খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল সিজারের মাধ্যমে একসঙ্গে পাঁচটি সুস্থ-সবল শিশুর জন্ম দিয়েছেন গোপালগঞ্জের শিমু বেগম (২৩)। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার করপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গফ্ফার খানের স্ত্রী। পাঁচ সন্তানের মধ্যে একজন ছেলে ও চারজন মেয়ে।
শিমু বেগমের স্বামী গফ্ফার খান জানান, তার স্ত্রীর শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ভারি হওয়ায় প্রথমে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডাক্তাররা বলেন, গর্ভে চারটি সন্তান আছে। তবে প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছে। এরপর ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে এলে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডাক্তারদের পরামর্শে ভালো চিকিত্সার জন্য ১৭ জুলাই রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এবারও ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন শিমু বেগমের গর্ভে চারটি সন্তান রয়েছে। তিনদিন মেডিকেলের ডাক্তাররা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। অবশেষে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়। তবে চারটি নয় একে একে পাঁচটি সন্তানের জন্ম দেয় শিমু বেগম। চারটি সন্তান শিশু ওয়ার্ডে রাখলেও তুলনামূলকভাবে ওজন অনেক কম হওয়ায় একটি সন্তানকে ইনটিভেটরে রেখেছেন ডাক্তাররা।
এই জটিল অপারেশনে নেতৃত্ব দেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লেবার গাইনি ইউনিট-২ ওয়ার্ডের প্রধান ডা. জান্নাতুল ফেরদৌসী। এছাড়া গত ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন এই ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্টার ডা. পাপড়ি খানম। প্রতিটি সন্তানের ওজন হয়েছে গড়ে প্রায় দুই কেজি করে। এ সম্পর্কে সদ্য জন্মগ্রহণ করা পাঁচটি সন্তানের পিতা গফ্ফার খান বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে, এ ধরনের একটি বিরল ঘটনা আমাদের পরিবারে ঘটল। তিনি আরও বলেন, মাহে রমজানের প্রথম দিনে আল্লাহর এই নিয়ামক আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া। তিনি স্ত্রী ও সন্তাদের জন্য সবার কাছে দোয়াও চাইলেন।
অপরদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ডাক্তার, সেবিকা ও সাধারণ দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে যায়। সবাই সন্তানদের ও তাদের মাকে এক নজর দেখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ চাপ সামলাতেও কর্তব্যরত ডাক্তার ও সেবিকাদের সাময়িক হিমসিম খেতে হয়। উল্লেখ্য, এর আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে চারটি সন্তান প্রসব করেছিলেন এক মা। তবে সন্তানগুলো সবাই বাঁচেনি।