অজিত একটি প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ে। নতুন ভার্সিটি। রাজনৈতিক ভার্সিটি বলেও বদনাম আছে। সেটা ব্যাপার না অজিতের কাছে, ওর মনটা অন্য কারণে খারাপ। সেই কারণ গুলো যদিও কারো সাথে বলে না, তারপরেও তার বন্ধুরা ঠিক বের করে ফেলেছে অজিতের এই মন খারাপের মূল কারণ কি কি! সেই অনেক গুলো কারণের কয়েকটা হল,
১।চেহারা খারাপ
২।পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা
৩।প্রথম প্রেমিকার দেওয়া ছ্যাকা
৪।বন্ধুদের কাছে পাত্তা না পাওয়া, ইত্যাদি ইত্যাদি..........
অজিতের গায়ের রঙ কালো, স্বাস্থ্য মাঝারি। বাড়ি থেকে শহরের মেসে থাকার জন্য খুব বেশি আর্থিক সাহায্য পায়না। আর বন্ধুদের কাছে পাত্তা না পাওয়ার কারণ হলো চাপাবাজি করা। অত্যধিক পরিমাণে মিথ্যে কথার ব্যবহার তার চরিত্রের অঅন্যতম বৈশিষ্ট্য।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল অজিতের দিন গুলো। ওর খুব শখ একটা প্রেম করার। রুমমেট একটা মেয়ের সাথে কথা বলে। প্রেম না, সময় কাটানো। ওকে দেখে অজিতের প্রেম করার ইচ্ছেটা দ্বিগুণ হয়ে উঠে। হুট করে অজিতের রুমমেট একদিন তাকে একটা মেয়ের নাম্বার দেয়। অজিত যেন হাতে আকাশ পায়। ওইদিন রাতেই সে মেয়েটির নাম্বারে ফোন করে। শুরু হয় প্রেম নামের অপ্রেম। মেয়েটির স্বামী দেশের বাইরে থাকে, অনেক বছর। সংসারের জন্য উপার্জন করে, একটু ভাল থাকার জন্য। কিন্তু এই স্বামীরা এটা বুঝেনা যে, শুধু টাকাই নয়, সংসারে আরো অনেক কিছুর দরকার আছে। যাক সে কথা, মেয়েটির নাম পুষ্প। প্রতিদিন কয়েকঘন্টা কথা হয় ওদের মাঝে। ভবিষ্যৎ, বর্তমান নিয়ে শুধু। অতীত নিয়ে কোন কথা হয়না। কারণ মেয়েটি যে বিবাহিত এটা অজিত জানে না। অনেক দিন পরে একদিন পুষ্প বলে যে ও বিবাহিত আর আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে দিয়েছে। অজিত খুব বড় একটা ঝাঁকুনি খায়। কিন্তু ততদিনে তার ফিরে আসার কোন পথ নেই। সে পুষ্পকে খুব বেশী ভালবেসে ফেলে।
কিন্তু সমাজে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা অল্পতে সন্তুষ্ট হয় না। পুষ্প তেমনি একজন মানুষ। সে অজিতের থেকেও ভাল একজনকে খুজতে থাকে। ওর কাছে অজিত হল সময় কাটানোর মাধ্যম। মনের মত কাউকে পেলে অজিতকে ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা করবেনা। হলো ও তাই। একদিন পুষ্পের জীবনে অজিতের চেয়ে ভাল একজন আসল। অজিতকে আর এখন সময় দেয়না পুষ্প। কারণ অজিতকে দেওয়ার মত সময় যে ওর নাই। সবটুকু সময় নতুন মানুষটার জন্য বরাদ্দ। তার মনে আজ অজিতের জন্য কোন জায়গা নেই।
পুষ্প নামক মানুষ গুলো এভাবেই অন্যকে ঠকায়। একদিন হয়ত বুঝে যে সব ভুল হচ্ছে। কিন্তু সেইদিন অজিতের মত মানুষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪১