ইউনুস
এই ইউনুস
এই টাউট ইউনুস...
জী স্যার...
এতোক্ষন পর !
এতো সকাল হয়ে গেলো এখনো অফিসে কেউ আসলো না যে !
রাজুটা কোথায় আজ ?
স্যার, ও তো বিশ্ব চিটার!
মিনিট তিনেক বাদে আবার
ইউনুস
এই ইউনুস
এই ব্যাটা ইউনুস...
আজকে দুপুরে কি খাবারদাবারের আয়োজন করছ?
স্যার , আজকে তো রান্না হবে না, স্যার!
বিরিয়ানি দিয়েই চালিয়ে দিবো?
না না সে কেমন কথা!
আমি যে বিরিয়ানী একদম পছন্দ করি না!
আমার জন্য পাঁচ প্রকারের ভর্তা, সাদা ভাত, চিংড়িমালাই
নিয়ে এসো ক্যাফে ইউসুফ থেকে।
ঠিক আছে স্যার...
ইউনুস
আজ আরিফ সাহেব আসবেন না নাকি?
স্যার , উনি রওনা দিয়েছেন।
এতো দেরি করে আসে এরা।
অফিসে কি একা একা ভালো লাগে বল !
ফোনের রিসিভারটা তুলে ডায়াল করতে লাগলেন এইবার
হ্যালো, ম্যাডাম কি ব্যাপার!
আজ যে দেখা নেই আপনার?
মনটা বড্ড খারাপ হয়ে আছে।
নেই আপনি অফিসে।
প্লীজ আসুন না চলে অফিসে।
একা একা একদম।
গল্প করার মত কেউ নেই।
প্লীজ আসুন না চলে...
ঘণ্টা দুয়েক থেকেই না হয় আবার চলে যাবেন।
ইউনুস
এই ইউনুস...
স্যার, এই নেন চা দিয়ে আমিত্তি খান।
এই সকালেই মিষ্টি!
একটা কামড় বসিয়ে দিয়েই
একটু ঝাল কিছু হলে ব্যাটার হত।
স্যার, ম্যাডামকে কল করেছিলেন বুঝি!
তোর এতো কিছু জেনে কি লাভ!
না স্যার, এমনিতেই।
স্যার ম্যাডাম না আসলে আসলেই অফিসটা
খাঁ খাঁ করে যেন।
ম্যাডাম আর আপনি এতো সুইট করে কথা বলেন,
শুনতেই খালি মন চায়।
রুনা লায়লার গানের সুর যেন হার মেনে যায় তখন!
আয়েস করে চায় চুমুক দিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে
ইউনুস
এই ইউনুস...
তোমার ক্রীমটা দিয়ে যাও তো ।
স্যার ক্রীম তো নেই আমার কাছে,
ভ্যাজলিন আছে স্যার।
ও হাঁ, ওতেই হবে।
হাতটা কেমন যেন রুক্ষ হয়ে আছে।
একটু মুখেও মাখা দরকার।
এই নেন স্যার।
ইউনুস
এই ইউনুস
যাচ্ছো কোথায় আবার ?
স্যার একটু নীচে যাচ্ছি।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসছি।
এখন কেন আবার ?
অফিসে কোন কাজ নেই নাকি !
কি যে কর সারাদিন !
একবার নীচে একবার উপরে!
জত্তসব আমড়া কাঠের ঢেঁকি!
স্যার কিছু বললেন আমাকে?
কি আর বলবো আচ্ছা যাও
তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে।
ইউনুস
এই ইউনুস
আরে যাবে আর কি!
এতো তাড়া কিসের।
যাওয়ার আগে রুনা লায়েলার সেই ক্যাসেটটা অন করে দিয়ে যাও।
একটু গান শুনতে শুনতে চোখ বুজে নেই।
জী স্যার দিচ্ছি এখুনি।
ঘণ্টা দেড়েক পর
ঘুম থেকে উঠে
ইউনুস
এই ইউনুস
এই দেখো লাঞ্চ টাইম হয়ে এলো দেখছি।
জী স্যার লাঞ্চ নিয়েই আসছি।
আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি
তুমি লাঞ্চ রেডি কর।
জী স্যার করছি।
স্যার এটা আপনার জন্য।
একটু হেঁসে বেশ বেশ।
তোমার তো অনেক খেয়াল আমার প্রতি!
জী স্যার আপনি আছেন বলেই তো আমি আছি।
দুজনের হাঁসি।
কাশ্মেরী জর্দায় বাহারী মশলায় ভরা পান
চিবুতে চিবুতে দিলো ফেলে অফিসের দেওয়ালে
পানের পিচকি।
অফিসের সাদা দেওয়াল রঙিন হল।
চুনের একটু অংশ লেগে রইলো টেবিলের গায়ে।
ইউনুস
এই ইউনুস...
আজ আসি তবে
হবে তবে দেখা কাল।
সরকারী অফিস আমার।
আহ !