আজ প্রয়াত জাহানারা ঈমামকে নিয়ে অনেক লেখা লেখি হচ্ছে। আমাদের কপটতা, চেতনার ব্যাবসা আজো বন্ধ হয়নি, হবেও না হয়তো কোন দিন। অর্থ ও রাজনৈতিক গোলামী, মসনদের মোহ- এই সব সংকীর্নতার কাছে আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতা চেতনা বন্দী। সবাই যে যার মত করে চেতনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছি। নিজের প্রয়োজন মত এই চেতনাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কাজে ব্যবহার করছি - ধর্ষন করছি প্রিয় মাতৃভূমির জন্ম ইতিহাসকে- ধিক্। নিজের বিবেককে আমরা একবারও প্রশ্ন করিনা, আসলেই কি আমি দেশকে ভালোবাসি, নাকি স্বীয় স্বার্থটাই আমার কাছে বড়? ৩৮ বছর পার হয়ে গেলো- আজো আমরা জানিনা আমাদের স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক কে? আজো আমরা সবাই সম্মান করিনা এদেশের স্থপতিকে। এসবের জন্য কে দায়ী? এর জন্য মুলতঃ দায়ী কতিপয় স্বার্থপর- রাজনৈতিক পদলেহনকারী তথাকথিত বুদ্ধিজীবি-লেখক-ইতিহাসবিদ-সাংবাদিক-অধ্যাপক-রাজনীতিবিদ। যারা আমাদের মহান মুক্তিযু্দ্ধকে নিজেদের হীন স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং এখনও করছে- এই সব কুলাংগারদের জন্য রইলে অন্তরের গভীর থেকে উত্থিত ঘৃণার অগ্নি।
আজ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যে কোন বই পড়ে মন চায় পুরোপুরি বিশ্বাস করি, কিন্তু পারিনা। মনে হয়- আমি যা পড়ছি, জানছি- এর কতটুকু সত্য? কেন এই সংশয়- এজন্য দায়ী কি পাঠক, নাকি লেখক, না অন্য কেউ। কেন একটা দেশের জন্মের ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক থাকবে? কেন জাতীয় নেতাদের আমরা দল-মত নির্বিশেষে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাতে পারছিনা সম্মান? স্বাধীনতা দিবস আসে, বিজয় দিবস আসে তখন হঠাৎ করে কিছু পোষা লোক চেতনার কথা বলে সদ্য লাফাতে শেখা ব্যাংগাচির মত লাফাতে থাকেন। দেশ শেষ হয়ে গেল, এবার যুদ্ধাপারাধীদের বিচার না করলে বাংলাদেশের ধ্বংস অনিবার্য। দেশে যত দূর্নীতি, অব্যাবস্থা ও সন্ত্রাস- সবকিছুর মূলে ঐ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি- এইসব হাঁকডাক তুলে দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্ট করার চেষ্টা প্রায় হয়ে থাকে।
ঐসব চেতনার ধ্বজাধ্বারীদের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, আসুন সবাই মিলে আমরা ভালো মানুষ হই, নিজেদের নীতি-নৈতিকতার মানোন্নয়ন করি, কথা ও কাজের মিল প্রতিষ্ঠা করি। দেশকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসি, দেশের কল্যাণে নিজেরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত হই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা-হানাহানি-যেনতেন প্রকারের ক্ষমতা দখল- এই সব অসুস্থ মানসিকতা পরিহার করে সু্স্থ, সহনশীল গনতান্ত্রিক পরিবেশ কায়েম করি। নতুন প্রজন্মের জন্য আমার ন্যায়পরায়নশীল, সৎ, দেশ-প্রমিক ও দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্তরিক ভাবে প্রচেষ্টা চালাই, যারা এই বন্ঞ্ছিত জাতিকে সোনালী দিনের দিকে নিয়ে যাবে।