লেখা শুরু করছি এক শতাব্দী আগে থেকে মানে ১৯৯৮ কি ৯৯ সাল হবে, আমি তখন স্কুলে পড়ি। একদিন আমাদের এক আত্বীয় খুব সহজে বেশি টাকা কামানোর একটা লাইনের কথা বলল।এবং তার কথা মতই আমি আর আমার আম্মা গেলাম তাদের অফিসে। তারা খুব সুন্দর ভাবে ২৫০ মি লি কোক থেকে শুরু করে আরো কি কি জিনিস দিয়ে মার্কেটিং এর খরচটা বর্ণনা করে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিল- তাদের নিউওয়ের মাধ্যমে কত সহজ ওয়েতে আমরা কোটিপতি হতে পারি। যাই হোক তার পরবর্তীতে তাদের যুক্তির অসংগতি গুলি দেখিয়ে দেয়ায়, কয়েকদিনের আলোচনার পর তাঁদের কয়েকজন আমাকে বলল, "তোমার কোন টাকা দেওয়া লাগবে না। আমরাই তোমার টাকা দিয়ে দেব, তুমি শুধুমাত্র আমাদের সাথে থাক।" এবং কয়েক মাস পর তারা আমাকে মোবাইল ফোনও কিনে দিতে চাইল। তখন আবার মোবাইল ফোন অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু, তখন আমার মন ছিল খুব বেশি নীতিবান। তাই আমার মন যেহেতু তাদের কর্মকান্ডটাকে প্রতারনা মনে করছিল, তাই আমি তাদের কথায় রাজি হয়নি। যাই হোক তখনকার কথা আজ বলবনা। তার কয়েক বছর পর যখন বাপ্পি দাদা আমাকে ডেসটিনির কথা বলেছিল। সেদিনের কথাও আজ বলব না। আবার, আমার সামনের বাসার রিপন ভাই যখন বলেছিল, মাত্র দুই আড়াই বছরের মধ্য্ই গাড়ি কিনব অনিক, তখন আমি ৯১২ দিন থেকে দিন গোনা শুরু করে আমার জন্য রিপন ভায়ের গাড়ীতে একটা সিট বুক করতে ছিলাম, তারও বিস্তারিত বলব না, আবার মুন্না, সোহেল যখন ডেসটিনির কয়েকটা বই দিয়েছিল যাতে লেখা ছিল- ডেসটিনি কবে থেকে মিলাদের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে, তার কথাও বলছি না। এমনকি মারুফ ভাই যখন বলেছিল অনিককক, খুব তাড়াতাড়ি কোটি পতি হয়ে যাবো, এদিন আর থাকবে না। তখন প্রথমেই আমি যে ইয়ারকি মেরেছিলাম তার কথাও বলব না।
আমি আজকে বলব সেদিনের কথা, যেদিন মারুফ ভাই, আমার পূর্ব পরিচিত তার এক বন্ধুর সাথে করে আরেকজন ডেসটিনি বিশারদকে নিয়ে আমাদের বাড়ি এসেছিলেন।
তো যা হয় সংক্ষেপে বলি আর কি ১মাসে ২জন, ২মাসে ৪জন, ৩মাসে ৮ জন, ৪ মাসে ১৬ জন এইভাবে....................................
করে রাজা আর ভিক্ষুকের কাহিনীর মত আমাকে তিনি কিছুদিনের মধ্যই কোটিপতি বানিয়ে দিলেন। যাই হোক তারপর আমি মারুফ ভাইকে বললাম আপনি কতদিন ডুকছেন, বলল এই ৬/৭ মাস।
তারপর ঐ বিজ্ঞ ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কতদিন।
বলল বছর খানিক।
আমি বললাম ত আপনারা এ পর্যন্ত কত টাকা পাইছেন?
তারা বলল। আমাদের আয়ের কথা বলা নিষেধ আছে।
আমি বললাম, তো এতক্ষন আপনাদের যে- পি এস ডি, লোহা, পিতল, সিলভার, ডাইমন্ড, প্লাটিনাম........... হেনতেন এর আয়ের কথা বললেন, সেগুলো বলা নিষেধ নাই।
আচ্ছা যাক সে কথা। টাকা পেলেই সেই লাইন ভাল, আর না পেলেই খারাপ। এমনতো কোন কথা নেই, তাই আমি বললাম-
- ভাইজান আপনাদের সফট ডিংসের ব্যান্ডটার নাম কি?
- সফট ডিংসের ব্যান্ডটার নাম মানে ?
- মানে সেই ১০ বছর আগে থেকে এম এল এম এর বয়ানে শুনছি,
কোক বানাতে খরচ হয় ১.৫/২.৫ টাকা বিক্রি হয় ১২ টাকা। আর এত লাভ জনক ব্যবসা ১০ বছরেও আপনার কোম্পানি শুরু করতে পারল না।
- আচ্ছা আপনাদের মূল কথা বলছিলেন,
উৎপাদক > ডেসটিনি > খাদক (ভোক্তা) ( ৩টা ধাপ লাভ পাই ২ জন)
আর অন্য ব্যবস্থায়,
উৎপাদক > ডিলার > এজেন্ট > পাইকারী > খুচরা > ভোক্তা ( ৬ ধাপ লাভ পাই ৫ জন)
তারা বুঝল, আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারছি। (তাদের মুখ হাসি হাসি)
তারপর বললাম,
এবার হিসাবে আসেন, আসলে আপনাদের ব্যবস্থায়,
উৎপাদক > ডেসটিনি > প্লাটিনাম > ডাইমন্ড > সিলভার ............> ভোক্তা
আচ্ছা তাও বাদ দিলাম,- আপনাদের কুষ্টিয়াতে ডিস্টিবিউটর কয়জন।
কত জাহাজ(হাজার) যেন বলছিল মনে নাই।
- তো আপনারা দিনে পন্য বিক্রি করেন কয়টা।
উত্তর বলে নাই। তবে সর্বোচ্চ ১০-১৫ হতে পারে।
আর আপনাদের ভোক্তার আগের জন ৫০০০ টাকার জিনিসে লাভ করে ৫০০ টাকার ও বেশি টাকা। আর তার উপরের গুলাও যে কোন ডিলার > এজেন্ট > পাইকারী > খুচরা ব্যবসায়ির চাইতে বেশি লাভ করে।
আর কুষ্টিয়াতে আপনাদের হাজার হাজার ডিস্টিবিউটর দিনে বিক্রি করে বেচাকেনা খুব বেশি হলে ১০-১৫টা পন্য্। আর গোশালার মধ্যে বাড়ি ভাড়া দেয় ১০/১৫ হাজার টাকা। আর কুষ্টিয়ার সব কিছুর সবচেয়ে বড় ডিলার সুরেকা সম্পর্কে কিছু শোনেন। ওদের কম্পিউটার সেকশনের দায়িত্বে আমার এক বন্ধু থাকায়, মাঝে মাঝে মেরামতির কাজে যাওয়াই আমি যতটুকু জানি, তা আপনাদের বলছি। ওদের ইউনিলিভার সেকশনে ডিস্টিবিউটর ৪০ জনের মত। অফিসের অনান্য কাজের লোক সহ সব মিলায়ে ইউনিলিভার সেকশনে আছে ৫০ জনের মত লোক। এবার আপনারাই বলেন বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলায় এই ৫০ জনের মাধ্যমে একদিনে ওরা কত কোটি টাকার মাল বিক্রি করে।
এবার আপনারাই বলেন ডিস্টিবিউশনে কারা বেশি খরচ বাচাতে পারে?
আমি খুব বেশি কুড়ে মানুষ, তাই এখন আর বেশি কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে না।
শেষে আমার অতি প্রিয় সুমন শাহারিয়ার( সুমন ২০০০ সালের দিকেই ডেসটিনির সদস্য ছিল) একটা কথা বলে শেষ করি।
'' অনিক ভাই ডেসটিনিতে যায়ে ৫০০০ টাকা দিয়ে আমি শুধু টাই পরা শিখছিলাম''
আফসুস আমি ডেসটিনিতে যাই নাই, তাই এখনো টাই পরতে পারি না।
আমার চোখে ২