" আপনার আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম কি?"
আনন্দের মাত্রা আর বিষয়ের উপর নির্ভর করে সেটার উত্তর এক একজনের এক এক রকম হবে।
যে আনন্দের সাথে জড়িত থাকে অনেক স্বপ্ন, সাধনা সেই আনন্দের মাত্রাও যেন অনেক অনেক বেশি।
আবার, যখন আপনার উল্লাসের সাথে আরো অনেকের উল্লাস একসাথে মিশে যায় তখন সে মাত্রা বেড়ে যায় অনেকগুন!
স্কুল-কলেজে রেজাল্টের সময়, ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোন জয়ের সময় খেয়াল করেছেন মানুষের আনন্দ কতগুন বেড়ে যায়!!
তাহলে, একবার ভাবুন তো যে আনন্দের সাথে মিশে আছে কোটি মানুষের আবেগ, প্রাণখোলা হাসি, বুক ফাটা কান্না.......
কেমন হবে তার বহি:প্রকাশ!?
কতটা জোরালো হবে সে উল্লাস ধ্বনি!!
সামনেই আসছে ১৬ ডিসেম্বর। আমাদের বিজয় দিবস।
বিজয়ের আনন্দে ভেসে যাওয়ার মত একটি দিন।
সমাজের সব পেশার, সব বয়সের মানুষের জন্য এমন বিজয়ের উপলক্ষ আর কয়টি আছে?
সেটা আবার পালিত হয়ে আসছে ৩৯ বছর ধরে !
এমন একটি দিনে আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম কেমন হওয়া উচিত?
অবশ্যই যেন-তেন ভাবে সেটা প্রকাশ করা যায়না।
তার জন্যই তো আমরা আয়োজন করি নানা অনুষ্ঠানের।
কিন্তু এই সব অনুষ্ঠানে কতটা প্রতিফলিত হয় সেই সব মানুষের চেতনা, যাদের কারণে এই উপলক্ষ আমরা পেয়েছি??
................................................................................................................
নয় মাসের যুদ্ধের ফসল এই স্বাধীনতা।
যারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলেন, তাঁরা কি জানতেন যে নয় মাসেই যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে???
আদৌ যুদ্ধ শেষ হবে কিনা! আদৌ তিনি ফেরত আসতে পারবেন কিনা!
এত অনিশ্চয়তার মাঝেও কেন গেলেন?? কতটা দেশপ্রেম থাকলে, মায়ের জন্য কতটা ভালোবাসা থাকলে এভাবে যুদ্ধে যাওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে শ্রদ্ধায় মন ভরে যায়।
"তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর, পাড়ি দিবো রে"
চোখ বুজে একবার কল্পনা করে দেখুন তো এমন একটা পরিস্থিতির কথা। !
তাঁদের সেই চেতনার সাথে আপনার, আমার চেতনার দূরুত্ব অনেক বেশি।
দেশের সেবার করার জন্য তাঁরা নিজের রক্ত বিলিয়ে দিতে কুন্ঠা বোধ করেননি। আর আমরা??
আসুন, যে মহান বীরদের জন্য আমাদের এই বিজয় পেয়েছি, সেই বিজয়ের দিনে আমরা দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করি।
গতানুগতিক পোস্টের মত আমার এই পোস্ট এখানেই শেষ নয়। বরং শুরু।
....................................................................................
কিভাবে করবেন দেশের সেবা??
সেবা করার কাজটি খুব একটা কঠিন না। এজন্য বাঘ-ভাল্লুক শিকার করতে হবে না।একটা জঙ্গল কেটে লোকালয় বানাতে হবে না।
ছোটখাট অনেক কাজ করেও দেশের সেবা করা যায়। এমন কাজ, আপনার সামনে যা হয়তো কখনো সেবামূলক কাজ হিসেবে কেউ উপস্থাপন করেনি।
সেবার কাজটি কত আনন্দদায়ক আর সহজ সেটা আমাদের সামনে তুলে ধরেছে কমিউনিটিঅ্যাকশন (CommunityAction) ও 1di (One Degree Initiative)
কেমন ধরনের সেবা:
█ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য এলাকার সবাই মিলে কিছু করতে পারেন।
█ আপনার গ্রামে বা আশেপাশের কোন স্কুলে লাইব্রেরী স্থাপন করে দিতে পারেন
█ বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলে রক্ত দান কর্মসূচীতে যোগদান করতে পারেন।
█ সামনেই আসছে শীতের দিন। আপনার বাড়ির চারপাশে একটা মানুষও যেন এমন না থাকে, যিনি শীতে কষ্ট পাবেন-- এই লক্ষ্যে কাজ করতে পারেন।
█ যাদের সামর্থ্য আছে, তারা নলকূপ স্থাপন করে দিতে পারেন, যেখানে মানুষ পানির জন্য কষ্ট করছে।
█ কোন সামাজিক সমস্যার বিরুদ্ধে সবাই মিলে কোন ক্যাম্পেইন করতে পারেন।
█ বর্তমান সময়ে ইভটিজিং একটা প্রকট সমস্যা হিসবে দেখা দিয়েছে। এই অপরাধ নির্মূলে সামাজিক ঐক্য অনেক জরুরী। আপনি আপনার পরিচিত মানুষদের নিয়ে ক্যাম্পেইন করতে পারেন।
আরো দেখুন: গত বছর যেভাবে পালন করা হয় বিজয় দিবস
গত বছর কমিউনিটি অ্যাকশন ও 1di (One Degree Initiative) , এর এই আহবানে সাড়া দেয় দেশ ও বিদেশের ৪২ টি প্রতিষ্ঠান!
দেখুন ছবি
আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই বছর।
এবার কমিউনিটিঅ্যাকশনের সাথে আরো আছে BYEI (বি ওয়াই ই আই)
হাজারো সমস্যায় জর্জরিত আমাদের এই দেশ। এই সমস্যা গুলোর সমাধান আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। আপনি-আমি যদি এগিয়ে না আসি, তাহলে মঙ্গলগ্রহ থেকে কেউ এসে সমস্যা গুলোর সমাধান করে দিয়ে যাবে না।
আসুন, সেবার মাধ্যমে প্রকাশ করি আমাদের বিজয়। বিজয়ের উল্লাস।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৫৬