একটি ফড়িং আমাকে খুব ভালবাসে। সব সময় আমার সাথেই সে থাকে, তার কষ্টের কথা বলে। আমি ও অনেক সময় তাকে মিথ্যা কথা বলেও ভাল রাখার চেষ্টা করছি। সে আমার বাড়িতে এসে একটা গোলাপ ফুলের বাগান করল, আর তাতে অনেক লাল গোলাপ ফুটল।
হঠাৎ করে সে একদিন আমাকে তার জীবন সঙ্গীনি করে চেয়ে বসে। ফড়িংটি অনেক সময় আবছা ভাবে একটা মেয়ের রূপ নিচ্ছিল। কিন্তু সমাজের ভয়ে আমি তাকে ফিরিয়ে দিলাম। কিন্তু সে আমাকে তার ভালবাসা দিয়ে বেধে রাখল।
একদিন ফড়িংটি কে নিয়ে এক গভীর জঙ্গলে গেলাম, সে বিশ্বাস করে আমার সাথেই গেল। তারপর আমি তার পাখা কেটে দিলাম। সে বাচার জন্য ছটফট করতে লাগল। কিন্তু আমি তাকে ছাড়লাম না। পা দিয়ে মারতে লাগলাম। সে বারবার আমার পা ধরে বলতে লাগল, আমাকে মেরো না, আমি বাচতে চাই। কিন্তু আমি যেন হিংস্র হয়ে গেছি। তাকে পায়ের নিচে ফেলে মারতে লাগলাম। যখন সে দেখল সত্যিই আমি তাকে মেরে ফেলছি, তখন সে আমাকে বলল, আমাকে যখন মারবেই তখন শেষ বারের মত আমাকে আমার মায়ের সাথে একটু কথা বলতে দাও। মৃত্যর আগে তাকে খুব মনে পড়ছে। কিন্ত আমি এতটাই পাষান হয়ে গেলাম যে তার এই শেষ আবদার টুকু ও রাখালাম না। একবার মনে হল তাকে ছেড়ে দেই, কিন্তু ভাবলাম সে যদি সবাই কে বলে দেয়। এবার পা দিয়ে তাকে মেরে ফেলে পকেটে রেখে দুরে নিয়ে গেলাম ফেলে দেয়ার জন্য।
কিছু দুর গিয়ে দেখলাম সে এখনও মরে নি, মুখটা নড়ছে, কি যেন বলতে চাচ্ছে আমাকে। আমি তার মুখের কাছে কান লাগালাম। সে বলল, জান আমি এখনও তোমাকে ভালবাসি, আমি সেদিন মিথ্যা বলেছিলাম, আসলে আমি তোমাকে বিয়ে নয় শুধু ভালবাসতে চেয়েছি। মরনে আমার কোন কষ্ট নেই, বরং ভাল লাগছে মরন কালে তোমার মুখটি দেখতে পেলাম।
হঠাৎ আমার ভুল ভাঙল, তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম। জীবনে সত্যিকারের একটা ভালবাসা কে আজ আমি হত্যা করলাম। বাড়িতে গিয়ে দেখলাম বাগানের ফুল গুলো ধুসর রঙের হয়ে গেছে। ফুলে হাত দিতে গেলাম কিন্তু কে যেন বলে উঠল, তুমি একটা প্রতারক, ভালবাসা ধরে রাখার কোন যোগ্যতাই তোমার নেই। এই ফুলে তুমি হাত দেবে না।