বিপ্লবী চেতনায় মনে হয়, আমাদের সব চাইতে বড় যাতনা হিসাবে দেখা দেবে...
৪৭ এর আন্দোলনে সবার সাথে সাথে আমরাও প্যাক প্যাক করলাম, কিন্তু ডিম খেলো পাকিস্তান।
৭১ এ আন্দোলন শেষে বিজয়ী হয়ে হুজুর মনে করলাম আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামীলীগকে, আওয়ামী নেতারাও বুঝায়ে দিল তারা কি জিনিস!!!
শেষ পর্যন্ত আমাদের ইতিহাসের সব চায়তে শক্তিশালী জননেতা বঙ্গবন্ধুকেও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতেই জীবন দিতে হল।
তার পর কর্নেল তাহেরের মতন নেতারা আন্দোলন করে বিজয়ী হয়ে জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে কি পুরস্কার পেয়েছিল, তাও আমরা জানি।
৯০ এ সৌরাচার বিরোধী আন্দোলন যেই চাচার বিরুদ্ধে করলাম, সেই চাচাই এখন সরকারের দাদা হয়ে মুরুব্বীর সম্মান পাচ্ছেন...
আমাদের বোঝানো হয় আন্দোলন খুবই ভালো জিনিস, “এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় তার”, কাজেই বিদ্রোহী না হলে তুমি কিন্তু কাপুরুষ। আমরাও তাই বুঝে, কোন কিছু না বুঝেই আন্দোলন করে বীর পুরুষ সাজি...
কিভাবে আন্দোলন করলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফল পাবো আর কি করলে হিতে বিপরীত হবে সেইটা নিয়ে চিন্তা করারও আমাদের সময় নাই…
আবার তরুণদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেবার জন্য একটা কার্যকর মূলা হল - বিপ্লব/বিদ্রোহ বিষয়ক ভালো ভালো বিপ্লবী ব্যাপার স্যাপার !!!
প্রায়ই বলতে শোনা যায়. তরুণরা কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করে না, তারা খুব খুবই ভাল ইত্যাদি ইত্যাদি..
তবে বাস্তবতা হল- সকল সন্ত্রাসীর কার্যসম্পাদনের জন্য সামনের সাড়িতে ব্যবহার করা হয় তরুণদের। আবার রাজনীতি বা জঙ্গি গোষ্ঠীর অধিকাংশ ধংস্বাত্বক কাজও করে এই তরুণরাই।
তথাকথিত যেনতেন একটা আদর্শ সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েই তরুণদের বিপথে পরিচালনা করা সম্ভব, সেই সাথে সাথে লোভের ফাঁদের ও সব চাইতে বড় স্বীকার এই তরুণরাই।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কিছুদিন আগে কথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার নামে হাজার হাজার তরুণ শাহবাগে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হাসপাতালের সামনে দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা সড়ক বন্ধ করে দিয়ে, কোটি মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়।
তখন কিন্তু তাদের সবাই শুধুমাত্র বিরানির লোভেই সেখানে জড়ো হয় নি। বরং সেখানে বিপ্লবের ফ্লেবারও দেওয়া লেগেছিল, সাথে সাথে দেশপ্রেমিক সাজার স্বপ্নও ছিল, তবে হয়তো সেই মূলাটা ওত বেশি আকর্ষণীয় ছিল না। তাইতো আন্দোলন কারীদেরকে কেউ কেউ ৭১ এর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তুলনা করলেও, মুক্তিযোদ্ধারা যেখানে মারণাস্ত্রে সজ্জিত প্রশিক্ষিত ভিন দেশী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে লড়াই করে বিজয় চিনিয়ে আনে, সেখানে বর্তমানের তথা কথিত ২য় প্রজন্মের বীর মুক্তিযোদ্ধারা হেফাজতের আন্দোলনে হামলা করার দিনে শুধু মাত্র পুলিশের ধমকেই মঞ্চ ছেড়ে নিরাপদে সরে পরে।