লাল গোশত খেতে চিকিৎসকরা নানা কারণে নিষেধ করেন। গরু-ছাগলের গোশতকে লাল গোশত বলা হয় সে কথা আমরা সবাই জানি। তবে এবার গবেষকরা বলছেন, অতিমাত্রায় লাল গোশত খাওয়ার সঙ্গে গলা বা পাকস্থলীর বিশেষ ধরণের দু'জাতের ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে । গবেষকদের নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রায় ৫ লাখ পূর্ণ বয়সী মার্কিন নাগরিকের ওপর এক দশক ধরে এ জরিপটি চালানো হয়। জরিপে অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে অল্প কয়েকজনেরই খাদ্যনালী বা পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়েছে। তবে যারা বেশি হারে লাল গোশত খেয়েছেন তাদের এ ধরণের ক্যান্সার বেশি হয়েছে। জরিপে অংশকারীদের মধ্যে যে ২০ শতাংশ লাল গোশত বেশি খেয়েছেন তাদের সাথে কম খেয়েছেন যে ২০ শতাংশ, তাদের তুলনা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, যারা লাল গোশত বেশি খেয়েছেন তাদের খাদ্যনালীর ক্যান্সার, 'স্কোয়ামোস সেল কারসিনোমো' হওয়ার আশংকা তুলনামূলক ভাবে ৭৯ শতাংশ বেশি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, 'গ্যাস্ট্রিক কার্ডিয়া' খাদ্যনালীর উপরের অংশকে বলা হয়। জরিপে দেখা গেছে যে সব নারী-পুরুষ 'হেট্রোসাইক্লিক অ্যামাইনি' বা 'এইচসিএ' নামের একটি উপাদান বেশি গ্রহণ করেন তাদের দেহের এ অংশে ক্যান্সার হতে পারে। উঁচু তাপে রান্না বা গ্রিল করার সময় লাল গোশতে হেট্রোসাইক্লিক অ্যামাইনি নামের ওই উপাদানের সৃষ্টি হয়। লাল গোশত খাওয়ার সঙ্গে কান্সারের সম্পর্ক নিয়ে জরিপের ফলাফল আমেরিকান জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন, ইউ.এস. ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের গবেষক ডা. আমাডা জে ক্রস। তবে লাল গোশত খেলেই যে খাদ্যনালী ও পাকস্থলীতে ক্যান্সার হবে তা কিন্তু এ জরিপে প্রমাণ হয়নি। বরং এ ধরণের গোশত খাওয়ার সাথে এ দুই জাতীয় ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে নতুন জরিপে । ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড এবং আমেরিকান ইন্সটিটিউট ফর ক্যান্সার রিসার্চ দু'টিই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান-২০০৭ সালের একটি গবেষণা পর্যালোচনা করেছিল। সেখানেও প্রক্রিয়াজাত গোশতের সঙ্গে পাকস্থলীর ক্যান্সারের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল। তবে, লাল গোশত খাওয়ার সঙ্গে ক্যান্সারের আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত তথ্যপঞ্জী নেই। তা নিয়ে আরো গবেষণা চালানো উচিত বলে মনে করছেন ডা. আমান্ডা জে ক্রস
সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:২৮