খুব সাধারন আলোচনা এটা, একদম ভিতরে প্রবেশের দরকার নেই! আসুন, ভেবে দেখি!
১। একজন সরকারী আমলা কামলা যখন বিপথে কোটি কোটি অর্থ উপার্জন করে গাড়ি বাড়ি ব্যবসা খামার বাড়ি বিদেশে পাচার ইত্যাদি ইত্যাদি করেন তাতে ক্ষতি হয় কার?
- এর উত্তর হচ্ছে মুল ক্ষতি হয় দেশের আপামর সাধারন জনগণের, কারন কোন না কোন ভাবেই এই টাকা সাধারন জনগন থেকেই উনার পকেটে যায়।
২। কিভাবে জনগণের এই টাকা সরকারের আমলা আয় বা নিজের করেন?
- সরকারের চাকুরে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেখানেই তিনি নানান মানুষকে ধরেন এবং তার থেকে ঘুষ বা কমিশন নেন (নানান ক্ষেত্র আছে, যাতে বাধ্য হয়েই টাকা দিতে হয়)। এখনে সাধারন মানুষ না গেলেও, যে ব্যক্তি বা লোকেদের কাজ থেকে এই টাকা নেন তারা এই টাকা দিয়ে যখন সাধারন মানুষের মধ্যে ফিরে আসেন, তখন তিনি তার প্রোডাক্টের দাম যে কোন ভাবেই বাড়িয়ে দেন, বলা চলে তিনি যে টাকা ঘুষ কমিশন দেন সেটা জনগণ থেকেই তুলে নেন, আপনি আমি চোখে না দেখলেও দিয়েই যাচ্ছি। পরিস্কার উদাহরণে বলা যায়, একটা বড় কোম্পানীর কয়েক কোটি টাকা ঘুষ দিলো, ফলে সেই কোম্পানীর পন্যের দাম বৃদ্ধি পাবেই, সে চুরি করবেই এবং সেই বাড়তি টাকা সাধারন জনগণের ঘাড়েই চাপবে, আমাদের অনেক দ্রব্যের মুল্যবৃদ্ধির নানান কারনের এটাও একটা।
৩। সরকারের এই দূগন্ধযুক্ত আমলারা সরকারের কি ক্ষতি করেন?
- এই ক্ষতি বিরাট এবং এর চাপও এক সময়ে সাধারন মানুষের উপরে এসে পড়ে। উল্লেখ আমলা যাকে বা যে প্রতিষ্টান থেকে ঘুষ কমিশন নেন, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দিতে হয়। ধরেন সরকার যেখানে পেত ১০০ টাকা, আমলা ঘুষ কমিশন খেয়ে তা করে দিল ১০টাকা, সরকারের ক্ষতি ৯০টাকা, এখন সরকার কি করবে? সরকার তার নিদিষ্ট আয় না পেয়ে আবার নুতন নুতন করারোপ করবে, ফলে খুব সাধারন মানুষকে সে টার্গেট করবে। সাধারন মানুষকেই টাকা দিতে হবে নানান ফরমেটে, সিগারেট কিংবা মোবাইল কলে নেটে! প্রতি বছর করারোপ বৃদ্ধির দায় মুলত এই আমলাদেরই, যারা অবাদে হাজার হাজার কোটি টাকা নিজদের পকেটে পুরছে। তারা এই টাকা না নিয়ে স্থির থাকলে সরকারকেও নানান খাত খুঁজতে হত না, সাধারন মানুষের উপর জুলুম করতে হত না।
৪। এই ঘুষ কমিশনের আমলারা কেন এত শক্তিশালী?
- এদের মুলদ জোট বেশ শক্তিশালী, ওস্তাদ থেকে নেয়া শিক্ষা এদের, সরকারের প্রতিটা বিভাগেই এদের বন্ধু পরিচিত থাকে, এদের টাকা নেয়ার সিস্টেমও বেশ গুছানো, অফিসের কেরানী পিয়ন ড্রাইভার এদের হয়ে কাজ করে, তারা নিয়ে তাকে দেয়, মাঝে এরাও ভাগ পায়, ফলে সবাই জড়িত হয়ে পড়ে, আর মুখ বন্ধ থাকে সকলের। এরা আবার নিজেরা যে খায় তা অন্যকেও দেয়, তার উপরের ওস্তাদেরও দেয়। মুখ খুললেই নিজেও ধরা, ফলে ভয়ে সবাই চুপ এবং নিজেরা শক্ত হয়।
৫। এদের থেকে কি সাধারন মানুষের মুক্তি নেই?
- খুব কঠিন প্রশ্ন, তবে উপায় একটাই সাধারন মানুষের সুষ্টু ভোটাধিকার, সাধারন মানুষ ভোট দিয়ে সুশাসক নির্বাচিত করতে পারলেই, এরা বিচারের মুখে পড়ত, এক একজনের বিচার হয়ে কঠোর শাস্তি হলে বাকীরা এই লোভ সামলাতে পারত, অন্তত চেষ্টা বা ভয় পেত, যা এখন একদম নেই।
(ক্রমশ, ব্লগে প্রকাশিত, মনে নুতন প্রশ্ন এলে করতে পারেন, আলোচনা চলবে)