উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে প্রাপ্ত মানচিত্রে লাল বর্ণের দেশগুলোতে গতবছর পর্যন্ত ব্লক কার্যকর ছিল ।
বাংলাদেশে ইউটিউব সহ কিছু সাইট ব্লক করা হয়েছে । গত পোস্টে আশা করেছিলাম সরকার এই ব্লক গুলো তুলে নিয়ে জনগণের ইন্টারনেটের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখবে কিন্তু এই পোস্টটি লেখা পর্যন্ত সাইটগুলোতে ঢোকা যাচ্ছিল না।
আগের পোস্ট দেখুন
ইউটিউবের মাধ্যমে জনগণ নিজস্ব পছন্দের ভিডিও প্রচার করতে পারে বলে শাসকদের কাছে ইউটিউব খুব একটা পছন্দের সাইট নয়। চীন এবং কিছু ইসলামী দেশ দীর্ঘ সময় এর উপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখলেও অধিকাংশ দেশ এক সপ্তাহের চেয়ে কম সময়ের মধ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে । প্রতিটি দেশেই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই স্বাধীনতা হরণের প্রতিবাদ জানিয়েছে । দু:খজনক যে বাংলাদেশ সম্ভবত: ১৮ তম দেশ হিসেবে এই কালো তালিকায় নিজেদের নাম ঢুকিয়েছে ।এখানে যে সব দেশ ইতিপুর্বে ব্যান করেছে তাদের পরিচিতি নিচে দেয়া হল ।
১. ইরান
ইরানে "অফেনসিভ ম্যাটারিয়াল " সেন্সর করার আইন অনুযায়ী ইউটিউব নিষিদ্ধ । ইরানের সরকারী প্রজ্ঞাপন অনুয়ায়ী ইউটিউব একটি অনৈতিক সাইট । এই ঘটনার শুরু হয় ২০০৬ এর ডিসেম্বরে । ইরানে পপ সঙ্গীতে নিষিদ্ধ ছিল এবং ইউটিউবে দর্শকরা পপ সঙ্গীত দেখতে পেত।
২. মরক্কো
মে ২০০৭ এ মরক্কোর রাজা কে ব্যঙ্গ করে ভিডিও প্রচার করার অপরাধে এবং প্রো অয়েস্টার্ণ সাহারা ক্লিপ দেখানোর কারণে ইউটিউব বন্ধ ছিল ।
মরক্কোর সাইটে নিষিদ্ধকরার প্রতিবাদে প্রচারিত ব্যাজ।
সূত্র: Click This Link
৩. থাইল্যান্ড
২০০৬ এ কুড়িটির মত অফেসিভ ভিডিওর জন্য একে ব্যান করে । পরে গুগল একে তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ করে । মার্চের ৮ তারিখ থাই প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রীর সিএনএনের একটি ভাষনকে কেন্দ্র করে আবারও ব্যান করা হয় যদিও তখন থাই সরকার কোন কারণ জানায় নি । পরবর্তীতে থাই রাজাকে নিয়ে ভিডিও ক্লিপ আপলোড করার অপরাধে ৩ এপ্রিল ২০০৭ থেকে ৫ মাসের জন্য ইউটিউব ব্যান থাকে ।
৪. তুরস্ক
তুরস্কের জনক কামাল আতাতুর্ক কে ব্যঙ্গ করে ভিডিও হোস্টিংএর কারণে তুরস্কের কোর্ট ইউটিউব ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেয় ।এটি ঘটে ৬ মার্চ ২০০৭ এ ।
৫. ইরাক
ইরাকের সাইবার ক্যাফে তে ইউটিউব দেখতে পাবেন কোন সমস্যা ছাড়া কিন্তু মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য ইউটিউব, মাইস্পেস সহ সোশ্যাল সাইট নিষিদ্ধ ।
৬. ব্রাজিল
২০০৭ এর ৬ জানুয়ারী ব্রাজিলে কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউটিউব বন্ধ হয় । ব্রাজিলিয়ান সুপার মডেল ড্যানিয়েল সিকারেলির যৌনজীবন নিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ সম্প্রচারের কারণে কোর্ট এই সিদ্ধান্ত দেয় ।
পরবর্তীতে কোর্ট জানতে পারে এই ক্লিপটি শুধু ইউটিউব নয় খ্যাত অখ্যাত নানান সাইটে ছড়িয়ে পড়েছে যা ঠেকানো সম্ভব নয় । পরে ২০০৭ এ ৯ জানুয়ারীতে আদালতের নির্দেশে ব্যান প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
৭. অস্ট্রেলিয়া
অষ্ট্রেলিয়ায় ইউটিউব নিষিদ্ধ নয় কিন্তু ভিক্টোরিয়া প্রদেশের স্কুলে ইউটিউব সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ । ১৬০০ টির মত স্কুল এর আওতায় পড়ে ।
৮. চীন
২০০৭ এর ১৫ অক্টোবর সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউটিউবকে চীনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
সূত্র: Click This Link
৯. ভারত
ভারত সরকারও ইউটিউব ব্যান করেছিল মহাত্মা গান্ধীকে ব্যাঙ্গ করে ক্লিপ প্রচার করার জন্য ।পরবর্তীতে এটি তুলে নেয়া হয় ।
সূত্র: Click This Link
১০. সিরিয়া
২০০৭ এর আগস্টে সিরিয়ার ফার্স্ট লেডির একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে ইউটিউব ব্যান করে দেয়া হয়। এতে দেখা যায় ফার্স্টলেডি এক বিদায় অনুষ্ঠানে হাত নাড়ার সময় তার পোষাক এলোমেলো হয়ে যায় ।
১১ ইন্দোনেশিয়া
২০০৮ সালের ১ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার তথ্য মন্ত্রী মু: নূহ ইউটিউবকে ডাচ ছবি ফিতনা ছবি মুছে ফেলার অনুরোধ করেন । দুদুন সময় বেঁধে দেয়ার পরও ইউটিউব এটি সরানোর ব্যবস্হা না নেওয়ায় ৪ এপ্রিল তথ্য মন্ত্রীর নির্দেশে সমস্ত আইএসপিতে ইউটিউব ব্লক করে দেয়া হয় । ১০ এপ্রিল এই ব্যান তুলে নেয়া হয় ।
১২. পাকিস্তান
পাক টেলিকম অথরিটি র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০৭ এর ২২ ফেব্রুয়ারীতে অনৈসলামিক আপত্তিকর ভিডিও হোস্ট করার জন্য ইউটিউব নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয় । বিতর্কিত ডাচ চলচ্চিত্র ফিতনা নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার মত পাকিস্তানে ইউটিউবকে দায়ী করেছিল । Click This Link । এই নিষেধাজ্ঞা চলেছিল ৪ দিন ।
১৩. তিউনিসিয়া
নভেম্বর ২, ২০০৭ এ তিউনিসিয়া সরকার ইউটিউব সাইট ব্লক করে । সেখানে ৪০৪ এরর মেসেজ দেখানো হয় ।এর ব্যাপারে পরে আর কিছু জানা যায় নি ।
১৪. ইউ এ ই
এই দেশের টেলিকম রেগুলেটরী অথরিটি ইতিসালাত আইএসপির মাধ্যমে ইউটিউবের কন্টেন্ট কে ধর্মীয়, সামাজিক এবং নৈতিকতা বিরোধী সাইট বলে ব্যাখ্যা দিয়ে ব্যান করে । জানুয়ারী ২০০৯ এ এই ব্যান তুলে নেয়া হয় ।
১৬. সুদান
২ আগস্ট ২০০৮ এ সুদানে ইউটিউব নিষিদ্ধ করা হয় । যদিও সরাসরি কোন কারণ দেখানো হয়নি । কিন্তু ধরে নেয়া হয় এর মাধ্যমে কিছু কিছু দলের পলিটিক্যাল প্রচারণ বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
সূত্র: Click This Link
১৭. কুয়েত
কুয়েতে ইউটিউব নিষিদ্ধ হয় স্বল্প সময়ের জন্য । শুরু হয় ২০০৮ এর সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ এবং পরদিন এই ব্যান তুলে নেয়া হয় ।
সূত্র: Click This Link
>ইটালি, ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারীর ১১ তারিখে খবরে প্রকাশ পেয়েছে ইটালি তার ইন্টারনেটে নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে ইউটিউব ব্যান করতে যাচ্ছে ।
সূত্র: Click This Link
কোন দেশ বাদ পড়ে গেলে মন্তব্যে জানাবেন । তথ্যগুলো কোথা্ও ব্যবহার করলে ব্লগ লিঙ্কটি উল্লেখ করলে কৃতজ্ঞ থাকবো ।
অন্যান্য তথ্যসূত্র :
Click This Link
http://mashable.com/2007/05/30/youtube-bans/
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০০৯ ভোর ৬:৪৪