ারগুলো বাজারে আনার, সেগুলো তখন না এনে কাল ক্ষেপন করেছে। প্রচণ্ড উত্তপ্ত বাজারে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো টাকার যোগান দিয়ে গেছে দিনের পর দিন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চোখ বন্ধ করে রেখেছে। আর বাজার পড়ে গিয়ে যখন বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে, সরকারের অর্থমন্ত্রীসহ সমস্ত হোমড়া-চোমড়ারা সাধারন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা নিজ দোষে পশ্চাৎদেশে বাঁশ খেয়েছে বলে উপহাস করেছে।

যেই বিদ্যুৎ ছিল নির্বাচন ইস্তেহারের ফার্স্ট প্রায়োরিটি, সেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে প্রথম দুই বছর পূর্ববর্তীদের দোষারোপ করতে করতে মুখে ফেনা তুলে এখন ভুলেই গেছে। বরং কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে জনগনের জায়গা দখল করে জাতীর পিতার নামে এয়ারপোর্ট করা তাদের কাছে সবচেয়ে জরুরী বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। বাঙ্গালী শ্রমীকরা লিবিয়ায় দূর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে। স্বজনদের কাছে ফোন করে তারা কান্নাকাটি করে তাদের দূরবস্থার কথা জানাচ্ছে। আর সরকারের পররাষ্ট্র সচীব তার কাছে এই সংক্রান্ত কোন খবর নেই বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। একজন মহিলা সহ জাহানমনির ২৬ জন নাবিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে মাসের পর মাস বন্দি হয়ে আছে, তারা বিবৃতি দেয়া ছাড়া আর কিছুই করেনি। জনগনের সমস্ত আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন তারা এভাবে জনগনকে দিয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও দিয়ে যাবে।

আর আমাদের বিরোধী দল সামনের সারিতে ২টা চেয়ারের জন্য দিনের পর দিন সংসদ বর্জন করে যাচ্ছে, যেখানে তাদের দায়িত্ব ছিল জনগনের এই দুর্দশার জন্য সরকারকে জবাব দিতে বাধ্য করা। বরং তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনের ডাক দিচ্ছে। ভাবখানা এমন, জনগন দুই বছরের মধ্যই তাদের সমস্ত কুকর্মের কথা ভুলে গেছে। যেহেতু আওয়ামীলীগের উপর মানুষ বিরক্ত, তাই মধ্যবর্তী নির্বাচন হলেই তারা জয় লাভ করে ক্ষমতায় বসে পড়বে - আরো ৩ বছর ধৈর্য্য ধরে বসে থাকার সময় কোথায়!

আমার মনে হয় এখন সময় এসেছে সত্যিকারের পরিবর্তনের। এই দেশে এখন দরকার তৃতীয় কোন জোট, যারা মানুষের কথা ভাববে, মানুষের জন্য রাজনীতি করবে। চাই মাওলানা ভাষানীর মতো কোন নেতা, যারা রাজনীতি করে শুধুই মানুষের জন্য। মূদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ বিএনপি আর আওয়ামীলীগের জোটের হাত থেকে মানুষ এবার মুক্তি চায়।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×