তোমার সাথে যে আমার কিছু হবেনা এটাও কি তুমি আগেই জানতে নাকি ব্যাপারটা ঘটে গেল? আমি এর কোন উত্তর খুঁজে পাইনা। পাব ও না হয়ত কখনো। কারণ একমাত্র তুমিই পারতে উত্তরটা দিতে, কিন্তু তুমিতো আমার সাথে আর যোগাযোগই কর না। আমি জানি না এখন তুমি কেমন আছো, কি করছ। কিন্তু খুব জানতে ইচ্ছা করে।
আমি এখন আর আগের মত নই, আগের মত হওয়াটা ও সম্ভব না। কারণ আমার হৃদয়টা মরে গেছে, আমার মনের ভিতরের সমস্ত শক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর জন্য আমি তোমাকে দোষ দিই না। এই ধাক্কাটা আমার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল, প্রয়োজন ছিল কারণ আমার মধ্যে অহংকার চলে এসেছিল। আমি ভাবতাম আমি মেয়েদেরকে বুঝি, আমি নিজেকে রবীন্দ্র-নজরুল সমগোত্রীয় ভাবতাম, হয়ত তাদের চেয়েও বড়ই ভেবে বসেছিলাম। এখন আমি আমার সামর্থ্য জানি, জানি আমি কিছুই না। আমি একজন সাধারণ মানুষ, আমি অন্যদের চেয়ে বেশি জানিনা, নতুন কিছু করার শক্তি আমার নেই, আর আমি অন্যদের থেকে বেশি ভাগ্যবান তো নই অবশ্যই।
আমার ভিতরের সেই উচ্ছ্বাসটা আর নেই। কাল না পরশুদিন বাসার নিচতলার একটি ছেলে মুনির, বলছিল যে আমি নাকি আর আগের মত হাসি না। আগে নাকি কথায় কথায় হাসতাম, এখন নাকি হাসলেও বুঝা যায় যে জোর করে হাসছি, সত্যিই কি তাই? হয়ত। আমিতো আর নিজেকে দেখতে পারিনা, মূল্যায়ণ ও করতে পারিনা। তুমিই তো ছিলে আমার আয়না, ছিলে সুখে দুঃখের সাথী হয়ে, কোথায় হারালে বলো? আমি যে আমার সেই মানুষটিকে ফিরে চাই। পাব না জানি।
খুব কষ্ট হয় যখন ভাবি আমি তোমাকে শুধু এই পারেই নয়, ওই পারেও হারিয়ে ফেলেছি, কখনোই পাবোনা নিজের করে। শুনেছি এইপারে যারা স্বামী-স্ত্রী হয় তারাই নাকি ওই পারে স্বামী-স্ত্রী থাকে। তার অর্থ হল আমার কোন সুযোগ নেই। নিজের উপরেই ঘৃণা হয়, আমি এতটা হীন! একটা সামান্য মেয়েকে পেলাম না নিজের করে! আমার এই জন্মটাই হয়ত ছিল ভুল।
জানো, নিজের চেহারাটা এখন আর আমি আয়নায় দেখিনা। খুব লজ্জা লাগে। না, আমার চেহারাটা খারাপ তার জন্য নয়, এই জন্য খারাপ লাগে যে আমি একজন হেরে যাওয়া মানুষ, পরাজিত দলের সদস্য। আজ পর্য্যন্ত যারা ব্যর্থ হয়েছে আমার নামটা হয়ত তাদের মধ্যে উপরের দিকেই থাকবে। ছি !
কথাটা তুহিনকে দিয়ে না বললেও পারতে। আমিতো কথা দিয়েছিলাম, আমার কথার কি কোন মূল্য নাই? নাকি আমাকে আর বিশ্বাস করোনা? আমার চেয়ে কি ফারজানা কিংবা অন্য কেউ, যার সাথে এখন তোমার খুব দহরম-মহরম, তার নামটা আমি বলতে চাই না, তাদের কথার গুরুত্ব বেশি? নাকি ওরা তোমার বেশি আপন! হতেই পারে, আপন মানুষ যখন পর হয় তখন অন্য লোকগুলো এসে আপন মানুষের জায়গা নেয়, তবে মনে রেখ তারা কখনো আপন হয়না, আপন হবার ভান করে মাত্র, কাছে টেনে নিয়ে এরাই বেশি ক্ষতি করে।
কি ক্ষতি হত বলো, যদি আমার হতে? আমি তোমাকে অনেক ভাল রাখতাম, তোমার জন্য হয়ত হীরার গহনা এনে দিতে পারতাম না প্রতিদিন, কিন্তু আমার এই হৃদয় যাকে আমি হীরার টুকরো বলেই জানি, তা তোমার পায়ে লুটোপুটি দিত। ভেবেছিলাম আমি হব পৃথিবীর সব চেয়ে ভাগ্যবান মানুষ, কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী হীরাটা আমার হবে, তখন কি আর আমি জানতাম এটা হীরা নাকি কালো কয়লা এটা পরখ করে দেখার সৌভাগ্যই আমার হবেনা!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৩২