Open your eye
বিবর্তনবাদ
ডারউইনবাদ
Open your mind
বিবর্তনবাদ প্রানী বিজ্ঞানের একটি শাখা।
ডারউইনবাদ বিবর্তনের একটি তত্ত্ব (সঠিক কি ভুল বিবেচ্য নয়)।
Absent Mind
বিবর্তনবাদ ও ডারউইনবাদ কে প্রায় অনেকেই সমার্থক মনে করেন। বিজ্ঞানের এনালাইসিসে এটাকে "বিসমিলি্লাহ গলদ" ত্রুটি বলা যায়।
Open your eyes
ডারউইনের স্বীকারোক্তিঃ 1860 সালের 22শে মে লিখা একটি চিঠিতে ডারউইন লিখেছিলেন -
"আমার পুস্তকে সর্বধিক বিচু্যতি বিদ্যমান এবং তা গুরুত্বপূর্ণ। হুকার, থয়টিস প্রমুখদের বক্তব্য অনুসারে তো বটেই; এবং আমারো ধারনা, আমার পুস্তকের (অন দি অরিজিন অব স্পেসিস) প্রধানতম বিচু্যতি হলো, কেন প্রাণি-জগতের সকলের গঠন-কাঠামোতে প্রয়োজনীয় বিবর্তন, অগ্রগতি ও পরিবর্তন ঘটে না; এবং কেন ও কিভাবে এতসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী সেই আদিকাল থেকে এ যাবত টিকে আছে, - সে বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাব।"
(সুত্রঃ ফ্রানসিস ডারউইনঃ 'দি লাইফ এন্ড লেটার্স অব চার্লস ডারউইন' তৃতীয় খন্ড, প্রকাশক, জন মারে)
Open your mind
ডারউইন যথার্থই একজন বড় মাপের বিজ্ঞানী। একটি হাইপোথিসিস (অনুমান ভিত্তিক সিদ্ধান্ত) এর কোন বিষয় বা তত্ত্ব নিয়ে গো ধরে বসে থাকা কোন বিজ্ঞানীর কাজ নয়। বিজ্ঞানের এনালাইসিস পদ্ধতির দিকে তাকালে দেখা যায় - কোন সূত্র বা তত্বের উপর পক্ষ বিপক্ষের মতামত সমূহ একে অপরের পরিপূরক। এই পথ ধরেই চুরান্ত সত্য বের হয়ে আসে। ডারউইনের উপরোক্ত স্বীকারোক্তিতে তার প্রমান রয়েছে।
Absent mind
একটি প্রবাদ রয়েছে ... "পোপের চেয়েও বেশী খৃষ্টান।" মূর্খ জ্ঞানী নির্বিশেষে প্রবাদটি মানুষের সধারন প্রবনতার পরিচায়ক। এই সচেতনতাই আমাদের সবচেয়ে কম।
তথ্য-1 ঃ
Open your eyes
একটা বিশেষ এলাকার প্রাণীজগতের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, সে জগতের মধ্যে একটা ভরসাম্য মূলক অবস্থা বিদ্যমান। এই ভারসাম্য সব স্থানে একই ধরনের নয়। যেমন কোন এটি এলাকায় হয়তো বিশেষ কোন প্রজাতির প্রাধান্য রয়েছে... কিন্তু অন্য একটি এলাকায় সেই বিশেষ প্রজাতির উপর প্রাধান্য বিস্তার করে রয়েছে ভিন্ন কোন প্রজাতির প্রাণী।
Open your mind
সামগ্রিক ভাবে পর্যবেক্ষর থেকে দেখা যায় যে... প্রাকৃতিক নির্বচন সূত্র কোন একটা নির্দিষ্ট এলাকার প্রজাতির মধ্যে কার্যকর হতে পারে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে গোটা প্রাণীজগতের দেহগত বিবর্তনে কোন প্রভাব বিস্তার করে না। অর্থাৎ প্রাকৃতিক নির্বচন সূত্র localized, universal নয়।
তথ্য-2ঃ
Open your eyes
কোলন ব্যাসিলাস ও ড্রাসাফিলা লাখ লাখ বছর পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌছেও অতীতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট ধরে রেখেছে। এরকম আরো প্রাণী আছে যেমন পানক্রনিক প্রজাতির প্রাণী - আদিকাল থেকেই একই রকম আছে। নীল শৈবাল - শতকোটি বছর যাবৎ অপরিবর্তনীয় রয়েছে। আরো রয়েছে ফেরো ব্যাক্টেরিয়া, স্পঞ্জ, সলিইসকম ইত্যাদি।
কোয়েলাক্যান্থ মাছ লক্ষ কোটি বছর যাবত অপরিবর্তনশীল রয়েছে।
Open your mind
এসব প্রাণী ডারউনের ন্যাচারাল সিলেকশন থিউরির এক জীবন্ত প্রতিবাদ।
তথ্য-3ঃ
Open your eyes
শুধু শক্তিমান ও উপযুক্তরাই বেচে থাকবে- ডারউইনের এই ধারনার প্রকৃত চিত্র হলো- কোন এলাকায় যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন দাবানল, জলোচ্ছ্বাস, আগ্নেয়গিরির অগ্নু্যপাত, আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন ইত্যাদি সংগঠিত হয়, তবে শক্তিমান দুর্বল নির্বিশেষে সবাই মারা পড়ে।
Open your mind
ডারউইন তত্ত্বের পর্যালোচনা করতে গিয়ে পিপি গ্রাশে একটি মাত্র সত্যই তুলে ধরেছেন যে, মৃতু্য কোন বাছ বিচার মানে না। দুর্বলই কেবল মৃতু্যর শিকার হবে, শক্তিমান রক্ষা পাবে- ডারউইন আমাদের এই ধারনাটা দিতে চেয়েছেন।
তথ্য-4ঃ
Open your eyes
একশ্রেনীর দেওদার গাছে একধরনের রাসায়নিক পদার্থের সৃষ্টি হয়, যা পোকামাকরকে আকৃষ্ট করে। ফলে গাছটি মৃতু্য মুখে পতিত হয়। অনুরুপ ফার ও পাইন জাতীয় গাছ-পালাতেও এধরনের বৈশিষ্ট রয়েছে। কোটি কোটি বছর যাবৎ এধারা অক্ষুন্ন রয়েছে। এসব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। বিবর্তনের ধারায় সর্পকূল তাদের সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারিয়েছে।
Open your mind
কোন জীব বিজ্ঞানী ডারউইন তত্ত্বের সহায়তায় এই ধরনের সম্পূর্ন বিপরীত বিষয়ের কোনই ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।
তথ্য-5ঃ
Open your eyes
বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং তেলাপোকা তাদের আদিম যুগের অবয়ব নিয়েই এযাবত টিকে রয়েছে।
Open your mind
ডারউইনবাদী, অধুনা নব্য ডারউইনবাদীরা প্রাণের এবং প্রজাতির বহুকরনের ব্যাপারটা শুধু লক্ষই করে গেছেন, কিন্তু একই প্রাণী প্রজাতির কম বেশী অভিন্ন থাকার মত সুস্পষ্ট অথচ অনড় একটি বিষয়কে যে তারা সম্পূর্ন এড়িয়ে গেছেন, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এতো গেল ডারউইনবাদীদের কথা...
ডারউইনের বক্তব্য দেখা যাক-
1861 সালে টমাস থর্টন স্কয়ারকে লিখিত এক পত্রে ডারউইন স্পষ্ট ভাষায় স্বীকার করেছেন যে তিনি বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যায় সত্যিই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এবং একথাও বলেছেন- "তবে, আমি ন্যাচারাল সিলেকশন তত্ত্বে বিশ্বাসী। যদিও এই তত্ত্ব অনুযায়ী কোন প্রজাতি এযাবত পরিবর্তিত হয়ে অন্য আরেকটি প্রজাতিতে পরিবর্তিত হয়েছে- এমন একটি প্রমানও আমি দেখাতে পারবো না, তথাপি আমি এ তত্ত্বে বিশ্বাস করি। আমার এই বিশ্বাসের কারন এই যে, এই তত্ত্ব দ্্বারা সহজেই প্রাণী জগতের শ্রেণী বিভক্তি, ভ্রুনতত্ত, অংগসংস্থান, ভূতাত্তি্বক পরমপরা ও বন্টন ইত্যাদি নানা বিষয় ও ঘটনার চমৎকার ব্যাখ্যা সম্ভব।" - ডারউনের এই পত্রের মূল কপি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।
(সূত্র- এম ভারনেটঃ ইভুলিউশান অব দি লিভিং ওয়ালড)
Absent mind
আসলে, ডারউইন মানুষের অনুসৃত কৃত্রিম নির্বাচনের বিষয়টিকে প্রকৃতির নির্বাচনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছিলেন। প্রাণীজগতের ব্যাপারে মানুষের অনুসৃত নির্বাচন তথা কৃত্রিম প্রজনন ব্যাবস্থায় কোন নতুন প্রজাতির জন্ম হয় না। ইহাদের চারিত্রিক কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যের উপর কিছুটা প্রভাব বিস্তার করে মাত্র। এর দ্্বারা প্রাণীর নতুন কোন অংগ গজায় না, নতুন কোন ইন্দ্রিয় সংযুক্ত হয় না- নতুন কোন প্রজাতি তৈরি তো দুরের কথা।
ডারউইনের পুস্তকটির পুরো নাম হলোঃ "অন দি অরিজিন অব স্পেসিস বাই মিনস অব ন্যাচারাল সিলেকশন অব দি প্রিজারভেশন অব ফেভার্ডরেসেস ইন দি ষ্ট্রগল ফর লাইফ।"
প্রকাশকালঃ লন্ডন, 1859 খ্রিঃ
ডারউইন তার পুস্তকে স্পেসিস বা প্রজাতি বলতে কি বুঝায়, তার কোন সংঙ্গা প্রদান করেন নাই। এমনকি তার পুস্তকের গ্রোসারী বা শব্দ ব্যাখ্যাতেও স্পেসিস বা প্রজাতি বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন তা অনুক্তই থেকে গিয়েছে।
...................... - পি পি গ্রাশেঃ মলিকুলার বায়েলজি
ইভু্যলিউশন বা বিবর্তন - শব্দটি ডারউইনের মূল টার্মোনোলজিতে ছিল না। ডারউইন রচিত "অন দি অরিজিন অব স্পেসিস" পুস্তকের ষষ্ঠ সংস্করনের আগের কোন সংস্করনেই এই শব্দটি (ইভু্যলিউশন) আদৌ উল্লেখিত হয় নাই।
.............................. - জে, রজার
অথচ সর্বদা এরকম প্রচারনা চালিয়ে আসা হচ্ছে যে- ডারউইনই প্রথম বিবর্তন বাদের ধারনা প্রদান করেছেন।
মজা বিষয় হচ্ছে -
বিবর্তন বাদের জনক হলো - লামার্ক।
1801 সালে প্রকাশিত - ইনু্যগুরাল স্পিচ অব দি টুয়েন্টি ফাষ্ট ডে অব ফ্লোরিল, ইয়ার এইট" নামক রচনায় তিনি বিবর্তন বাদের রূপরেখা প্রকাশ করেন।
এই সংক্রান্ত তার শ্রেষ্টতম রচনা সম্ভার - "জুওলজিক্যাল ফিলোসফি" প্রকাশিত হয় 1809 সালে, অথ্যাৎ ডারউনের 50 বছর পূর্বে।
ডারউইন কে খুব বেশি করে বললে ট্রানসফরমিষ্ট বা রুপান্তরবাদী বলা যায়, বিবর্তন বাদী নয়।
আরো মজার তথ্য হলো-
মানুষ কোন এক জানোয়ারের বংশধর এই ধারনা প্রথম ব্যাক্ত করেন "হেকেল" 1868 সালে।
অথচ বিবর্তনের ধারায় - মানুষ বানরের বংশধর- তা প্রতিপন্ন করার কাজে সাধারনত ডারউইন তত্ত্বকে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।
বাস্তবতা হলো- নাস্তিক্যবাদী শিবিরে ডারউইন একজন হিরো- পুজনীয় ব্যাক্তিত্ব। বস্তুবাদীরা যখন তাদের মতবাদের যাতাকলে কোনকিছুকে গুড়িয়ে দিতে বা উড়িয়ে দিতে চান, তখনই তারা ডারউইন এবং তার তত্ত্বের দোহাই পাড়েন। অথচ "অন দি অরিজিন অব স্পেসিস" পুস্তকের অধ্যায়ের পর অধ্যায় পড়ে গেলে, যেকেউ দেখতে পাবে যে, ডারউইনের মতবাদ আদৌ ধর্ম বিরোধী কোন বিষয় নয়। এমনকি সে বিবর্তন যদি মানব প্রজাতিরও হয়, তাহলেও তা ধর্মীয় বিশ্বাসকে হেয় প্রতি পন্ন করে না।
আসলে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এই ডারউইনবাদকে যতনা জ্ঞান বিজ্ঞানের সহায়ক হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে, তারচেয়েও অধিক মাত্রায় ব্যাবহার করা হয়েছে আদর্শগত উদ্দেশ্য পুরনের নিমিত্ত হিসেবে। অধুনা আমরা বিবর্তনবাদের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক বেশী ওয়াকিবহাল। আর এটা সম্ভব হয়েছে জীবাশ্ম-বিজ্ঞান সহ অপরাপর প্রকৃতি বিজ্ঞানের বহুবিধ সঠিক তথ্য ও প্রমান আবিষ্কারের কারনে। শুধু তাই নয়, ডারউইনের পর থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত প্রাপ্ত বংশগতি (জেনেটিক) ও জীববিজ্ঞান (বিশেষত মলিকু্যলার বায়োলজি) সংক্রান্ত প্রচুর তথ্য জ্ঞান এখন আমাদের নাগালে রয়েছে। এসব প্রমানের মাধ্যমে বিবর্তন বাদ সংক্রান্ত সম্যক জ্ঞান অর্জন যে কারো পক্ষেই অনেকটা সহজ হয়ে পড়েছে। অথচ আমাদের কেউ কেউ শাতাধিক বছর পূর্বেকার এই বিভ্রান্তিকর ডারউইন তত্ত্বটি নিয়েই বসে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, এখনো এই ডারউইন তত্ত্বের এমন সমর্থক আছেন, যারা মনে করেন, এই তত্ত্ব বাদ দেয়া মানে তাদের আদর্শের পৃষ্ঠে ছুরিকাঘাত করা। সুতরাং ডারউইনের এই তত্ত্ব আজকের যুগে যতই বাতিল বলে প্রমানিত ও হাস্যকর বলে বর্জিত হোকনা কেন, তারা যে কোন মূল্যেই যে তা আকড়ে ধরে থাকতে চাইবেন, সেটাই স্বাভাবিক।
--
প্রাসঙ্গিক লেখাঃ
- অ্যান্টি নাস্তিকতা (১): মানুষের উৎপত্তি
- অ্যান্টি নাস্তিকতা (২): বিবর্তনবাদ : কতটা বিবর্তিত ?