যারা আমরা অনলাইনে থাকি, তাদের কিছু হলেই বা ঘটলেই আমরা সেটা নেটে ব্লগে বা ফেইসবুকে দিয়ে দেই! বিশেষ করে ব্লগে কিছু দিতে লজ্জা পেলেও ফেইসবুকে দিতে কোন সমস্যা নেই! কেহ কিছু বললে, তাকে সহজে ব্লক বা অনফেন্ড করা যায়! সমমনা দের নিয়ে এভাবে একটা নেটওর্যাক থাকে বলে কোন কিছুতেই সমস্যা নেই।
যাই হোক, আজ সারা দিনে কয়েক ঘন্টা নেটে ছিলাম। আমার বন্ধুদের কোরবানীর গরু/ছাগল দেখে বেশ মজা পেয়েছি। সারা দিন থাকলে, আরো অনেক গরু/ছাগল দেখতে পেতাম। চলুন, এবার আমার কালেকশনের কিছু গরু দেখি!
আমার বন্ধুর গরু দিয়েই শুরু করি। ঈদের তিনদিন আগে কেনা এই গরুর দাম ৯০,৫০০ টাকা, স্থান, গাবতলী গরুর হাট! এই গরুর লেজের মাংস দিয়ে আমি একটা আইটেম বানাবো বলে স্থির করেছি, বন্ধুকে আগেই বলেছি, পুরা লেজের মাংস আমার জন্য যেন রেখে দেয়। দেখা যাক, বন্ধু আমার মনে রাখে কি না!
সামুর জনপ্রিয় একজন ব্লগার আমাদের ফয়সাল ভাই। আমি উনাকে বেশ ভাল জানি। নাড়াইলে বাবা মায়ের সাথে ঈদ করতে গিয়েছেন। উপরের এই গরু কিনে সুপারী গাছের সাথে বেঁধে রেখেছেন। এই গরুর চোখ চোখে পড়ার মত!
ফেইসবুকের আরেক জনপ্রিয় মুখ তিনি, এ কে এম ওয়াহিদ্দুজামান! তিনি জাতীয়তাবাদি ঘারানার সেবক। অনেকে কমেন্টে উনাকে স্যার বলে, কিছু দিন আগে প্রথম আইসিটি মামলা খেয়ে বর্তমানে জামিনে আছেন। মাথায় চুল কম বলে লোকে উনাকে অনেক কথা বলেন। আপনার আশা করি উনাকে চিনে থাকবেন! তিনি নিজে এই গরু আপলোড করেছেন!
মোহাম্মদ হানিফ নামের আমার এক ফেইসবুক বন্ধু আছেন, যিনি শুধু আমার লেখাতে লাইক দেন এবং আমি উনার লেখাত লাইক দেই! দেখেন গরুর ছবি কেমন তুলছেন, গরুর মাথা লেজ ফ্রেমে ধরতে পারেন নাই!
ময়মন্সিঙ্ঘের মেহেদী ভাই। আমার সিনিয়র বন্ধু। আগামীতে তিনি এম পি ইলেকশনে দাঁড়াবেন বলে জানি। তিনি তার দুই গরু এক ফ্রেমে ফেইসবুকে দিয়েছেন, আজকাল তিনি যে কোন ছবিকে নুতন ফ্রেমে লাগিয়ে ফেইসবুকে তুলে দেন। যে ব্যক্তি কম্পুটার ধরতে চাইতেন না এখন তিনি ফেইসবুকের রাজা বলে যাচ্ছেন। মোবাইল থেকে শুয়ে ফেইসবুক দেখেন!
রফিক ভাই, আমার বন্ধু। ইংরেজীর জাহাজ, ইউনিভারসিটির শিক্ষক, দাবাতে তিনি জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তিনি তার গরু আপলোড করেছেন। দেশী গরু, দেখে বুঝা যায়, ভার্সিটি সৎ শিক্ষকদের অবস্থা কাহিল!
তার ছেড়া তামিম। আমার ফেইস বুকের তরুণ বন্ধু। সারাক্ষন নেটে থাকেন, ট্যাকনিক্যাল নলেজ খুবই ভাল, ছবি ডাউল্লোড করেন, নিজের ব্লগ আছে, ক্ষনে ক্ষনে ফেইসবুকে আপডট দেন, আমার ভাল লাগে। নিজে বাবার সাথে গরু হাটে গিয়ে এই গরু কিনেছেন। বেশ আনন্দদায়ক।
সাবেক সেনা সদস্য, আমাদের চিরনবীন ব্লগার কান ফেইসবুকিশিয়ান ত্রিশাঙ্কু ভাই। তিনি এবার গরু না কিনে ৭টা ছাগল কিনেছেন। আর্মি পারশোন্যালদের যা করবার আর কি! যাই হোক, ৭ টা ছাগল ছিলে কেটে কুটে দিতে তিনি ৩ হাজার বাজেট করেছেন। যারা উৎসাহী তারা যোগাযোগ করতে পারেন। ছাগল কাঁটার সময় আপনাকে বিভিন্ন জুস পান করাবেন!
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেবের গরু! মন্তব্য চলে না!
মাঝে একটা মোটাতাজা গরু দেখিয়ে দেই! বাংলা হিরো!
জিসান মামার গরু! জিসান মামা সাথে আছেন! গরুর সাথে ছবি তোলার একটা আলাদা মজা আছে! দুনিয়ার সব কিছুই স্মৃতি হয়ে যায়, আগামী কাল এই গরুটাও স্মৃতি হয়ে যাবে, তাই শেষ খাবার খাইয়ে নিচ্ছেন।
জাতীয়তা বাদী প্রকোশলী বসর সাহেবের গরু। রাতে আটো ক্যামেরায় তোলা।
জাতির নানার গরু। গরুর দড়ি লাগে না! গরু দিয়ে তিনি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন!
যুবলীগের খুলনার তরুণ নেতা আমাদের নেটের জনপ্রিয় বিবেকবান ব্রাদার উজ্জল ভাই। তিনি এই গরু কিনেছেন। আগামী সকালে নামাজ পড়ে নিজে গোসত বানাবেন বলে ঠিক করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ফেইসবুক বন্ধু সামসুল ভাই আজ এই গরু কোরবানী দিয়েছেন। যা বুঝা যায়, নিজে কিছু গোসত বানিয়েছেন।
আমার ছোটবেলার বন্ধু সেলিম। বউ বাচ্চা নিয়ে থাইল্যান্ড থাকে। আজ সে পাঠা কোরবানী দিয়েছে! খাসি পাবে কোথায়, বাংলাদেশ ছাড়া খাসি দুনিয়ার কোথায়ও পাওয়া যায় না! খাসি পেতে ও দেখতে হলে আপনাকে বাংলাদেশে বসবাস করতে হবে! উল্লেখ্য যে, সে হজুর না পেয়ে নিজ হাতে কোরবানী করেছেন, সোয়াব আরো বেশি হবে!
এই হচ্ছে শাহী গরু! এই গরুর ছবি দেখলে মন ভাল হয়ে যায়! গরুকে সন্মান করতে আমাদের জানিয়ে দেয়! এই গরুর মালিককে পেলে আমি সালাম করতাম। আই রিয়েলি লাইক ইট!
(আরো অনেক গরুর কালেকশন আছে, আরো ছবি দিতে পারলে খুশি হতাম। সময়াভাবে এবং নেট লাইন স্লো থাকার কারনে আপলোড করতে পারছি না, দেখা যাক গরু নিয়ে আর একটা পর্ব করা যায় কি না!)
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা!