ক্ষমা করবেন পুরাতন হলেও আপনাদের ভাল লাগবে বলে একখানা কচি হাতের লেখা চিঠি (সংগৃহিত) পোষ্ট করলাম।
এটি একজন অর্ধশিক্ষিত মেয়ের হাতের লেখা যার দাঁড়ি ও কমার ব্যাপারে কোন সঠিক ঞ্জান নেই। তো শুরু হোক চিঠি পড়া।
(আপনি ইচ্ছা করলে সঠিকভাবে দাঁড়ি-কমা দিয়ে চিঠিখানা লিখতে পারেন)
'ওগো' প্রাণের সোয়ামী। আমার সারাটি জীবন শুধু প্রবাসী হয়েই থাকিলে। এই ছিলো আমার কপালে। আমার পা এবং পেট আরও ফুলিয়া উঠিয়াছে, ক্ষেতের সব ফসল। নষ্ট হইয়া গিয়াছে তোমার আদরের বোন। স্বামীর বাড়ী যাইতে চায় না কালো বিড়ালটা। সারাক্ষণ শুধু মিউ মিউ করিয়া ডাকে দুষ্ট বাতাস। গত রাএত লাল ব্লাউজটা ছিঁড়িয়া ফেলিয়াছে তোমার বড় ভাই। খুউব চিন্তার মধ্যে আছে প্রখর রৌদ্র। দেখিয়া মনে হয় মাথাডা পাডাইয়া দিবো চেয়ারমেন সাব। লাঠিয়াল বাহিনী লইয়া পূবের ক্ষেত দখল করিয়াছে সংগ্রামী ইঁদুর। গোলার ধান সব শেষ করিয়াছে আমার দুলা ভাই। বিদেশ চলিয়া গিয়াছে শিয়াল। বড় মোরগটি খাইয়া পালাইয়াছে তোমার চিঠি। আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে মায়া বড়ি, নিয়ম মাফিক খাইয়া যাইতেছি গন্ধরাজ কেশতৈল। একটা লাল ব্লাউজ এবং একজোড়া ব্রা পাঠাইয়া দিয়ো লেদির জন্য। একটা ডানো দুধ দিয়ো ক্ষেতের জন্য। ওষধ কিনিয়াছি একমন। ধান তিনশ পঁচিশ টাকা, আমার মাথা। খুব জ্বালাতন করিতেছে তোমার ভগ্নিপতি। যৌতুক চাহিতেছে আমাকে। অনেক গালাগাল করিয়াছে, কেমন আছ। তুমি আমার একমাত্র বাবা। অসুস্থ হইয়া পড়িয়াছে দেয়াল ঘড়িটা। হারানো গিয়াছে বাড়ীটা। জলে ডুবিয়া গিয়াছে তোমার আদরের লেদী। ইসকুলে যাইতে চায় না ছাগলটা। শুধু ঘাস খাইয়া ঝিমাইতেছে তোমার মা, পেটের অসুখে ভুগিতেছে উঠানটা।আজ ডুবিয়া গিয়াছে ঘরের চাল, স্থানে স্থানে ফুটো হইয়া গিয়াছে গাভীর পেট। দেখিয়া মনে হয় বাচ্চা দিবে সেলিমের বাপ। রোজ আধসের করিয়া দুধ দেয় রহিমের বৌ। রান্না করিতে গিয়া হাত পোড়াইয়া ফেলিয়াছে কুকুরছানাটা। সারাদিন লেজ নাড়াইয়া খেলা করে বড় খোকাটা। দাড়ি কাটিতে গিয়া গাল কাটিয়া ফেলিয়াছে সেফালির মা। প্রসব বেদনায় ছটফট করিতেছে সেফালির বাপ।বার বার ফিট হইয়া গিয়াছেন ডাক্তার। আসিয়া দেখিয়া গিয়াছেন অনেকেই। বলিতেছে তোমাকে অবশ্যই বাড়িতে আসতে না।আসলে আমি আর তোমাকে ভালবাসবোনা।
ইতি---
তোমার স্ত্রী
রমিজন
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:২৩