১৯৯২ সালে বাংলাদেশে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। আয়োজন চুড়ান্ত। বিদেশী মেহমানরা আসা শুরু করেছেন, কেউ কেউ এসেছেনও। ভারতে হঠাৎ করেই বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা নিয়ে দাঙ্গা শুরু হলো। আমাদের দেশের এক নেত্রী নেচে উঠলেন, এই তো সুযোগ, যে করেই হোক সম্মেলন পন্ড করতেই হবে। বিশ্বস্থ এক আজ্ঞাবহকে ২৯ নম্বর মিন্টো রোডে বিরোধি দলীয় নেত্রীর বাড়ীর বাবুর্চি বিরেণ এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ভবনের লাইব্রেরী রুমে ডাকিয়ে এনে নির্দেশ দিলেন, দেশে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লাগাতে। উক্ত আজ্ঞাবহ প্রশ্ন করলেন ‘এটা ঠিক হবে না’। নেত্রীর কড়া জবাব ‘ঠিক বেঠিক তোমাকে ভাবতে হবে না, দাঙ্গা লাগাতে বলছি, তুমি দাঙ্গা লাগাও।’
আজ্ঞাবহ তার পরেও মানতে প্রস্তুত নন। নেত্রী এবার ক্ষেপে গেলেন, ‘আমি না তোমার নেত্রী? আমাকে যদি নেত্রী মানো, তা হলে আমি যা বলছি তাই করো। রায়ট লাগাও।’
আজ্ঞাবহের পাল্টা যুক্তি; হিন্দুরা তো আমাদের রিজার্ভ ভোটার। দাঙ্গা লাগালে ওরা ভারতে যাবে, ওপার থেকে আসবে সব মুসলমানরা, যারা হবে বি এন পি’র ভোটার।
নেত্রী স্বরোষ বলে উঠলেন; ‘আরে রাখ, ওরা যাবে কোথায়? যাবার যায়গা নেই। আর তা ছাড়া দেখছ না, সার্ক সম্মেলন হচ্ছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও আসছেন, এই সম্মেলন বন্ধ করতেই হবে। তা ছাড়া জাহানারা ইমাম আমার নেত্রীত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে, দেশের সমস্ত হিন্দুরা এখন তার পেছনে জমা হয়েছে, তাকেও তো সাইজ করতে হবে! তুমি রায়ট লাগাও। এক ঢিলে দুই পাখি মারব।’
এর পরে স্বিদ্ধান্ত অনুযায়ি বিরোধি দলীয় নেত্রী এবং ৩২ নম্বরের টেলিফোন ব্যবহার না করে শেখ হাসিনার চাচাতো চাচা শেখ হাফিজুর রহমানের বাসার নম্বর থেকে ফোনে সারা দেশের অন্যান্য জেলায় নির্দেশ পৌছে দেয়া হয়, সন্ত্রাসীদের ডেকে এনে শেখ হাসিনার দেয়া পাঁচ লক্ষ টাকা বিতরণ করে ঐ রাতেই জগন্নাথ হলের পাশে শীব বাড়ী মন্দীর সহ ঢাকার শত শত মন্দীরে ভাংচূর করা হয়, হিন্দুদের বাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপরে হামলা করা হয়।
এ ভাবেই রায়ট লাগে! আর নেত্রীও বিবৃতি দেন! নরসীমা তার সফর স্থগিত করেন। সার্ক সম্মেলন পন্ড হয়। দেশনেত্রী, শান্তিকন্যার স্বপ্ন বাস্ববায়িত হয়।
সুত্র: মতিউর রহমান রেন্টু’র লেখা ‘আমার ফাঁািস চাই’ বই এর ১১৫ থেকে ১১৭ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।
আজ বিরোধি দলে থেকেও বি এন পি বা জামাত কেউই এরকম ঘৃন্য রাজনৈতিক চাল চালেনি বলেই দেশের হিন্দুজনগোষ্ঠি নির্বিঘেœ তাদের পুজা করতে পারলেন। তাদেরকে শারদীয় শুভেচ্ছার পাশাপাশি বিরোধি দলকেও ধন্যবাদ ঘৃন্য রাজনীতি না করার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০২