বিষ্ঠাক্রমণ বলব নাকি মলাক্রমণ বলব! সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে না পারলেও ঘটনাটি কিন্তু কাকের সাথেই ঘটেছিল। কাকের সাথে আমার বন্ধুত্ব বরাবরই ভাল ছিল। তারপরও কেন জানি তারা হঠাৎ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সু-সংগঠিত ভাবে এ ধরনের বিষ্ঠাক্রমণ করে বসবে, তা ঘটনার দশ সেকেন্ড আগেও টের পাইনি। জানি শহুরে জীবনে অভ্যস্ত মানুষেরা কম বেশী জীবনে একবার হলেও বিষ্ঠাক্রমনের মুখোমুখি হতে হয়েছে! তবে আমার মত দলবদ্ধ ভাবে সু-সংগঠিত বিষ্ঠাক্রমণের মুখোমুখি কোনদিন কেউ হয় নাই, তা আমি হলফ করে বলতে পারি।
ছোটকাল থেকেই পশু-পাখির চরিত্রের প্রতি আমার বরাবরই ঝোঁক ছিল। তা আমি বাবা থেকেই পেয়েছিলাম। আমাদের ঘরের ঠিক পিছনেই বিশাল আকৃতির বাঁশ বাগান ছিল। সন্ধ্যা হবার ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই পাখিরা বাঁশ ঝাড়ে চলে আসা শুরু করত। আর রাত হওয়া অবধি স্থান দখল নিয়ে ঝগড়া-ঝাটি করত। স্থানও যেমন তেমন নয়, বাঁশের ক্ষুদ্র প্রশাখায় বসে রাত কাটাবার দাবী নিয়ে এই ঝগড়ার সূত্রপাত হত।
ছোট পাখিরা আগেই বাঁশ ঝাড়ে চলে আসত । শালিক-শ্যামা সহ কিছু পাখিরা পরে আসত। তারা এসে আগে থেকেই দখলে চলে যাওয়া, অন্যে পাখির জায়গা কেড়ে নেবার চেষ্টা করত। এর ফলেই ঝগড়ার সূত্রপাত হত। এই পাখি গুলোকে বরাবরই ঝগড়াটে পাখি হিসেবে দেখেছি। সাদা বক একদম উপরে বসত, কাক একদম নীচে থাকত। ফলে সাদা-কালোর একটা তফাৎ তথা বর্ণ বৈষম্য পাখিদের মাঝেও দেখেছি।
বক আর কাকের স্থান নিয়ে কখনও লড়াই চলত না। আমি ছোটকালে বাবাকে তাদের অনর্থক ঝগড়া করার কারণ নিয়ে বিরক্ত করেছি। তিনি বিরক্ত হতেন না, কেননা তিনিও ছোটকালে এই বাগানের পাখিদের ঝগড়া দেখেই বড় হয়েছিলেন। আমাদের গ্রামের মানুষ পাখি মারত না বিধায়, আমাদের চারিদিকে প্রচুর পাখির আনাগোনা থাকত।
বাবাও প্রাণী চরিত্র উপভোগ করতেন, তাদের আচরণ বুঝতেন এবং শিশুকালে আমার অসংখ্য প্রশ্নের মাঝে তাঁর অভিজ্ঞতা উত্তর হিসেবে ঢুকিয়ে দিতেন। প্রবাস জীবনে এই বয়সেও কোথাও বাগানে গেলে আমি পাখিদের বিভিন্ন চরিত্র আজো উপভোগ করি। যাক, বলছিলাম বিষ্ঠাক্রমণের কথা।
কাক আমার কাছে বরাবরই কৌতূহলের পাখি ছিল। মেথর পট্টিতে মানুষের তাজা পায়খানায়, মেথরর পালিত শুকুর যেভাবে লুটোপাটি খেয়ে, পায়খানাকে মাটি বানিয়ে সিটি কর্পোরেশন ও মেথরদের উপকার করে। ঠিক তেমনি কাকও দায়িত্বহীন সিটি কর্পোরেশনের পচন কারক, বিশ্রী দুর্গন্ধ সৃষ্টি উৎপাদক নোংরা-উচ্ছিষ্ট খেয়ে শহর বাসীকে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রাখে। পরিষ্কার পানি পাওয়া গেলে, কাক সাত সকালেই গোসল সেরে নেয়! এটা কাকের উত্তম বৈশিষ্ট্যের একটি। মাঘ মাসের শীতের ভোরে কাক গোসল করে, ঘণ্টা খানেক রোদে শুকিয়ে খাদ্যের অন্বেষণে বের হয়। কাক নিজেদের মাঝে ঝগড়া করেনা, কারো খাদ্য কেড়ে খাওয়ার প্রবণতা তো নাই, বরং তাদের কেউ একজন বিপদে পড়লে, সম্মিলিত ভাবে সবাই চেষ্টা করে বন্ধুতে উদ্ধার করতে।
একদা ইন্টারভিয়্যুর প্রশ্নে, কাক আমার প্রিয় পাখি বলায় কর্তারা খুবই আগ্রহ সহকারে আমার কথা শুনায় মনোনিবেশ করেছিল। উপরের কথা গুলো বলাতে তারা হেসেছিল, তবে মন্তব্যও করেছিল যে, তাদের বিষ্ঠার জ্বালায় মানুষ চলাফেরা করতে পারেনা। সেই বিষয় কি আমি হিসাবে রাখি নাই। হিসাবে না রেখে আমি যেভাবে অপদস্থ হয়েছিলাম সেটা এখনও মনে রাখি তবে সেদিন কর্মকর্তাদের বলেছিলাম। মুরগী তো পরিষ্কার স্থানেই বিষ্ঠা ত্যাগ করে। বিষ্ঠার সূত্র দিয়ে প্রিয়-অপ্রিয় নির্ণয় করাটা হয়ত একটু কঠিন হবে। সিলেকশন বোর্ড আমাকে নির্বাচিত করেছিল।
যাক, আমরা কম বেশী সবাই পড়েছি যে, কাক খুব বুদ্ধিমান পাখি, কলসিতে পাথর ফেলে কাক পানিকে কিভাবে উপরে তুলে আনে, সে ঘটনা শিশুদের পড়িয়ে পাকা বানানো হয়।
গ্যাবী নামের এক ছোট্ট শিশুর সাথে কাকের বন্ধুত্ব হয়। কাকটি বিভিন্ন স্থানের ময়লা উল্টিয়ে, উচ্ছিষ্ঠ কুড়িয়ে গ্যাবির জন্য যে উপহার গুলো বাছাই করে এনেছিল, গ্যাবী তা সযন্তে পরিষ্কার করে সাজিয়ে রেখেছিল। গ্যাবির জন্য বাছাই করে আনা জিনিষ গুলো দেখে বুঝতে পারবেন মানুষের জন্য কাকের পছন্দের ধরনটি কেমন হতে পারে। যদিও এই ব্যাপারটি আমার আজকের প্রতিপাদ্য বিষয় নয়।
কোন পাখিদের একটি প্রজাতি যদি মানুষের উপর ক্ষিপ্ত হয়, তাহলে মানব জাতি দুনিয়াতে বসবাসও করতে পারবে না। কাক দিয়ে এই থিমের উপর আশির দশকে একটি বই পড়েছিলাম। পরবর্তীতে তা The Crow তথা কাক নামের সেই বইয়ের চরিত্র অনুসারে নির্মিত একটি ছবি ১৯৯০ সালে বিটিভিতে প্রদর্শন করেছিল। লেখকের নামটি এই মুহূর্তে মনে করতে পারছিনা। পুরষ্কার প্রাপ্ত সাড়া জাগানো সেই বইতে কাকের বাহাদূরী কেমন ও ক্ষমতা কত তা পরিচালক ভাল করেই বুঝিয়েছিলেন।
ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম শহরের রেলওয়ে জংশনের সামনের মসজিদের উপরের তলায় কয়েকটি ভাড়া কক্ষে ছাত্ররা ভাড়া থাকতাম। আমি ঠোঁটের সাহায্যে একটি শিষ দিতে জানতাম। কদাচিৎ মসজিদের ছাদে উঠে যখন মাত্র সেই শিষ দিতাম। বিরাট এলাকার প্রচুর কাক আমাকে ঘিরে ধরত আর সজোরে চিল্লানো শুরু করত।
এর পর যত জায়গায় বাসা বদলিয়েছি, সেখানে যদি সেই শিষ দিতাম, মুহূর্তে কাকেরা দলবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদী হয়ে এলাকায় উড়ে উড়ে টহল দিত। মানুষ বুঝত না কেন কাকেরা এমন করছে। নববধূকে নিয়ে তার পিত্রালয়ের বাসায় ছাদে বসে, বৈকালিক গল্প করছিলাম, এমন সময় একটি কাক দেখে নিজের অজান্তে শিষ বাজিয়েছিলাম! ব্যস দলে দলে কাক হুমড়ি খেয়ে পড়ল। বধূ বলল, দূর ছাই! কাকের জ্বালায় বসতে পারলাম না। বিদেশ থেকে গিয়ে নিজেদের অন্যত্র ভাড়া বাসার ছাদে সস্ত্রীক বসেছিলাম গল্প করতে। অন্যমনস্ক এক কাক দেখে ভাবলাম,তাকে শিষটা শোনাই! কেননা এই এলাকায় আমি নতুন তাছাড়া অনেক দিন পর বিদেশ থেকে এসেছি, আমাকে তো আর চিনার কথা না। সুযোগ বুঝে দিলাম শিষ বাজিয়ে, ব্যস মুহূর্তেই শুরু হল সম্মিলিত কোরাস! বধূ এক প্রকার বিরক্তি ও ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, তোমার সাথে কাকের এত বিরোধ কেন? তোমাকে দেখলে কাক এত উত্তেজিত হয় কেন। তুমি তাদের কি করেছ?
চেহারায় গোবেচারা ধরনের অভিব্যক্তি এনে বললাম, আমি আবার কি করলাম! গতকল্যই তো বিদেশ থেকে আসলাম, আজ মাত্র তোমাকে নিয়ে ছাদে উঠলাম, কি জানি তারা কি কারণে চিল্লানো শুরু করেছে!
বউ বলল, তোমাকে বুঝি আমি চিনিনা! নিশ্চয়ই তুমি কিছু একটা করেছ, আর সে কারণে কাকেরা উত্তেজিত হয়ে তোমার কাজের প্রতিবাদ করতে এখানে উড়ে বেড়াচ্ছে।
মিনিটে মিনিটে কাকের সংখ্যা বাড়তে রইল। অতীতের মলাক্রমণের কথা মনে পড়ে গেল! শরীর রি রি করে উঠল, লোমকূপ খাড়া হয়ে গেল। ভাবলাম ছাদের উপরে বসে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত আলাপ আরেকটু দীর্ঘক্ষণ হলেই মলাক্রমণের ঘটনা এখানেও ঘটে যেতে পারে। বউ তো সেই বিষ্ঠাক্রমণের কথা জানেনা। সিদ্ধান্ত নিলাম তাড়াতাড়ি ভাগতে হবে। বউকে বললাম তাড়াতাড়ি নীচে নাম, একটু মাত্র দেরী নয়।
সে অনেকটা রাগত স্বরে বলল, বিদেশ থেকে এসেছ কথা বলার সুযোগ নাই। দিনে মেহমান, রাত্রে আপন জনের আনাগোনা, বিকালে একটু নিরিবিলি কথা বলব, সেখানে কাকের আক্রমণ! এসব আর ভাল লাগেনা। আমি তাঁর কটূক্তি গায়ে না মেখে নীরবে নিচে নেমে এলাম, কেননা দেরী করলে স্ত্রীর কটূক্তির চেয়ে কাকের মলাস্ত্র প্রয়োগ আরো ভয়ানক জিল্লতির কারণ হতে পারে।
আসলে মলাস্ত্র তথা বিষ্ঠাক্রমণের কথা আপনাদের এখনও বলা হয়নি!
কাক কোন পথিকের উপর বিরক্ত হলে, সে সুবিধা মত সময়ে বিদ্যুতের তার কিংবা গাছের চিকন ডালে বসে পড়ে এবং সুযোগ মত পথিকের গায়ে বিষ্ঠা ছেড়ে দেয়। বিষ্ঠা ছেড়ে দিয়ে নিচু হয়ে উঁকি মেরেও দেখে ঠিক মত পড়ল কিনা! মধ্যাকর্ষণ শক্তি, পৃথিবীর ঘূর্ণন, কাকের বসা ডালের উচ্চতা এবং পথিকের চলার গতির সাথে গাণিতিক পরিমাপের সাথে মাপ রেখেই, বিচক্ষণ কাক টপাস করে বিষ্ঠাটা পথিকের শরীর বরাবর ছেড়ে দেয়! কাকের এই গাণিতিক নিয়মের বিচক্ষণ বিষ্ঠাক্রমণ শতকরা তিন ভাগও ব্যর্থ হয় কিনা অন্তত আমি জানিনা।
কাকের মত আরো অনেক পাখি আছে যারা বিষ্ঠাক্রমণ চালায়। বানর, হনুমান, উল্লুক মুত্রাক্রমণ চালায়। গাছের উপরে বসে নীচের সরু কঞ্চির উপরে তারা সঠিক জায়গায় মূত্র নিক্ষেপ করতে পারে।
ছাত্রাবস্থায় শহরের রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে একদা গন্তব্যে যাচ্ছিলাম। জুমাবার আজান হয়েছে বেশ আগেই। প্রতিটি মসজিদে খুতবা শুরু হয়েছে। ভাবলাম আধা মাইল দুরেই রাস্তার পাশে একটি মসজিদ আছে, সেখানে থেমেই জামায়াত পড়ে নিব। তাই বের হবার সময়ই অজু করে নিয়েছিলাম। এতে আমার রাস্তার দূরত্ব কমবে, যথা সময়ে নামাজও পড়া যাবে। মসজিদের পুকুরে গোসল করা নিষেধ, সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে, শুধুমাত্র অজু করা যাবে। অবশ্য ইমাম-মুয়াজ্জিনের জন্য গোসলের আইন শিথিল আছে।
আমি সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি, ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় খুতবা চলছিল। রাস্তা প্রায় ফাঁকা, সূর্য মাথার উপর খাঁ খাঁ করছিল, প্রচণ্ড গরমে পরিবেশ তেঁতে আছে। একটু সামনেই একদল কাক কি কারণে আগে থেকেই হট্টগোল করছিল। তাদের একটি বিরাট ঝাঁক আকাশে বৃত্তাকারে ঘুরে চিল্লাচ্ছিল। আমি যখন কাকের হট্টগোলের জায়গা পাড়ি দিচ্ছিলাম, তখন মনের অজান্তে একটি শিষ দিয়ে বসি!
আর যায় কোথায়! যেসব কাক এতক্ষণ মাটিতে বসে হট্টগোলে ব্যস্ত ছিল, তারাও আকাশে উঠে গেল, বুঝলাম তাদের চিৎকারের পরিমাণ টা বেড়েছে। এটাতে আশ্চর্য হবার কিছু নাই। কেননা শহর বাসীরা, সর্বদা কাকের চেঁচামেচি দেখতেই অভ্যস্ত। আমিও কোন গুরুত্ব না দিয়ে জামায়াতে নামাজ ধরার জন্য সাইকেলের গতি আরো বাড়িয়ে দিলাম কেননা নামাজের ততক্ষণে আকামদ শুরু হয়েছে।
ঠিক সেই মুহূর্তে মনে হল ডান কাঁধের উপরে কিছু একটা যেন ধপাস করে পড়ল! আগে থেকেই পুরো শরীর ঘামে ভিজে আছি। মনে হচ্ছে ঘাম যেন পিট বেয়ে নিচের দিকে নামছে। সাইকেল চলা অবস্থায় ডান কাঁধের দিকে তাকালাম। বিশ্রী দুর্গন্ধ নাকে আসল, জিনিষটা কি বুঝে উঠার আগেই এবার বাম কাঁধেও কিছু একটা পড়েছে! মুহূর্তে আরেকবার পিঠের উপর, পর-মুহূর্তে কাঁধ বরাবর! বুঝতে বাকি নাই, আমার উপরে কি ঝড়ে পড়ছে। কাকের ক্রোধে, সাইকেলের হ্যান্ডেল, পিছনের ক্যারিয়ার, নিজের পুরো শরীর মলে মলে ভরপুর আর কিছুই বাকি নাই। আরো আক্রমণ হতে পারে, মুখ বাচাতেই চেষ্টা করে যাচ্ছি! সাইকেলের গতির সাথে, কাকের উড়ার গতিও পাল্টাচ্ছে।
হায়! হায়! কি করি! কি করি! ভাবছি আর অসহ্য দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়। ততক্ষণে জামায়াত শুরু হয়েছে, অপবিত্র হয়েছি, নামাজ তো গেলই। মনে হচ্ছিল, বমির মাধ্যমে নাড়ি ভুরি সহ বের হয়ে আসবে। দাঁড়াতে পারছিনা, কাকের আরো আক্রমণের সুযোগ বাড়বে। কোথাও পানি নাই যে, দাড়িয়ে পরিষ্কার করব।
সাইকেল চলা-বস্তায় মনে পড়ল এই পথে মসজিদের পুকুরের কথা। সেটা ব্যতীত গন্তব্যের পৌছা পর্যন্ত আর কোন বিকল্প নাই। আবার সাথে সাথে নিষেধাজ্ঞার কথাও মনে পড়ল। আরে ধ্যাৎ, আগে ধুয়ে নেই, তারপর নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবা যাবে। সকল মানুষ দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়েছে, আমি দাড়িয়েছি মসজিদের পুকুর পাড়ে। সাথে সাথে আবারো বিষ্ঠাক্রমণ। এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। মুখ বাঁচাতে গিয়ে সরাসরি সাইকেল সহ পুকুরে ঝাঁপ দিলাম। পুরো মসজিদের নামাজরত মুসল্লিরা বুঝতে পারল মসজিদের পুকুরে বিশালকায় ঝাঁপের ঘটনা ঘটেছে।
দীর্ঘক্ষণ পানিতে ডুবে থেকে, সাইকেল সহ যখন মাথা উঁচু করলাম, দেখি মুসল্লিরা রুকুতে নিমজ্জিত। আরেকবার বিশালকায় ডুব দিলাম। আবার যখন মাথা তুললাম দেখি, মুসল্লিরা তাশাহুদ পড়তে বসেছে। টাইম বোমের মত সকল কিছু যেন কাঁটার হিসেবে চলছে।
চিন্তা করলাম আর এক মুহূর্ত দেরী নয়। কাকের আক্রমণ থেকে হয়ত বাচা যাবে কিন্তু মুসল্লির আক্রমণ থেকে বাঁচাটা আরো কঠিন হবে। সাইকেলে উঠলাম জোড়ে সাইকেলের প্যাডেল চালালাম। সোজা রাস্তায় আধা মাইলের মত পাড়ি দিয়ে, পিছনে পিছনে তাকিয়ে দেখি, প্রচুর মুসল্লি রাস্তায় নেমে চিন্তা করছিল, আসলে ঘটনাটি কি হয়েছিল!
চলার পথের এই মসজিদে আমি এক ওয়াক্ত নামাজের নিয়মিত মুসল্লি। গোসলের ফলে হয়ত আমাকে জরিমানা গুনতে হত না তবে নির্ঘাত এই ঘটনা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে অপমানিত হতাম। সেটা থেকে তো বাঁচা গেল!
আমাকে পুকুর ফেলেই কাক বিষ্টাক্রমন বন্ধ করে দেয়। তারা আবার তাদের পুরানো হট্টগোলে যোগ দিল। বিষ্ঠাক্রমণের ভয়ে কয়েকদিন আর সেই রাস্তায় চলাচল করলাম না। তাই পাঠকেরাও যেন উল্টা পাল্টা শিষ বাজিয়ে কাক প্রাণীটাকে উত্তেজিত করে বিষ্ঠাক্রমণের শিকার না হন, সে জন্য হুশিয়ার করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭