আমাদের বয়স বেড়ে চলছে দিনে দিনে
একটা সময় থেমে যাবো আমরা।
নিয়মের মাধ্যমে বিদায়ের
শেষ আয়োজনে অনেকেই শরীক হবে
একলা যাওয়া একলা আসা
নিয়ম মেনেই চলছি আমরা।
ঘটে যাওয়া একজীবনে অনেক কিছুই হতে ইচ্ছে করতো
তবে খুব বেশি হয়তো ইচ্ছে করতো
যদি আবার বয়স চুরি করতে পারতাম
যদি আবার মায়ের কোলে গিয়ে
ছোট্ট একটি দেহ নিয়ে মাকে জড়িয়ে
শুয়ে থাকতে পারতাম।
যেদিন থেকে ছোট ছোট স্বপ্ন দেখতে শিখলাম
সেদিন থেকেই বড় কবে হবো সে ভাবনায় বুঁদ হয়ে থাকতাম
এই সেই কত কি হব আমি !
কৈশোরে কত স্বপ্ন সেই রঙিন ঘুড়ির সাথে আমার ছিল
আজো আছে , তবে সেই ঘুড়িটা আর রঙিন নেই
ঘরের এক কোনে ছিঁড়ে পড়ে আছে আহত একটি ঘুড়ি।
পড়াশুনা থেকে মুক্তি দিবে কবে আমায় !
পড়াশুনা যেদিন তোমাকে ছাড়বো
সেদিন দেখো আমিও তোমাকে বুড়ো আঙুল দেখাবো
অনেক জ্বালায়ি মেরেছ ,
তোমার জন্য কত কথা প্রতিদিন শুনে যেতে হচ্ছে
এই ভাবনা ভেবে অনেকগুলো বিকেলে
দূর্বাঘাস গুলো ছিঁড়ে গেছি
কিন্তু মুক্তি জিনিসটা আসলেই কঠিনতম
বুঝতেও শিখিনি তখন।
পড়াশুনা না করা ছেলেগুলোকে দেখেই বেশি আনন্দ লাগতো
ওরা যায় না ইস্কুলে। যখন ইচ্ছা খেলতে পারে
যখন ইচ্ছা যেখানে যায়। কই আমি তো পারি না
এভাবেই অনেক কিছু পারা আর না পারার মাঝে
বেড়ে উঠতে থাকা।
এভাবেই একটি জীবনের
একটি ধাপ অতিক্রম করা।
একটু একটু সরু গোঁফ তখন উঁকি দিচ্ছিল
তখন কেমন যেন বদলে গেলাম
বদলে গেলো অনেক ধরনের অভ্যেস
নতুন যোগ হল জীবনে অনেক কিছু,
এই যেমন , কাউকে আকৃষ্ট করতে গেলে
যা যা করতে হয় আর কি !
গায়ে শুধু নতুন জামাই তখন থাকতো না
সুগন্ধিও যোগ হতো সে জামার উপরে।
চুলগুলো আস্তে আস্তে ঢেউ খেলতে লাগলো
বারে বারে আয়নায় খুঁত ধরতে ছুটে আসা
যতটুকু পরিপাটী করে রাখা যায় আর কি !
সব কিছু যেন কিশোরীর আহ্বান
যাকে না বুঝেও কেমন যেন আকর্ষণে ভালো লেগেছিল।
যে আকর্ষণ শুধু অবাধ্য করে তোলে নিজেকে।
কেটে গেলো এভাবেই অনেকটা সময়।
কিশোরী এভাবে চলেও গেলো ।
অনেকেই কেন যেন ভালো লাগতো
ভালো লাগার সংজ্ঞা অসঙ্ঘায়িত
এই ভালোলাগা গুলো ছিল অস্পুট ,
কোনদিন বলা হয়নি। শুধু এঁকে গেছি
এক একটি সময় ধরে।
বিষাদ, কষ্ট, যন্ত্রণা নামক শব্দগুলো তখনো ভারি বেশ
বুঝতে পারতাম না একদম।
মাঝে মাঝে কেমন যেন বুকটা ভারী হতো
মনে হতো গুমরে কান্না আসে
কিন্তু চোখে আর জল আসে না।
কে যেন বাড়িয়ে দিলো একটি চুরুটের শেষ অংশ
এও বলেছিল, আরে সব চিন্তা টানে টানে চলে যাবে।
দে না একটা টান !
দিলাম একটা টান।
অবশ্য প্রথম প্রথম বেশ কাশি আর দম বন্ধ হয়ে আসতো।
অতঃপর লুকিয়ে লুকিয়ে টান দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম।
এভাবেই সরু গোঁফের আড়ালে দিন যাচ্ছিল
এভাবেই আঠারো ঘরে প্রবেশ হয়েছিল ।
আঠারোতে এসে পড়লাম !
পড়লাম অন্য কোথাও
অন্যভাবে যেন আবার গড়ে নিতে হবে নিজেকে
এভাবেই বুঝি ভাঙা গড়ার নিঃশব্দ প্রতিযোগিতা
আমাদের এক জীবনে।