পৃথিবীর একশ’ কোটি মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে নিজে পেট পুরে খেয়ে ঘুমোতে গেছ যেদিন, জেনে রাখ ধার্মিক- সেদিনই তোমার ধর্মের দফারফা হয়ে গেছে।
পৃথিবীর ছয় কোটি মানুষকে শরণার্থী শিবিরে বসবাস করতে বাধ্য করে সোনার গম্বুজওয়ালা টাইলসযুক্ত ও মনিমুক্তাখচিত কারুকার্যময় বিশাল বিশাল মসজিদ-মন্দির-গীর্জা-প্যাগোডা-সিনাগগে প্রার্থনা করেছ যেদিন, সেদিনই তোমার দুর্ভাগ্য লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে।
যুদ্ধের অজুহাতে লাখ লাখ নারীকে ধর্ষণ করে অবৈধ সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা হয়েছে যেদিন, সেদিনই তোমার হিজাব-পর্দা, সতিত্ব-কুমারিত্ব অর্থহীন হয়ে গেছে।
খাবার দিতে পারবে না জেনে মা তার কোলের সন্তানকে রাস্তায় ফেলে গেছে যেদিন, শিশু আইলানের প্রাণহীন দেহ সমুদ্রে ভেসেছে যেদিন, বুলেটে ঝাঝরা হওয়া সিরীয় শিশুটি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে ‘আমি আল্লাহকে সব বলে দিব’- এ হুমকি দিয়েছে যেদিন, সেদিনই তোমাদের উপর স্রষ্টার অভিশাপ আছড়ে পড়েছে, তোমার অস্তিত্বই ব্যর্থ হয়ে গেছে।
সমগ্র পৃথিবী অন্যায়, অবিচার, রক্তপাত, হানাহানি, স্বার্থপরতা, পরশ্রীকাতরতা, হিংসা-বিদ্বেষ, অহমিকা ও পাশবিকতায় ছেয়ে গেছে যেদিন, সেদিনই তোমার ধর্ম, তোমার ধর্মগ্রন্থ, তোমার উপাসনালয়, তোমার আচার-অনুষ্ঠান, তোমার প্রথা ও তোমার রীতি-নীতি-পর¤পরা মিথ্যে হয়ে গেছে।
ধর্ম হলো জীবনের নাম। ধর্ম বাস্তব সমস্যার বাস্তব সমাধানের নাম। তুমি ক্ষুধার্ত? ধর্ম তোমাকে খাবার দেবে। তুমি বাস্তুহীন? ধর্ম তোমায় থাকার জায়গা দেবে। তুমি নির্যাতিত? ধর্ম তোমার অধিকার ফিরিয়ে দেবে। যদি না দেয় তবে সেটা ধর্ম নয়। স্রষ্টা ধর্ম পাঠিয়েছেন মানুষের বাস্তব জগতের সমস্যার সমাধান করার জন্য, কোনো কল্পিত জগতের মরীচিকার দিকে তাকিয়ে থেকে বাস্তব দুনিয়ায় অক্ষম-দুর্বল-পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে থাকার জন্য নয়।পৃথিবীর একশ’ কোটি মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে নিজে পেট পুরে খেয়ে ঘুমোতে গেছ যেদিন, জেনে রাখ ধার্মিক- সেদিনই তোমার ধর্মের দফারফা হয়ে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩১