কথায় বলে বিপদের কোনো ‘মা-বাপ’ নাই। ধরা যাক, আপনি দিব্যি সুস্থ মানুষ সকালে অফিস বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলেন। সেখানকার কাজ সেরে ফিরতি বাসেও উঠলেন ঠিকঠাক। পথিমধ্যে গাড়িটা কোনো দুর্ঘটনা ঘটালো, আর আপনি আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন।
এরপরের সম্ভাব্য ঘটনা কী কী হতে পারে?
কেউ এসে আপনাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। সেখানে ডাক্তাররা হয়তো চিকিৎসাও করবেন যথানিয়মে। কিন্তু, বাসার লোকজন? ততক্ষণে চিন্তা করা শুরু করে দেবে যে কী হলো, এখনো এলো না, কোথায় গেলো... এসব। হয়তো দিনশেষে বাসায় গিয়ে দেখবেন স্বয়ং আপনার মা/বাবা অন্য কোনো প্রিয়জনই সংজ্ঞাহীন!
ভাবছেন, এত কাহিনী কেন হবে - আপনার আইডি কার্ড দেখলেই তো যে কেউ পরিচয় জানবে। যদি আইডিটা সাথে রাখতে ভুলে যান? মোবাইল ফোন আছে – তাই না? এখানেই সমস্যা!
আপনি-আমি তথা আমাদের সবার মোবাইলেই পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীসহ আরো অনেকের নম্বর সংরক্ষণ করা থাকে ঠিকই, কিন্তু এসবের মাঝে যে কোনটি কার নম্বর– তা আর কেউ জানে না।
বাইরের মানুষের নিশ্চয়ই কোনোভাবে জানতে পারার কথা না যে আমি আমার বাসার নম্বর ‘ABC’ বা আমার স্ত্রীর নম্বর ‘লাভ’ চিহ্ন দিয়ে সাংকেতিক ভাষায় লিখে রেখেছি।
তাই, কখনো যদি আপনার বা আমার সাথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে আর এসময় কেউ ফোনটি পেয়ে সাহায্য করতে চায়ও, তবুও সে খুঁজে পাবে না আমাদের নিকটজন কারুর নম্বর!
প্রত্যেকের ফোনে কাছের-দুরের অনেকের নম্বর সে’ভ করা থাকলেও এটা ঠিক করা নেই যে কোনো একটা বিপদে কিংবা প্রয়োজনের মুহুর্তে সবার আগে কাকে ডাকতে হবে... আর, এ প্রসঙ্গেই এই ‘আইসিই’ ক্যাম্পেইন।
আইসিই (ICE)
আইসিই মানে হচ্ছে ইন কেস অফ ইমার্জেন্সি। যেকোনো সময় বিপদে পাশে পাওয়া যাবে নিকটস্থ এমন এক বা একাধিক মানুষের নম্বর আগে থেকেই ফোনবুকে আলাদা করে রাখা।
আইসিই’র সর্বজনবিদিত নিয়মটি হলো ICE1, ICE2, ICE3 নাম দিয়ে নম্বরগুলো সংরক্ষণ করা যেন আপনি কোনো দুর্ঘটনায় পড়লে কেউ আপনাকে উদ্ধার করামাত্র আপনার নিকটজনদের জানাতে পারেন।
বহু দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন প্যারামেডিক, বব ব্রওটশে, যিনি আইসিই ধারণার প্রবক্তা, তিনি জানান- প্রায়ই দেখা যায় হঠাৎ বিপদের সম্মুখীন হলেও সবার কাছেই মোবাইল ফোন থাকলেও শুধু থাকে না কাকে সেই বিপদের কথা জানানো যায় - এমন কোনো নির্দেশনা।
তাই, আপনার মোবাইল ফোনটি হাতে নিন এবং সেখানে এখনই জরুরী প্রয়োজনের জন্য ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট ICE1, ICE2, ICE2 নামে আলাদা করে সে’ভ করে রাখুন। শুধু নিজের জন্য না, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জানান এবং তাঁদের ফোনেও আইসিই সে’ভ করে দিন। ব্লগপোস্টটি কিংবা চাইলে কেবল বার্তাটিও শেয়ার করতে পারেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩