সুখবর! সুখবর! সুখবর! মঈন ভাই এগিয়ে চল, আমরা আছি (?) তোমার সাথে
সৌজন্যেঃ চামচা গোষ্ঠি
আগামী তিন মেয়াদের জন্য সামরিক রাষ্ট্রপতি এবং অসামরিক প্রধানমন্ত্রী এই ফর্মূলা নিয়েও ভাবছেন ওয়ান ইলেভেনের উদ্যোক্তারা। তারা নিশ্চিত যে, এ সময়ে কোন দলই একক সরকার গঠন করতে পারবে না। সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার একক ও একমাত্র ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা তাদের দাবী। অর্থনীতির ক্ষেত্রে মেগনাকার্টা নীতি অনুসরণ করতে হবে। এ জাতীয় পরিস্থিতি নিশ্চিত হলেই ওয়ান ইলেভেনের উদ্যোক্তারা রাজনৈতিক সমঝোতায় যাবে। অন্যথায় অরাজনৈতিক শাসনের পথেই সমাধানের প্রেক্ষাপট তৈরি হতে পারে।
সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীনদের এক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়ন করা এবং না করা দুটোই রাজনীতিকদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ওয়ান ইলেভেনের একবছরে দুপক্ষের মধ্যে দূরত্ব ও অবিশ্বাস বেড়েছে। একই কারণে ওয়ান ইলেভেনের উদ্যোক্তারা সমঝোতার জন্য জুড়ে দিয়েছে নানান শর্ত। সূত্র মতে, উদ্যোক্তারা তাদের এক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়ন ও নিশ্চিত করতে তিন মেয়াদকাল বা ১৫ বছর সময় চাচ্ছে। এজন্য আগামী তিন মেয়াদের সরকার পরিচালনায় বিভিন্ন শর্ত নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এ সময়ে কোন নেতা-নেত্রী বা দল যেন এককভাবে কর্তৃত্ব করতে না পারে সে ব্যবস্থাও আশা করছেন তারা।
উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নির্ধারণ করে দেয়া শর্তগুলো হচ্ছে, যে দলই আগামী তিন মেয়াদকালে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে তারা পরবর্তী তিন মেয়াদের জন্য অন্য সকল দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার বা জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করবে। ওয়ান ইলেভেনের ইতিবাচক পরিবর্তনগুলোকে অব্যাহত রাখতে এবং চলমান রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো এগিয়ে নিতে এ তিন মেয়াদের রাষ্ট্রপতি করতে হবে একজন সাবেক সেনাপ্রধান বা সেনা কর্মকর্তাকে। এ ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ প্রধান হিসেবে যিনি অবসরগ্রহণ করবেন তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতির জন্য বিবেচিত হবেন। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অন্যকোনও ব্যক্তিকে বিবেচনার প্রশ্ন আসলে ওয়ান ইলেভেনের চেতনাকে ব্যক্তিগতভাবে ধারণ করছেন এমন ব্যক্তিদের করতে হবে। অলিখিত এ সিদ্ধান্ত দলগুলোকে কার্যকর করতে হবে।
এছাড়া সরকার পরিচালনার বর্তমান সংসদীয় পদ্ধতি অপরিবর্তিত রেখেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এমনকি সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার একমাত্র ক্ষমতাও ন্যস্ত হতে হবে রাষ্ট্রপতির হাতে। নতুন এ শাসন ব্যবস্থা হবে প্রেসিডেন্সিয়াল পার্লামেন্টারি (প্রেপার) পদ্ধতির যৌথ শাসন। এ সরকারের ভালমন্দ কাজের নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করার জন্য থাকবে শক্তিশালী ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল। অর্থনীতির ক্ষেত্রে মেগনাকার্টা নীতি অনুসরণের জন্য রাজনীতিবিদদের মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে। অঙ্গিকার করতে হবে অর্থনৈতিক খাতের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন কর্মসূচি রাজনৈতিক দলগুলো আগামী ১৫ বছরে ঘোষণা করবে না। ছাত্র, শ্রমিক ও শিক্ষকসহ রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করে এমন কোন অঙ্গ, সহযোগী বা গণ-সংগঠন থাকবে না। রাজনৈতিক দলসহ অন্য সকল ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের পরিবর্তন ও বর্তমান সরকারের সকল কর্মকান্ডের নি:শর্ত বৈধতা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও অন্য সকল ক্ষেত্রের সংস্কার কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।
এসব শর্ত না মানলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনও সমঝোতায় যাওয়া উদ্যোক্তাদের জন্য দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ ধরনের সমঝোতা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উদ্যোক্তাদের বর্তমান যোগাযোগে নতুন মাত্রা পেতে পারে। দলগুলোতে আরও কয়েক দফা ভাঙন সৃষ্টি হবে। এসময়ে আন্দোলনের ফলে ছাত্র সংগঠনগুলো পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বে। বড় দু’তিনটি ছাত্র সংগঠনে এ ধরণের রিক্রুটমেন্ট এবং প্রাথমিক প্র¯'তিও সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দেশব্যাপী খুন, রাহাজানি, চুরি-ডাকাতি, এমনকি ব্যাংক লুট জাতীয় অপরাধও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনি রাজনৈতিক অচলাবস্থায় ওয়ান ইলেভেনের পূর্বের প্রেক্ষাপট চলে আসতে পারে মানুষের সামনে। তখন অরাজনৈতিক সমাধান এবং আবারও একটি অনির্বাচিত সরকারই হতে পারে একমাত্র পরিণতি। আবার দলগুলোর পক্ষে এ ধরনের সমঝোতায় যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ একদিকে দলের নেতাকর্মীদের সামনে এসব শর্তের পক্ষে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না নেতারা। অন্যদিকে নীতি ও আদর্শগত কারণে এসব শর্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার উচিত হলেও ব্যক্তিগত দুর্বলতার কারণে নেতারা কেউ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
সূত্রঃ আমাদের সময়