বাধন
আমি বেশ কিছুদিন সবধরনের যোগাযোগের বাইরে। তোর চাকরি ছাড়ার কথা আমার জানা ছিলো না। অভিনন্দিত করার কিছু নেই। কারণ আমরা অনেক বড় `কুতুব' হয়ে যায়নি কেউ। আবারো এমনই কোনো সিস্টেমে ঢুকতে হবে। আমি বলছি না যে কম্প্রোমাইজ করে যেতে হবে। কিন্তু এটাও তো ঠিক, আমরা এইভাবে সরে যেতে থাকি বলেই আমাদের স্বর মূলধারার মিডিয়ায় থাকে না। সেক্ষেত্রে আমার মতো কিছু ধান্দাবাদ এসব এলাকাই থাকা দরকার।
আমাদের যে সহকর্মীরা সেখানে গেছে তাদের কথা শুনে হতবাক আমি। তারা বরেছিলেন, ওই পতিকাকে প্রথম বানাবো, েতামাদেরটাকে দ্বিতীয়। আমরা তাহলে এতোই বড় `পাণ্ডা' যে আমাদের চাওয়ার জায়গাগুলো এমন হয়ে যাবে।
আমি আদিবাসীদের নিয়ে ঘটনা বলি। ২০০৮এ যখন সাজেকে প্রথম বাঙালি ঢুকলো তখন আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম মনে আছে। ফিরে চমতকার একটি প্রতিবিদন লেখা হরো। সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলো ডিআরইউ-তে। সেদিন আমরা একজন সাংবাদিকো পাইনি। নিউ এজ বন্ধু পত্রকা হওয়ার কারণে সেখানে ছাপা হয়েছিলো। গত মাসে যখন আবারো সহিংসতা ঘটলো, আমি সেখানেই ছিলাম। আমি কিন্তু যেভাবে চেয়েছি, কারো ক্ষতি না করে যেভাবে নিউজ হয় সেটা করতে পেরেছি এবার। পুরোটা পেরেছি বলবো না। কিন্তু পেরেছি। যেদিন চাকরি েনই আমরা সেদিনই জানা থাকে পত্রকার নীতি মেনে চলতে হবে। দৈনিক পত্রিকা দিয়ে `আন্দোলন' হবে ভেবেছিলি নাকি? তবে আমার বিশ্বাস এসব হাউসের ভিতরে থাকলে কিছু উপকার হয়। আমার বিশ্বাস, যেটা একেবারেই আমার অবস্থানের সাথে যাবে না সেটা বিকৃত উপস্থাপন বন্ধ করা সম্ভব। তোর কি মনে হয় না যে, বিকৃত উপস্থাপন হতে দেয়ার চেয়ে তেমন কোনকিছু প্রকাশ ঠেকানো জরুরি? এবং এটা সম্ভব। এর জন্য েয কৌশল নিতে হয় সেটাতে আপত্তি থাকতে পারে
কিন্তু অন্য কোন পথ আছে কিনা জানি না। মূলধারার বাইরে যে পত্রিকা বের হয় এখন পর্যন্ত আমার পর্যবেক্ষণ হলো। সেগুলো যারা বের করে তারাই পড়ে, তাদের বন্ধু, শুভাকাক্ষিরাই েকেন তবে পেড়ন না। সব লেখা প্রকাশ হওয়ার কথা না। আর আমরা যারা `একটু অন্যভাবে' ভাবি বলে দাবি করি তাদের ক্ষেত্রে এটা হবারই কথা। পৃথিবীর কোন পত্রিকাতে কি সেটা হয়? আমরা কথায় কথায় বিকল্প মিডিয়ার কথা বলি, সেখানে কি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কিছু বিষয় অন্যভাবে উপস্থাপিত হয় না?
আমি আমার চাকরিতে যোগ দেয়ার সময় অনেকে বলেছে, `এই পত্রিকায় কেনো, ওইটাতে যেতা'
তোর কি মনে হয়, এমন কোনটা আছে যেটা আমাদের তীর্থভূমি? ধর আমি যেখানে চাকরি করি। সেখান থেকে কাজ বাদ দিয়ে আমি তথাকথিত প্রগতিশীল পত্রিকায় যাচ্ছি। কেনো যাচ্ছি? আমি তো জানি, কোনটাই পারফেক্ট না, তাহলে কেনো যাচ্ছি। কারণ আমার পোসাচ্ছে না। কেনো পোসাচ্ছে না? আমি ভাবছি আমার যে ক্ষমতা, দক্ষতা তা প্রকাশ করতে দেয়া হচ্ছে না। আরো ভাবছি, আমার চে কম জানা লোক গুরুত্ব পেয়ে যাচ্ছে। বা অন্য কোথাও বেশি টাকা এবং সম্মান দিবে তাই যাচ্ছি। অথচ সেই যাওয়াটাকে নিয়ে নানাভাবে ব্যাখ্যা হাজির করছি। নিজের কাছে, অন্যদের কাছে। (এটা তোর বিষয়ে বলিছ না, ইন-জেনারেল তাই ঘটে)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথা ভেবে দেখ। তারা কি করেছন? তারা কি স্বাধীন? ইচ্ছে মতো কাজ করতে পারছেন? সেটা করতে হরে তারা যা করছেন তা সেচ্ছাচারিতা। মনে হচ্ছে খাতা দেখবোনা, দেখছি না। মনে হচ্ছে ক্লাস নিবো না, নিচ্ছি না। কিন্তু কখনোই মনে হচ্ছে না বেতন নিব না। কেউ ভাবছেন, ধুর অন্য সহকর্মীরা গরু-ছাগল, তাদের সাথে মিটিং এ বসবো না। তাতে কার লাভ? কার ক্ষতি? মিটিং গুলো হচ্ছে, এবং যে সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেগুলো পরিস্থিতি আরো প্রতিকূলে নিয়ে যাচ্ছে। নবীন বরণের প্রস্তুতিতে আমার সময় নস্ট করার সময় নেই। তাতে কি হচ্ছে? রবীন্দ্রসঙ্গীত হতো যে বিভাগের অনুষ্ঠানে সেখাণে আমি তুমি মার্কা প্রেমের গান বা অশ্লীল কৌতুক ঢুকে যাচ্ছে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত `আধুনিক' িশক্ষার্থীরা কিন্তু নিজেদেরকে েদশাত্মবোধক, রবীন্দ্র, নজরুলের বাংলা গান শুনতে অভ্যস্ত করে তুলতে পেরেছিলো। `বিশেষ' গুরুত্বপূর্ণ এবং জ্ঞানী শিক্ষকরা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কারণে লাভটা কি হলো?
আমার বিশ্বাস তুই আমার জায়গাটা বুঝবি। ভালো থাকিস।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ১০:০৩