একটা প্রবাদ আছে: Once is "Happenstance", Twice is "Co-Incidence", The third time it’s "Enemy Action" কিন্তু যদি চতুর্থবার ঘটলে যে কী? সেটা জানা নাই।
গতকাল রাতে “বরগুনা“ থেকে “ঢাকায়“ ফেরার পথের ঘটনা বলি....
রাত ২:০০টা : ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে হঠাৎ বাস নষ্ট। বাসের ড্রাইভার বলল সবাই নামেন, ঠেলা দেওন লাগবো। এক এক করে প্রায় সব যাত্রী নেমে ১ ঘন্টা বাস ঠেলা দিলাম বাসের যাত্রীরা। কোন লাভ হল না। শেষে বাসের সকল যাত্রী অন্য ৪/৫টা বাস ধরে ঢাকার উদ্দেশে আবার যাত্রা শুরু করলাম।
ভোর ৫:০০টা : আরিচা ফেরিঘাট। ফেরি ঘাটে ভিড়েছে, সব বাস নেমে যাচ্ছে কিন্তু ঘটনা কী? আমি যে বাসে বসে আছি সেটা নামে না কেন? সমস্যা কী? আবার কী হল? এই বাসে আমরা কয়েকজন আগের বাসের যাত্রী ছিলাম। তারা বলাবলি করছে, “কি যন্ত্রণা- তাড়াতাড়ি না পৌঁছলে ঝামেলায় পড়ে যাব যে।“ কিছুক্ষণ পর বাস চলা শুরু করল। এটাও রাস্তায় বারবার বন্ধ হয়ে গাবতলী পৌঁছল। উফঃ অবশেষে .........
সকাল ৮:৩০ : গুলিস্তান যাব, সেখান থেকে বাসায়। আবার বাসে উঠলাম। বাসে চরম পর্যায়ের ভিড়। অনেক ঠেলা-ঠেলি করে উঠে পড়লাম। কল্যাণপুর আসতে না আসতেই রাস্তার মাঝখানে বাস বন্ধ হয়ে গেল। বাসের যাত্রীরা দ্রুত নেমে যাচ্ছে, তাকিয়ে দেখি বাসের ভেতর ধোঁয়া। আগুন লাগল নাকি বাসে? দিকবিদিক চিন্তা না করে বাস থেকে নেমে দিলাম দৌড়। হায়-হায়!!! আজ কি বাসায় যেতে পারব না? হচ্ছেটা কি এইসব? যত যাই হোক বাসায় তো যেতেই হবে। আরেকটা বাসে উঠে পড়লাম, গন্তব্য গুলিস্তান।
সকাল ৯:০০টা : বাসে বসে-বসে চিন্তা করছি, রাত থেকে একের পর এক ঝামেলা হচ্ছে। একবার দুইবার হলে মানা যায়; তাইবলে তিন-তিন বার। নাহ! কাহিনী তো একটা আছেই! তা না হলে বারবার কেন পথের মাঝে আটকে যাচ্ছি....কাকে যেন ফোন করব বলে মোবাইলটা পকেট থেকে বের করলাম ঠিক সেই মুহূর্তেই ...
!!!!ধাম!!!!
তাকিয়ে দেখি মোবাইলটা হাতে নেই এবং বাসটা দুলছে। দুলছে বললে ভুল হবে, বাস একবার ডানদিকের দুই চাকায় আর একবার বামদিকের দুই চাকায় ভড় করে তীব্র গতিতে ছুটে যাচ্ছে। আমি তো একেবারে স্তব্ধ! হাত-পা নাড়াতে পাড়ছিলাম না। বুদ্ধি প্রায় শুন্যের কোঠায় পৌঁছে গিয়েছিল। ড্রাইভারের মোটামুটি ১০-১৫ সেকেন্ড সময় লেগেছে বাসটাকে থামাতে। এই ক্ষুদ্র সময়টা আমার কাছে মনে হয়েছে কয়েক যুগ। ধরেই নিয়েছিলাম আমি শেষ।
ভাগ্য ভাল বাসটা উল্টে যায় নি; তা হলে কত মানুষ না নিহত হত। তদের মাঝে হয়তবা আমিও রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতাম।
বাস থেকে নেমে দেখি জায়গাটা আসাদগেট। বামদিক থেকে আসা একটি বাস ধাক্কা দেয়ায় এই দুর্ঘটনা। ধাক্কাটা লেগেছিল বাসের বামদিকে পিছনের অংশে।
কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে নাই। শুধু বাসের বামদিকে যারা বসে ছিলেন তাদের কারও কারও হাত-পা থেতলে গেছে আর বাকিদের শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে গেছে। আমি বাসের ডানদিকে বসা ছিলাম, ডানদিকের অন্যান্য যাত্রীদের মত আমারও তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। ধাক্কার কারণে একটু ব্যথা পেয়েছি আরকি।
তারপর একটা CNG ভাড়া করে সরাসরি বাসায়। আর কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই বাসায় পৌঁছেছি।
সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আজ অক্ষত অবস্থায় বাসায় ফিরেছি।
দুই দিন আগে বরগুনা গিয়েছিলাম বেড়াতে সাথে আমার আম্মা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১১ রাত ১১:২৯