আসিফের মন-মেজাজ এ মূহুর্তে বেশ খারাপ। বিবাহের আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে মিসেস আসিফের সাথে তার খানিকটা মন-মালিন্য হয়ে গেছে। এর দায় আপাত দৃষ্টিতে মিস্টার আসিফের। যারাই তাদের সদ্য সাবেক ভাব-ভালবাসার জীবনের সাথে পরিচিত তারা এক বাক্যে বলবেন , হ্যাঁ। দোষটা আসিফেরই। এতদিন আশা দিয়ে এখন না করল কিভাবে ?
সত্যিই। কাউকে আশা দেবার পর তাকে পরবর্তীতে না করাটা ছোটলোকের আচরন। মিসেস আসিফ ইতিমধ্যেই তার বরকে ছোটলোক বলে আখ্যায়িত করেছে। আসিফের সাড়ে সাত বছরের প্রেমের টক-ঝাল-মিষ্টি জীবনে এ কথাটা অজ¯্রবার শুনতে হয়েছে। সে সময় ছোটলোক কথাটা তার গন্ডারের চামড়ায় কখনও আঁচড় কাটতে পারে নাই। প্রেমিকের গায়ের চামড়াটা বোধ করি গন্ডারের মত। ভূমিকাটা যখন প্রেমিক থেকে স্বামীতে রূপ নেয় তখন ওটা হয়ে আসে কুমিরের মত। কুমিরের চামড়া যেমন শরীর থেকে বহু দূরের হালকা স্পদনও অনুভব করতে পারে, তেমনি স্বামীরাও স্ত্রীর কথার তেজ যেন অনেকদূর থেকেও কল্পনা করে নিতে জানে। যেমনটা আসিফের হয়েছে। অথচ বিবাহ হয়েছে সবে মোটে আটচল্লিশ ঘন্টা। এই আটচল্লিশ ঘন্টায় শাম্মী ওকে একবারই বলেছে ছোটলোক । কথাটা যেন চামড়া ফুটো করে চলে গেছে সোজা বক্ষ্রতালুতে। যে সব স্বভাব-চরিত্র আসিফ প্রেমিক হিসেবে এতদিন নিজের অজান্তেই লুকিয়ে রেখেছিল ওগুলো যেন এক লহমায় শাম্মীকে আঘাত করতে চায়। ও বলা হয়নি। মিসেস আসিফের ডাকনাম শাম্মী। ভাল নাম শারমীন জাহান। মিস্টার আসিফের ভাল আসিফ আহমেদ।
অথচ যে ঘটনা থেকে এত কিছুর সূত্রপাত সেটা তেমন কোন বিষয় নয়। ঠিক ঘটনাও না । একটা কথা। একটা প্রতিশ্রুতি। প্রতিশ্রুতিটার বয়স মোটামুটি সাত বছরের মত। এদের ভালবাসার আনুষ্ঠানিক জীবনটাকে হিসেব করলে প্রতিশ্রুতিটা প্রথম যুগের। আসিফ কি প্রতিশ্রুতিটা ভুলে গেছে?
না। আসিফ ভুলে যায়নি। তার স্মরনশক্তি ফটোগ্রাফিক না হলেও বেশ ভাল । ঝরঝরে। কখন, কবে, কোথায় কি হয়েছে তা সে স্পষ্ট মনে করতে পারে। চাইকি তার হুবহু বর্ননাও সে দিতে পারবে। কিন্তু ঠিক এ মূহুর্তে বনর্না করার মত মানসিক অবস্থায় সে নাই। না। সে এ মূহুর্তে রাগে গজগজ করছে না। গত আটচল্লিশ ঘন্টায় শাম্মীর জীবনে তার এবং তার জীবনে শাম্মীর অবস্থানের রূপান্তর হয়েছে। রূপান্তরের প্রাথমিক ধাক্কাটা হঠাৎ করেই তাকে নিশ্চুপ অবস্থানে বসিয়ে দিয়েছে।
আসিফ কিছুক্ষন নিশ্চুপ অবস্থানে থাকুক। এ ফাঁকে আসিফের অন্যান্য অবস্থার দিকে একটু নজর দেয়া যাক। আসিফের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স। পেশায় চাকুরিজীবী। চাকুরিটা সরকারী। ছাত্রজীবনে সব কিছুতেই যেমন তার প্রথম শ্রেনী তেমনি চাকুরিতেও ওটা প্রথম শ্রেনীর। যে বেতন পায় তাতে একজন মানুষের মেসজীবন দিব্যি কেটে গেলেও বিবাহিত জীবন কাটানো বড্ড মুশকিলের। তবে মুশকিল হলেও বাঙ্গালী মুসলমান মধ্যবিত্তের দাম্পত্য জীবন তো থেমে থাকেনি। আসিফেরও থামবে না। মানুষ হিসেবে সে নিজেই নিজের বিচারক । একটা মেয়ের সাথে সাড়ে সাত বছরের সর্ম্পকে উপেক্ষা করার মত অপরাধী মন তার নাই। তাই নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে গত আটচল্লিশ ঘন্টা আগে বিবাহ করেছে। পাত্র হিসেবে আসিফের আয় ছাড়া আর অন্য কোন কিছুই ফেলনা নয়। সাড়ে সাত বছর আগে থেকেই আসিফ শাম্মীদের পরিবারের কাছে পরিচিত। সামনা-সামনি দু’বাসায় ভাড়া থাকত তখন তারা। সেই পরিচয়। সময়ে এক সময় দু’পরিবার চলে যায় শহরের দু’প্রান্তে। এক সময় ভিন শহরে। নিজেদের অজান্তেই থেকে যায় একটা সুতো। পরিনয়ের সুতো।
সুতোটা ঠিক কখন ডালপালা মেলতে শুরু করে? এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া সহজ না। আসিফের ভাষায়, ও যখন খালি আমার সাথে তর্ক করতে আসত তখন থেকে। শাম্মীর ভাষায় , ছাতার নিচ থেকে। আসিফের বর্ননাটা দেয়া এখন সম্ভব না। ওর জন্য উপন্যাস লাগবে। এ স্বল্প জায়গায় সে তুলনায় শাম্মীর বর্ননটা দেয়া সহজ।
সেবার পহেলা বৈশাখের দিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল। আমরা সব ভিজে একাকার। ভার্সিটি লাইফের প্রথম শুভ নববর্ষ। প্রথম শাড়ি পড়ব। ঠিক মত পড়তে জানতাম না । অনেকগুলো সেফটি পিন দিয়ে শাড়িকে কোন রকমে লাগিয়ে রাখতেই অবস্থা কাহিল। এর ভেতরই হলের ভেতর সেফটি পিনের আকাল দেখা দিল। শহরটা আমার পরিচিত হলেও আত্মীয়-পরিজন কেউ এখন আর এখানে নাই। পরিচিতর ভেতর ওই আসিফ। তাও তার সাথে কথা হলে দু’বার করে ফোনে ঝগড়া হয়। তখন তো আর এত মোবাইল ছিল না। হলের টিএন্ডটিই ভরসা। অনেকক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে ওকে ফোন দেই। এক বাক্স সেফটি পিন নিয়ে আসিস। সে আসবে না। আসবেই না। কেন। কি দরকার। হাজার প্রশ্ন। অবশেষে কবুল করলাম শাড়ি পড়তে পারি না। ওটা আটকাবার জন্যই এ ব্যবস্থা। শুনে তার সে যে কি হাসি। এর আগে অনেকবারই আমাকে শাড়ি নিয়ে খোঁচা দিয়েছে। বলত , রাঁধতে পারিস? শাড়ি পড়তে পারিস? কাপড়ের বোতাম লাগাতে পারিস? আমিও রেগে-মেগে উত্তর দিতাম। উত্তর থেকে প্রতি উত্তরে কেউ কাউকে ছাড়তাম না। পরাজিত হতাম না। আমার স্বেচ্ছা পরাজয়ে আসিফ রাজী হয়। একবাক্স পিন নিয়ে সকাল বেলা হাজির। গায়ে লাল পাঞ্জাবী। চোখে চশমা। হাতে ছাতা। আকাশ সবে মেঘলা। বৃষ্টি তখনও পড়া শুরু হয়নি। এমন আবহাওয়ায় ছাতা নিয়ে ঘোরাঘুরিতে প্রথমে এ চোট হেসে নিলাম। তাড়া থাকায় তেমন খুনসুটি করা গেল না। সিফটি পিনের নিরাপত্তা নিয়ে শাড়ি পড়ে নিচে নেমে সবে ঘোরাঘুরি শুরু করেছি এমন সময় হুড়মুড় করে সে কি বৃষ্টি! যে যেদিকে পারে ছুট। আসিফের ছাতার নিচে কোন রকমে আটর্স ফ্যাকাল্টির তলায় গিয়ে ঢুকেছি। একটু পর আমার দিকে তাকিয়ে আসিফ গম্ভীর। কি ব্যাপার? ব্যাপার কিছু না । দৌড়াদৌড়ির ভেতর সেফটি পিনের নিরাপত্তা ভেঙ্গে পড়েছে। আমার হাতে ওর ছাতাটা ধরিয়ে দিলে বলে, চুপ করে বসে থাক। আমি একটা রিকশা যোগাড় করছি। ওই বৃষ্টির ভেতর বহু খোঁজাখুঁজি রিকশা যোগাড় করে আমাকে হলে পাঠাল। ওর লাল পাঞ্জাবীর রং গলে ওকে তখন লাগছিল রক্তজবার মত। সেই রক্তজবাটাকে মনে ধরে আমার। সেই আমার শুরু।
প্রেমের শুরুর ঘটনা হিসেবে এটা তেমন কোন যুতসই হল না। তবে কিছু করারও নাই। এটাই শাম্মীর কাহিনী। এ কাহিনীর আনুষ্ঠানিকতার রূপয়ান হয় কাঁঠাল তলায়। শাম্মীর হলের অদূরেই বড় মাঠ। সে মাঠের এক কোনার কাঁঠাল তলায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভাব-ভালবাসা প্রকাশিত হয়। সে প্রকাশের পর থেকে গুনে গুনে সাড়ে সাত বছর পর বিবাহ। কাঁঠাল তলাতেই প্রথম শাম্মীর হাত ধরে আসিফ। এর আগে অজ¯্রবার এ ওর পিঠে কিল বসিয়েছে। কান টেনে দিয়েছে। চাই কি হালকা মারামারিও করেছে। কিন্তু সেদিনের হাত ধরাটা ছিল অন্য রকম। শাম্মীর হাতটাকে আসিফের মনে হয়েছিল নরম তুলোর মত। তার হাতের মুঠোর ভেতর সে নরম হাতটা যেন হালকা তাপ ছড়ায়। ফুঁ দিয়ে শাম্মীর বসার জায়গার ধুলো উড়াবার ব্যাপারটাও শুরু সে কাঁঠাল তলা থেকে। আরো অনেক প্রথমের মতই বিবাহের পর হানিমুনে নেপাল যাবার প্রতিশ্রুতিটাও প্রথম উচ্চারিত হয় কাঁঠাল তলায়। এতে অবশ্য শাম্মীর কোন কসুর নাই । আসিফই আগ বাড়িয়ে নেপালের কথা বলেছে। বড় বড় পাহাড়ের চূড়োর ভেতর, আকাশের কাছাকাছিতে তারা তাদের স্বপ্ন শুরু হবে। ভারতটুকু পেরিয়ে একটা ট্যাক্সি ভাড়া করা হবে। সে ট্যাক্সিতে উঁচু-নিচু পথে কাঠমুন্ডু। এমনি কত স্বপ্ন।
নেপালের সেই নিজের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিটাই আটচল্লিশ ঘন্টার মাথায় ভঙ্গ করে বসেছে আসিফ। বিবাহের ঝক্কিটা সবে মাত্র কাটিয়েছে ওরা। হানিমুনে কই যাবে তা নিয়ে শাম্মী সবে মুখ খুলেছে । ওর কথা শেষ হবার আগেই আসিফ মাথা নিচু করে বলে, আগে আমি একটা কথা বলি?
কি?
নেপালটা বাদ দিলে হয় না? দেশে কোথাও . . .
শাম্মীর কথাটা শেষ হলে ভাল হত। কারন নেপালের বিষয়টা ওর মাথাতে ঠিক তখন ছিল না। আসিফই বরং ওকে মনে করিয়ে দিল। নেপাল যাবার কোন ইচ্ছা শাম্মীর কোন কালেই ছিল না। পাহাড়ীর রাস্তা দেখলেই তার মাথা ঘুরে। তবুও আসিফকে রাগানোর জন্যই মনে হয় সে উচ্চারন করে, না। আমি নেপালই যাব। তুমি কথা দিয়েছিলে। বিয়ের আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যেই নিজের কথার খেলাপ শুরু করলা ? বাকী জীবন আরও কি কি যে দেখাবে তা বুঝতে কষ্ট হয় না।
এ কথা, সে কথায় কথা বাড়ে। হাসি-ঠাট্টার খোঁচাখুঁচি এক সময় সিরিয়াস হয়ে উঠে। মিস্টার আসিফের নরম সুর কঠিন হয়। না । নেপাল যাওয়া যাবে না। দেশে কোথাও হলে বল। নয়ত হানিমুন ভুলে যাও।
ছোটলোক কোথাকার।
ব্যস। মাথার তালু জ্বলতে শুরু করে আসিফের। একটা কিল বসিয়ে দিতে ইচ্ছা হয় তার। কিন্তু এ তো আর তার সেই টুনটুনি পাখি না যে ইচ্ছা হলেই কিল বসিয়ে দেয়া যাবে। এ এখন তার বউ। ধর্ম মতে, সমাজ স্বীকৃত বউ। এখন কেশাগ্র বল প্রয়োগ তাকে সামাজিকভাবে বউ পেটানো জামাই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করবে।
শাম্মী রাগ করে ও পাশ ফিরে শুয়ে আছে। মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘরের বাতি নেভানো। মিস্টার আসিফ বিছানা ছেড়ে বাইরের বারান্দায় বসে আছেন। পায়ের উপরে বসানো ল্যাপটপের উজ্জ্বল আলো তার চোখে- মুখে। না। তিনি ফেসবুক চালাচ্ছেন না। ক্যালকুলেটরে তিনি হিসেব করছেন। যে টাকা বেতন পান তা থেকে প্রথমে সাড়ে তিন হাজার টাকা বাদ দিলেন। এটা তার লোনের টাকা। বিবাহ করার জন্য যে ঋন তিনি করেছেন ইহা তার কিস্তি। তারপর কাটলেন দু’হাজার। ইহা তার জিপিএফের কিস্তি। ব্যাপারটা বাধ্যতামূলক। আরও কিছু হিসেব হয়। যেমন ধরুন তিন হাজার। এটা তার হাত খরচ। শাম্মীর পেশা আপাতত গৃহিনী। পেশা পরিবর্তন করার আগ পর্যন্ত তাহার হাত খরচ । এমনি নানা হিসেব। বহু হিসেবে একসময় নেপালটা হয়ে আসে তাদের।
মিস্টার আসিফ এ মূহুর্তে ক্যালকুলেটর বন্ধ করে ইন্টারনেটের পাতায় ঘুরছেন। ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস কোম্পানী। নেপালী-বাংলাদেশী একের পর এক পাতা বন্ধ হয়। খোলে। নিজেরা একা একাই যাওয়া যায়। কিন্তু কিছু যে তার চেনা নাই। যদি কোন বিপদে পড়ে তারা তবে কে দেখবে? তাই গাইড ট্যুরের পাতায় ঘোরাঘুরি। এ ঘোরাঘুরিতে এক কোনায় চোখ আটকে যায়। মাওবাদীদের হামলায় দুজন ট্যুরিষ্ট সহ আট জন নিহত। নিত্য এমন কত খবরই তো চোখে আসে। টিভির পর্দায় এগুলো দেখে চোখ সয়ে গেছে। ওতদূরের ওসব মানুষের আহত-নিহতের খবর কে দেখে? কিন্তু আজ খবরটা মন দিয়ে দেখে সে। প্রেমিকার নিরাপত্তাটুকু সব সময় না ভাবলেও চলে। কিন্তু বউয়ের?
ল্যাপটপের পর্দা থেকে চোখ দুটো বাইরে যায় তার। ঢাকার আকাশ রাতের আঁধারে লালচে আভা ছড়িয়েছে। বড় বড় ভবনের ফাঁক দিয়ে দেখা সে আকাশে তারাগুলো বড্ড অস্পষ্ট। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তার। কপোত-কপোতীর হানিমুন কল্পনার সাথে আর জামাই-বউয়ের হানিমুন বাস্তবতার কত তফাৎ!
হঠাৎ কে জানি এসে আসিফের কাঁধে হাত রাখে। প্রথমটায় একটু কেঁপে উঠে সে। মুখ ঘুরিয়ে দেখে মিসেস আসিফ তার দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষন ধরেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে মিসেস তার মিস্টারকে খেয়াল করছিল। ল্যাপটপের পর্দায় চোখ রাখছিল। কাঁধে হাত রেখে সে বলে, বসে বসে বুড়ো মানুষের মত দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হবে না। চল দেখি আমার সাথে।
কই যাব?
মিসেস আসিফের মুখটা কি একটু লাল হয়? ঠিক বলা যাবে না। ঢাকার ধূলোমাখা আকাশের লাল স্পর্শ সদ্য বিবাহিত একজন মিসেসের মুখে লাল আভা ছড়ানো জন্য যথেষ্ট নয়। লালের রহস্যটা বোঝার জন্য খেয়াল করতে হবে পরবর্তী মন্তব্যগুলো।
কই আর? ঘরের ভেতর।
ভেতরে গিয়ে কি করব? এখানেই ভাল লাগছে । তুমি যাও। শুয়ে পড়।
হুম। নেপালের সাথে সাথে হানিমুনটাও কি বাদ দিয়ে দিলা?
আসিফ কিছু বলতে পারে না। ব্যাপারটা তার কাছে অপ্রত্যাশিত। শাম্মী গাল ফুলালে তা মোটামুটি লম্বা সময় ধরে চলে। তার মান ভাঙ্গাতে হয়। ওটা নিজে নিজে ভাঙ্গে না। ও কি তাহলোর মতই আটচল্লিশ ঘন্টায় পাল্টে যেতে শুরু করল ? আসিফের কানগুলো হঠাৎই গরম হয়ে আসে।
ল্যাপটপের ডালাটা বন্ধ করে মিস্টারের হাত ধরে ঘরের ভেতর নিয়ে যায় মিসেস। দূর থেকে খেয়াল করলে দেখা যাবে তাদের অন্ধকার ঘরে হালকা অস্পষ্ট নীল আলো জ্বলে উঠেছে। হিমালয়ের পর্বতমালার চূড়োর লাল আলোটুকু এ যাত্রায় তাদের সঙ্গী না হলেও ঢাকার আকাশের রাতের লাল আভার সঙ্গটুকু উপেক্ষা করার মত নয় কিন্তু।
বাইরে বাতাস তেমন একটা না থাকলেও ঘরের ভেতর এখন বাতাস বইছে। বড় উথাল-পাতাল সে হাওয়া।