লিডাচিনালিওন। ছোট নাম লিডা । ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে যখন ক্লান্তশ্রান্ত এবং কিছুটা বিধ্বস্ত তখন সে তার নিজের ভেতরে ডুব দিল । হাতরে হাতরে খুঁজে পেল তার ভেতরের শক্তির জায়গা । প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই একটা দিক খুব সবল থাকে , সে তার সেই সবল দিকটা হাতরে পেয়ে শিহরিত হল খানিকটা । জগতের অধিকাংশ মানুষ সেটি বুঝতে পারে না তার শক্তির জায়গাটা কোথায় । কেবল কারা কিভাবে সফল , কতটা সফল সেসবের অনুকরণ করে । আর হাবি খায় ।
অনেক ভেবেচিন্তে সে তার ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ফাইনাল করে । তারপর লেগে পড়ে পড়ায় । সেই প্রাচীন কাল থেকে মানুষের স্টাইল , ধরণ , রুচি , আসন ইত্যাদির সচিত্র পদ্ধতি নেট ঘেঁটে ঘেঁটে বের করে । পৃথিবীর তাবৎ ধর্মগ্রন্থগুলো পড়ে , জানতে থাকে তাদের রুচিভিত্তিক পদ্ধতি । একটা ফিল্ম আর্কাইভ তৈরী করে লিডা । ফিল্ম দেখে মানুষ সহজে অনেক কিছুই শিখে যায় । আপনি একটা দেশের ভাষা শিখবেন ? সে দেশের ফিল্ম দেখুন । আপনি একটা দেশের আচার - ব্যবহার , সভ্যতা ভব্যতা জানবেন ? সে দেশের মুভি দেখুন ? আরব দেশ থেকে , মিশর থেকে তাগলিগে মাঝে মাঝে একদল লোক আল্লার রাস্তায় সময় দিতে আসে , চিল্লা দিতে আসে । ভারতবর্ষে আসলে এরা হিন্দি বলে । এমন এক মিশরী যুবকের সাথে দেখা হয়েছিল । তার মিশনারী কাজে আমার কাছে কিছুদিন আসে । তার সাথে ইংরিজিতে ই সমস্ত বাৎচিত চলে । আমাকে অবাক করে দিয়ে মাঝে মাঝে সে হিন্দি আওড়াতো । মৃদু হাসি দিয়ে জানতে চাই হিন্দিটা সে কিভাবে শিখেছে ? ভদ্র লোক । আল্লার রাস্তায় বেরিয়ে তো আর মিথ্যে বলতে পারে না ! সে বলেছে হিন্দি সিনেমা দেখে শিখেছে । আর একবার সুদানী যুবক । আরেক বার আবুধাবির লোক । এরা সবাই বলেছে সিনেমা দেখে তারা হিন্দি ভাষাটা আয়ত্ব করেছে । মিডলইষ্টে হিন্দি সিনেমা হিট হলে পরে সেটা ইন্ডিয়ায় হিট হয় । আর হলিউডি সিনেমা জাপানে হিট হলে পরে সেটা পৃথিবীব্যপি হিট হয় । এমন একটা কথা বাজারে প্রচার আছে ।
যাইহোক লিডা যেহেতু ক্যামেরার সামনে কাজ করবে তাই সে কাজটা আয়ত্ব করতে সিনেমাটাকেই বেছে নেয় । বাস্তবযুদ্ধের সৈনিকরা যেখানে প্রয়োজনে সিনেমাকে শিক্ষনীয় মানে সেখানে লিডা কেনো বাদ যাবে ?
এদিক সেদিক খোঁজ খবর নিয়ে নতুন ক্যারিয়ার গড়ায় লেগে পড়ল । কাজ এগিয়ে নিতে লাগল দ্রুত গতিতে । প্রথম মুভিটা যখন বের হয় দর্শক সেটাতে কেমন সাড়া দেবে তা নিয়ে লিডার মনে ভয়ের অন্ত ছিল না । পরিচালক দৃশ্য শ্যুট করতে গিয়ে লিডাকে আনাড়ি বলে অনেক গালাগাল দিলেও সেরা কাজটা করিয়ে নিল দক্ষতার সাথে । লিডার সকল ভাবনা ছাপিয়ে সেই মুভি সারা বিশ্ব একেবারে কাঁপিয়ে দিল ।
টিনএজ , মধ্যবয়সী , নতুন পুরাতন প্রায় সকল দম্পতির একান্ত সময়গুলো লিডার মুভি ছাড়া যেন আর চলেই না , এমন একটা অবস্থা ।
বন্ধু বান্ধবদের ব্র্যাকেটবন্ধী গল্পের আড্ডায় আলোচনার বিষয় লিডা । উহ ! জোস ! দোস্ত জোস ! টিনএজ বালিকা যারা সদ্য তাদের গোপন অভিলাস শরীর ও মনে জাগিয়ে তুলছে , শ্রেণী কক্ষে শিক্ষকের বোর মডেল নিয়ে আলোচনা শেষ করে যেতেই তারা তাদের লিডামডেলের আলোচনা শুরু করে , চোখ , কান , ঠোঁট রক্তিম করে । আর একাকি দুয়েকজন হাবাগোবা ছেলে তাৎক্ষনিক তাদের সেই ক্ষণে এসে গেলে টিজিং করে করে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে ,,,
সেই থেকে শুরু । প্রথম মুভিটায় সাড়াজাগানোর পেছনে কারণ ছিল লিডার আনাড়িপনা । আনাড়িপনাতেই দর্শক আপ্লুত হয়েছিল । তারপর প্রায় বছর খানেক বিরতি । লিডার পরিচালকও সেটাই চাইছিলেন । দর্শক নিশ্চয় একই মাল বারবার খাবে না ! আবার লিডা যেহেতু প্রথমেই সবার মনে দাগ কেটেছে তাই তার পরবর্তী আকর্ষণের জন্য একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরী হবে ।
প্রতিক্ষা যত দীর্ঘ হয় আকাঙ্ক্ষা তত তীব্র হয় ।
পরিচালক দর্শক সাইকোলজি বুঝে সময় নিলেন আর সেই সময়ে লিডাকে গড়ে নিলেন ভিন্ন্ এক রূপে ।
এরই মধ্যে একবার এক জগদ্বিখ্যাত এক নীলম্যাগাজিনে লিডার সাক্ষাৎকার প্রকাশ পায় লিডা বলেছিলো মানুষের মনে দেহজ কাম-কেলি নিয়ে যে ধারণা বিরাজ করে লিডা তার ধরণ পাল্টে দেবে । লিডা এক ইশতেহার নিয়ে আসে কামরসিক পাঠকের সামনে । শরীর একটি কামকুণ্ড । তার প্রতিটি প্রত্যঙ্গের রয়েছে আলাদা আলাদা মজা লুটার চাহিদা , মানুষ অধিকাংশ- সেটা জানে না । এই চাহিদার আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে হলে প্রতিটি প্রত্যঙ্গের ডিজায়ার কে ফুলফিল কর । অনুধারণ কর তোমার শরীর তোমার কাছে কী চায় । কেনো তুমি অবিরত পুড়ছ , প্রতিনিয়ত ? প্রতিদিন ? একদিন কাম কর আর দশ দিন কর কাজ । শরীরের কামপ্রবৃত্তিকে পুড়াতে হবে ভাল করে । আর সেটা কামেই । একদিনেই তাকে এভাবে পুড়াও যেনো দশদিন শরীর না জাগে । কাজের সময় কামের প্রবেশাধিকার নেই । আবার কামের সময় কাজের ...
কামের জগতে লিডা যেনো নতুন দর্শন নিয়ে আসে ।
লিডার সেই ধরণ পাল্টে দেবার নেশায় মানুষ মাছের মত চোখ নিয়ে অপেক্ষা করে ।
দ্বিতীয় মুভিতে দর্শক লিডাকে একেবারে নতুন রূপে দেখে তার প্রথম মুভিতে যেখানে সে ছিল আনাড়ি , সেখানে দ্বিতীয়টাতে পুরোই উল্টো । একজন দক্ষ এবং আগ্রাসী লিডাকে পায় দর্শক । লিডা দর্শক সাইকোলজি ভাল করে রপ্ত করে । সে জেনে গেছে মানুষ তার কাছে কী চায় , কতটা চায় আর কিভাবে চায় । সেই চাহিদানুসারে সেও ডেলিবারি দিতে থাকে একের পর এক হট কেক । পর্দার পেছনে আর সামনের মানুষ বাহবা দিতে ভুলে না । তারা তাকে জানিয়ে দেয় বুঝিয়ে দেয় যেন লিডার জন্মই হয়েছে মানুষের ভাললাগানোর জন্য । দুহাতে টাকা আর টাকা । টপ ম্যাগাজিনগুলোর কাভারপেজে লিডার লাস্যময়ী ছবি স্থান পায় । লিডা যেন এক টর্নেডো প্রবল শক্তিতে সবাইকে ভাসিয়ে নেয় , সবা্ইকে ছাপিয়ে যায় । তার সফলতার পেছনে তার মেধা , দক্ষতা , প্রজ্ঞা , পরিশ্রম , ছলাকলা -চাতুরী সমান ভূমিকা রেখেছে ।
কথায় আছে ,
প্রেমের চেয়ে যদিনা কর ঢের ছেনালিপনা
হা হা ! খোদার কসম মাথার দিব্যি
আর যা-ই চাও সজনি
প্রেম দেব না !
লিডার নামে এক নতুন যুগের সূচনা হয় নীল জগতে । লিডাযুগ । চালু হয় সম্পূর্ণ এক নতুন স্টাইলের ......লিডা স্টাইল । লিডা মডেলের অনুকরণ করে রসিক রঞ্জনকারীরা নিজেদের রঞ্জিত করে ।
ব্যবসায় বাজার বলে কথা । সময় আর চাহিদা মোতাবেক ডেলিবারি ব্যবসায়ের জন্য অপরিহার্য । দুই হাতে টাকা গুণতে গুণতে আর নিজেকে ক্যামেরার সামনে উজার করে দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে লিডা । সেই ক্লান্তির ছাপ তার শরীরে মনে অভিনয়ে সর্বোপরি দর্শকের মনে পড়ে । ওয়াসিম আকরাম একওভারে ছয়টি বল ছয় রকম ডেলিবারি দিত । ব্যাটসম্যান খেলতে বিষম খেত । সেটাও আর কতদিন ? একসময় ব্যাটসম্যান সব বুঝে যায় । ধরুন আমাদের ফিজ । তার অভিষেকের সময়গুলো চিন্তা করুন । কেমন ঝলমলে । আর এখন কিংবা তারও পরে ম্লান হবে না কিছুটা ?
ঠিক তেমনি লিডার সব জারিজুরি একসময় দর্শকের কাছে গতানুগতিক হয়ে যায় । লিডারও প্রয়োজন ফুরিয়ে আসে । পরিচালক , প্রযোজক , দর্শক আর কেউ তেমনটা চায় না তাকে। যাকে বলে নিরব প্রত্যাখান । জগৎ এমনই নিরবে নিভৃতে কত কিছু প্রত্যাখ্যাত হয় । কত ফুল ঝলক দেখিয়ে ঝরে যায় ।
লিডার সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে । বিষন্নসময় । তার মনে হতে থাকে ব্যবহারের পর তাকে জাস্ট ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে । কিন্ত্ত তা তো নয় । একসময় সে খুব দাপুটে ছিল , এখন সময় ফুরিয়েছে । এমনি করে সব ফুরায় । লিডা সে কথা বুঝতে চায় না । তার বিত্ত বৈভব সব আছে তবুও সে নিজেকে পরাজিত ভাবে । প্রতিশোধের আগুন জ্বলে তার মাঝে । কার প্রতি প্রতিশোধ নেবে সে ? নিজেকে উন্মুক্ত করে আয়নার সামনে দাঁড়ায় । শরীর দেখে । সে তো বুড়িয়ে যায়নি , তবুও তার এত বড় পতন ! সে মানতে পারে না । এখন কী করবে লিডা ? তার অফুরন্ত সময় । যেখানে সে- সমাজের একটি ভিন্ন কোণের মানুষ , সবখানে তার প্রবেশাধিকার নেই । তার ব্যথা বুঝবার কেউ নেই । এখন সে কি করবে ? তার সময় কাটবে কি করে ? ভাবতে ভাবতে খুব ক্লান্ত লাগে । সে কাউকে বিয়ে করবে ! সংসার ! আর প্রতিরাতে সংগম ! পারিশ্রমিক ! বিনা পারিশ্রমিকে সংগম ! সে ভাবতেই পারে না । তার শরীর আছে , যৌবন আছে তবু নাকি সে ফুরিয়ে গেছে । রাগে , ক্ষোভে সমস্ত দুনিয়াকে আখচিবান চিবাতে থাকে ।
এভাবে কিছুদিন ।আরো দিন যায় ..... দিন যেতে থাকে ।
তারপর সে ধাতস্ত হতে চায় , মানিয়ে নেয়া । এমনই হয় , হঠাৎ তারার পতন হলে কিছুটা বিস্ফোরণ , আগুন- ছড়াবেই ।
লিডার সেরকমই হয়েছিল । তার দৈহিক আগ্রাসীভাব ক্রমশ ম্রিয়মাণ হতে থাকে । ক্লান্তির ছাপ পড়ে মন ও শরীরে ।
লেকের ধারে , পার্কে , সমুদ্রে পৃথিবীর যেখানে গেলে মানুষের চোখ জুড়ায় লিডা নিঃসঙ্গ ঘুরে । ভালো লাগে তার । বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে ।
.................................................................................................................................................
.......................................................................................................................................................
এমনি একদিন এক পাদ্রী তাকে অনুসরণ করে , বলে মা - এত বিষন্ন কেনো তুমি , কোন কারণে অনুশোচনায় ভুগছো ?
পাদ্রীর চোখ স্থির , শাদা যেন মার্বেলের একজোড়া চোখ , ভাবলেশহীন যে চোখে কোন ভয় ,চাওয়া পাওয়া কিছুই নেই তবুও প্রশান্তিদায়ক । সে চোখের দিকে তাকিয়ে লিডা আশ্বস্থ্য হয় । তার মনে হতে থাকে এই প্রথম কেউ তাকে হৃদয় দিয়ে মমতা দিয়ে অনুধাবণ করছে এবং ডাকছে । ছোটবেলায় মা - বাবা এমন করে ডাকতো এরপর এ দীর্ঘ জীবনে এত জৌলুস আর প্রতিপত্তির জীবনে কেউ তাকে একটিবার এমন মায়ায় ডাকেনি ।
-বাবা আমি পাপি ,আমার ছিল অন্ধকারের জীবন । পাদ্রী লিডাকে আশ্বস্ত্য করে । জগতে সবাই পাপি মা । তারপরও আমাদের অণুসূচণা করতে হয় । ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইতে হয় । আমার কুটিরে এসো একদিন তোমার সব গল্প শোনা যাবে , আসবে তো ?
লিডা পাদ্রীর কুটিরে যায় । গল্পোচ্ছলে সব বলে । তার বর্তমান অবস্থা , মানসিক যন্ত্রণার কথা । পাদ্রী লিডার হাতে একটি বই ধরিয়ে দেয়-নাম " ক্ষমার পথ "। বলে সময় করে পড়ো আর সে অনুযায়ী কাজ করো আশা করা যায় ঈশ্বর তোমায় ক্ষমা করবেন ।
এভাবেই লিডার সাথে পাদ্রী আর গীর্জার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে । আশা যাওয়া , বই পড়া , মিশনারি কাজে অংশগ্রহণ করা একটা নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় । লিডা যেনো নতুন এক জগতের সন্ধান পায় । শান্তির জগত । তার মনের আগুন নিভে আসে ধীরে ধীরে ।
তার হৃদয়ের গহীনে বেদনাঘরে পোকারা আস্তে আস্তে মরে যায় । পরকাল হয়ে উঠে আরাধ্য , মুক্তি তার পেতে হবে । শি বিলিভড ইন দ্যা ডে অব জাজমেন্ট । তাই তাকে কিছু ভাল কাজ করে যেতে হবে ।
একদিন লিডার ইচ্ছে হল কিছু লিখবে । বইয়ের নাম ঠিক করে ফেলে সে -'অন্ধকারের জীবন ' । লিখতে লিখতে একদিন সে ঢাউস সাইজের এক বই লিখে ফেলে । বইটি লিডা পাদ্রী সাহেবকে দেখায় । পাদ্রী কৌতুহল প্রকাশ করে । লিডার থেকে চেয়ে নিয়ে সম্পূর্ণ বইটি পড়ে পাদ্রী মশায় । তাঁর চোখে ভিন্ন এক আলো এসে পড়ে । এ বইয়ে জগতের কল্যাণ হবে এমন অনেক উপাদান খুঁজে পায় ।
বইটি প্রকাশ করলে কেমন হয় লিডা ? জগতের মানুষ কিছু শিখুক এ বই থেকে ? লিডা সানন্দে রাজি হয় । পাদ্রী মহাশয় কতিপয় প্রকাশকের সাথে আলাপ করে বইটি প্রকাশের ব্যবস্থা করেন । নামিদামি এক প্রকাশক বইটি প্রকাশ করতে খুব আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং লেখককে বই বিক্রির উপর মোট টাকার একটা পার্সেন্টেজ দিবেন বলে আশ্বাস দেন । পাদ্রী মশায় লিডাকে সে কথা জানান এবং রাজি হতে অনুরোধ করেন ।
- হ্যালো , লিডা বলছেন ?
-জ্বি ,বলছি ।
-আমি নটরাজ প্রকাশনির স্বত্ত্বাধিকারী বলছি । ম্যাডাম আপনার বইয়ের প্রথম সংস্করণ বাজারে এসেছে । এবং বইটি ভালোই সাড়া ফেলেছে ,প্রথম সংস্করণ প্রায় শেষ হবার পথে । আপনাকে অভিনন্দন । সময়মত আপনাকে রয়্যালটি বুঝিয়ে দেয়া হবে ।
- ধন্যবাদ জানবেন জনাব । জেনে ভাল লাগলো ।
পাদ্রী মহল বইটির প্রোমোট করে পৃথিবীব্যাপি । পাপ থেকে পুণ্যের জগতে আসা এক নারীজীবনের আখ্যান আর ধর্মীয় মিশনারীয় উদ্দেশ্য দুটোই সার্ভ করে এ বই ।
- হ্যালো , লিডা বলছেন ?
- হ্যা বলুন!
-আমি .....প্রকাশনী থেকে বলছি । আপনার বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ ও শেষ হতে চলল । সময়মত আপনার রয়্যালটি পেয়ে যাবেন ।
- জ্বি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানবেন জনাব ।
এদিকে সারা পড়ে যায় সারা দুনিয়ায় । এক নিষিদ্ধ জগতের নারীর বয়ান তার বই সবার মুখে মুখে আলোচিত হয় । সেই জগত কেনো খারাপ , কেনোইবা তার ফিরে আসা ..... আহা ! মানুষ এমনি করে সব ফিরে আসুক আলোর দিকে !
মানুষ বই কিনেই চলছে ।
লিডা ফোনের অপেক্ষায় থাকে , অপেক্ষায় থাকে রয়্যালটির ।
ধর্মকামী মানুষ লিডার উদাহরণ দিয়ে দিয়ে জগতের সব নারীকে ধর্মের দিকে আসার নছিহত চালু রাখে । লিডা কাহিনী রাষ্ট্র হয়ে যায় ।
ধর্মপাড়ার লোকজনের আলোচনার কেন্দ্র লিডা ।
- হ্যালো লিডা , আপনার বই মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে গেছে , শত শত ভাষায় অনুবাদও চলছে । বাজারে চাহিদাও অনেক । আপনাকে আপনার রয়্যালটি বুঝিয়ে দেয়া হবে ।
- ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন ।
-হ্যালো লিডা --
-হ্যালো লিডা ---
-হ্যালো লিডা ---
লিডার চিত্তে বষন্ত খেলা করে । মিলিয়ন মিলিয়ন বই বিক্রি আর কোটি কোটি ডলার রয়্যালটি প্রাপ্তি !
শরীর ও মন হাসতে থাকে হাসতেই থাকে .........
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:২০