সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী অফিসে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামানো যাবে না --
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন বলেছেন যে, হাসপাতাল ও হোটেল-রেস্তোরা ছাড়া সবধরনের অফিস, ব্যবসা ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট এবং আবাসিক ভবন এই কড়াকড়ির আওতায় আসবে৻
আপনি জানেন কি, এসির কারণে কি ক্ষতি হচ্ছে আপনার শরীরের ??---
১. এসি ঘরের তাপমাত্রা প্রাকৃতিক তাপমাত্রার চেয়ে কম হয়। এমন পরিবেশে শরীরকে তার স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য অধিক পরিশ্রম করতে হয়। তার ফলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
২. সারাক্ষণ এসিতে থাকলে শরীরে রক্তসঞ্চালনে বিঘ্ন ঘটে। এর ফলে বিভিন্ন অংশের মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প সৃষ্টি হয়, এবং মাথা ব্যথা দেখা দিতে পারে।
৩. এসি ঘরে তাপমাত্রার অদলবদল হয় না। ফলে এসি ঘরে থাকতে থাকতে শরীরও এক ধরনের তাপমাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কোনো কারণে সেই তাপমাত্রার চেয়ে গরম বা ঠাণ্ডা অবস্থায় থাকতে হলে শরীর সেই তাপমাত্রার সাথে চট করে মানিয়ে নিতে পারে না। এর ফলে উদ্বেগ কিংবা স্ট্রেসের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
৪. দিনে অন্তত চার ঘণ্টা এসি ঘরে থাকা যাদের অভ্যেস, তাদের মিউকাস গ্ল্যান্ড স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে তাদের সাইনাসের সমস্যা দেখা দেয়।
৫. এসির ফিল্টার যদি অনেক দিন পরিষ্কার করা না হয়, তা হলে এসি থেকে নির্গত হাওয়ায় অনেক সময়ে ধুলোবালি কিংবা ব্যাকটেরিয়া মিশে যায়। এর ফলে সর্দি-কাশি কিংবা ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
৬. এসি ঘরে স্বাভাবিকের তুলনায় আর্দ্রতা কম থাকে। এর ফলে স্কিনের ড্রাইনেস বা শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়।
৭. এসি শুধু ত্বক নয়, চোখকেও শুষ্ক করে দেয়। এর ফলে চোখে চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, চোখ থেকে পানি পড়া— প্রভৃতি রোগের সৃষ্টি হয়।
৮. এসি ঘরে থাকলে হাঁটু, কোমর, কনুই কিংবা ঘাড়ের কার্যকারিতাও প্রভাবিত হয়। সাধারণত এই সমস্ত জয়েন্টে এসির হাওয়ার প্রভাবে যন্ত্রণা দেখা দেয়।
৯. দীর্ঘ সময় ধরে এসি ঘরে থাকলে অ্যাজমা অর্থাৎ হাঁপানির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদি আপনার ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার রোগ কিংবা ধুলোর অ্যালার্জি থেকে থাকে, তা হলে এসি ঘরে না থাকাই ভালো।
১০. এসি ঘরে দীর্ঘক্ষণ থাকলে ধমনী বা শিরা সংকুচিত হয়ে যায়। এর ফলে দেহে রক্ত সঞ্চালন প্রভাবিত হয়।
এ তো গেল সমস্যা। কিন্তু গরমকালে এসি না চালিয়ে থাকাও তো সম্ভব নয়। আর অফিস যদি এয়ারকন্ডিশনড হয়, তা হলে তো এসি বন্ধ করার কোনো উপায়ই নেই। তা হলে কী ভাবে নিজেকে রক্ষা করা যাবে এসির কুপ্রভাব থেকে।
কয়েকটি কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে। যেমন—
১. অফিসে যদি এসি থাকে, তা হলে এক-দু’ঘণ্টা বাদে বাদে এসি ঘর থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন কোনো জায়গায় পাঁচ-সাত মিনিট কাটিয়ে আসুন।
২. বাড়িতে এসি থাকলে ঘণ্টা খানেক বাদে বাদে পাঁচ-সাত মিনিটের জন্য এসি অফ করে দিন।
৩. বাড়ি হোক বা অফিস- চেষ্টা করুন, এসির হাওয়ার এক্সপোজার যেন সরাসরি মাথায় না লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯