নামটা ধার করা। আসলে ঘুম থেকে উঠে এই বইটা নিয়েই সারাদিন গেল কিনা তাই নামটা যেন মস্তিষ্কে প্রিয় কোন ডাকের মতই একটু পর পর টোকা দিয়ে যাচ্ছে। কালো মলাটের একটা বই। ভেতরটা যেন আরও কালো। নাহ্ এটা বলা ঠিক হলো না... এখন পর্যন্ত পড়েছি মোটে সাড়ে সাত পাতা। তাই ভেতরটা কতটা কালো তা ঠিক এখনো বোঝা যাচ্ছে না। সবুজও হতে পারে....
তা ভেতরটা সবুজ হোক আর কালো এই মুহূর্তে আমার কাছে বইয়ের নামটি অনেক আদরের। আর সেটাই সবচেয়ে বড় কথা।তাই চাইলেও এই মুহুর্তে অন্য কিছু নাম দিতে পারতাম না বোধহয়।
সে যাক গে,, ভাবছি কি লিখব,, কিই বা লিখব...............
কি নিয়ে লেখা যায় এমনটাই ভাবছি যে ঠিক তা না। মাথায় দুটো গল্পের মতন কিছু একটা ঘুরছে বেশ কদিন ধরেই কিংবা ড্রাফটে এক-দু প্যারা করে বা শুধু মাত্র শিরোনামটাই লেখা আছে এমন যে কোন একটা লেখা নিয়েই লিখতে বসে যেতে পারি। কিন্তু তেমন কিছুই যে লিখতে ইচ্ছে করছে না এখন।
তবু লিখতে ইচ্ছে করছে এটা ঠিক। ব্যাপারটা বেশ মজার বটে। কদিন হলো এই ব্লগে লেখা শুরু করলাম আমি,, কদিনই বা... কিন্তু এই কদিনেই বেশ একটা নেশার মত হয়ে গেছে একদম। পিসিটা যতক্ষণ অন থাকে এই ব্লগের একটা উইনডো খোলা থাকে সারাক্ষণই তা আমি নাইবা থাকলাম পিসির সামনে। ভালোই লাগে আমার,,
ঠিক যেন দুরে বসেও এক রকম কোলাহল এর মধ্যে থাকা....
ঠিকাছে শুরু তো করলাম কিন্তু এবার কি বলব?
আজ রবিবার।
তারপর? তারপর.....
আমি সারাদিন কি কি করলাম তার বর্ণনা। নাহ্ আজ আমি এমন কিছুই করিনি যা নিয়ে কিছু বলা যায়। হুমম এটা অবশ্য বলতে পারি যে আজ কিছু করার নেই বা থাকলেও ইচ্ছে করছে না বলেই এই অর্থহীন কথাগুলো বলা হচ্ছে। আশ্চর্য তো?? এই কথাগুলো কি অর্থহীন??
আসলে আমার বোধহয় সবই অর্থহীন। না না সেটা মোটেও ঠিক কথা হলো না!! নাহ্ কিছুই যেন ভালো লাগছে না......।
তুমি কি বুঝতে পার?? সীমান্তের ঐ পার থেকেও....
তুমি বারবার ছুঁয়ে যাও আমায় একটু একটু করে।
দূরত্ব হাজার মাইল কিংবা হয়ত কয়েক ঘন্টা,,
তবুও ব্যথাটা কি করে এতটাই তিক্ষ্ণ থাকে আমি ভাবি....
হয়ত পুরোটাই আমার বোঝার ভুল কিংবা অতিশয় বিভ্রম।
এই কথাগুলো কেন লিখলাম?? কি যেন,, হয়ত ভাবছিলাম তাই। আর নয়ত এটাও হয়ত এক রকমের অতিশয় বিভ্রম!! যে কোন কিছুই তো হতে পারে এটা নিয়ে এত ভাবনার কি আছে??
তার চেয়ে বরং গত কালের কথা বলি। কালকে হয়েছে কি,, দুপুরে আমি বাড়ি ফিরছিলাম। খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হওয়ায় আর আগের রাতে না ঘুমানোয় আসার পথে আমি রাস্তায় না বলে কয়েই ঘুম!! তাও সে কি ঘুম রে বাবা যখন চোখ খুললাম দেখি বাড়ির পরে চারটে স্টেশন পার হয়ে গেছে.... নিজের ওপর বিরক্ত আমি যখন ফেরার জন্যে পা বাড়ালাম দেখি একটা বিশাল ব্রীজের ওপর আমি আর ওপরে দিগন্ত জোড়া আকাশ। মনে পরে গেল ছোট্টবেলার ভাত ঘুমের দুপুরগুলো.... না ঘুমিয়ে চুরি করে যখন জানালার পাটাতনে বসে পুতুল খেলতাম গ্রীলের ফাঁক দিয়ে আকাশটা ঠিক তেমনি দেখাতো.... মন খারাপ হওয়ার জন্যে ঐটুকুনই যথেষ্ট ছিলো সেই সময় কিন্তু কি অদ্ভুত মন খারাপ হলো না তো।
বরং হাটতে হাটতে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় এমন কতগুলো রং দেখলাম যাতে করে বহু বছর আগে ভুলে যাওয়া জল রং এর ক্যনভাসটাকে ফিরিয়ে আনতে ইচ্ছে হচ্ছিল।
একটা গাছ দেখে দাড়িয়ে গেলাম। কেন জানিনা হয়ত ঘুমের চোখে বেশিই স্বপ্নালু ছিলো সবকিছু। দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি ভাবছিলাম এমন রং কি আসলেই ক্যনভাসে তোলা যায়!! কদিন আগেই বাড়ির কাছের একটা ষ্টেশনারী দোকানে গেলাম পেপার ক্লিপ কিনতে। বিশাল বড় দোকানে থরে থরে রং এর টিন সাজানো!!
আমি কখনো তেল রং এ কাজ করিনি কিন্তু সেদিনের দোকানে রং এর বাহার দেখে খুব ইচ্ছে করছিলো একবার চেষ্টা করে দেখতে। খুব কি কঠিন হবে?? কে জানে.......
নাহ্ গাছটাকে আমি এক টুকরো কাগজে তুলতেই চাই সত্যি!!
ভাবতে ভাবতে আমি হাটছিলাম আর ছবি তুলছিলাম..... কেন জানিনা এই রাস্তাটা আমার খুব পছন্দের। মেইন রোড থেকে ভেতরে বলেই একদম চুপচাপ শান্ত একটা রাস্তা... শেষ হয়েছে ঠিক আমার বাড়ির দারগোড়ায় এসে।
এটা একটা গ্রেভিয়ার্ড। অগোছালো একটা গ্রেভিয়ার্ড বলা যায় এটাকে। বহুবার রাত করে বাড়ি ফেরার সময় এই গ্রেভিয়ার্ডকে পাশ কাটিয়েছি আমি। প্রতিবারই যায়গাটাকে কেমন যেন বিষন্ন অন্ধকারের কুপ মনে হয়েছে অথচ কাল যখন এই গাছটা দেখলাম মনে হচ্ছিল শুধু মাত্র গাছের হোলদে মায়া জাগানিয়া রং এ চারদিক কেমন ঝলমল করছিলো.......।
আচ্ছা ছবিতে কি রং এর মায়াটা বোঝা যাচ্ছে?? কেন যেন আমার মনে হচ্ছে অপরিপক্ক হাতে তোলা ছবিতে আমি রং এর ইমাজীনারি ইমোশনটা ধরতে পারিনি। লেখা পড়েই হয়তবা আশ্চর্য সুন্দর কোন রং এর কথা মনে হচ্ছিল ছবিটা দেখে যেটা একদমই মুছে গেছে!! কিংবা হয়তবা তাও না......
বড় গাছটির নিচে তবে জুড়াইব এক তিল
পায়ের নুপুর বাজিয়া উঠিলে,,
পানকৌরি ঘাড় উচিয়া চাহিতে করিবে না ভুল
আমি আনমনে হেসে পায়ের নুপুর শাপলারে দেব পড়ায়ে....
আমি যখন খুব দ্রুত পা চালচ্ছিলাম বুশি পার্কের ভেতর দিয়ে তখন হঠাৎ কি মনে করেই মোবাইলটা বের করে যায়গাটা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাড়ি এসে যখন ছবিটা পিসিতে দেখলাম মনে হয়েছিল আমি ছবির ঐ ক্ষণটায় একটা সারা দুপুর কাটাতে চাই। বাতাসের ঝিরঝির কাঁপন কিংবা গাছের পাতাদের মৃদু গুঞ্জন শুনতে পেলাম যেন ছবির থেকেই... আরে ধুর ধুর তাই কি হয় কখনো!!
কিন্তু আমি পেলাম যে??
ও তার আগে একটা ধন্যবাদ দিয়ে নি। স্বপ্নজয়ী ভাইকে। একটু আগেই ব্লগে ছবি দেয়া নিয়ে আমার সারাদিনের আরামদায়ক আলসেমীর বারো প্রায় বাজি বাজি করছিলো। স্বপ্ন ভাই সাহায্য করায় এবারের মত বাজল না আর কি...। ধন্যবাদ আপনাকে।
রাত নামল বলে।
বাহ্ যখন লিখতে শুরু করেছিলাম তখন তো বিকেল ও গড়ায়নি আর এখন রাত নেমে গেল তবু আমার অর্থহীন প্রলাপ থামল না। বাহ্ বেশ তো!!
এখন তবে বলা উচিত আজ একটা রবিবার ছিল যেটা এখন যাই যাই করছে। এক বাটি পাস্তা....সাড়ে সাত পাতা নিঃসঙ্গতার একশ বছর আর এক প্রস্থ অর্থহীন প্রলাপ নিয়ে একটা রবিবার। খুব কি বাজে গেল??
নাহ্ এই বা খারাপ কি......
বজরায় যায় রাজকন্যা......
ভাবছি আহা কি সুখ,,,,,
রাজকন্যা হেসে বলে সুখই তো
রাজার নির্দেশ আর আমার বনবাস....।।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০০৯ ভোর ৬:১৪