ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে পেলাম। বাংলাদেশে করোনাতে প্রথম মৃত্যুর পর সেই ব্যাক্তির সম্ভবত জানাজা-ও হয়নি। ভয়ে কেউ কাছে যায় নাই। একজন ম্যাজিস্ট্রেট দূর থেকে শুধু মনিটর করেছেন। লাশের সংখ্যা আরও বাড়লে গণকবর হবে। এমনকি দাফনের লোকের সংকটে পরবেন। হয়ত চাইনিজ স্টাইলে পুড়িয়ে ফেলতে পারে - যাতে বিপুল সংখ্যক লাশের থেকে জীবাণু ছড়াতে না পারে।
ইটালি থেকে মেয়ে বেড়াতে এসেছিল। যে কিনা হোম কোয়ারিন্টিনের নিয়ম মানে নাই। ফলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বাবা এই ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আর মেয়ে সুস্থ হয়ে ইটালি ফিরে যায়। পিছনে বাবাকে 'খুন' করে চলে গেলো।
যিনি মারা গেলেন, ইনিও মসজিদে নামাজ পড়তে গেছেন, ইচ্ছামত ভাইরাস ছড়িয়েছেন।
আর নিজে মারা যাবার পর তার লাশ দেখার ভাগ্য কারো হয় নাই। নিজের পরিবারের কেউ যায় নাই। আর আত্মীয় বা প্রতিবেশী বা সহকর্মী তো শেষ দেখা দেখতে যাবার প্রশ্নই উঠে না।
আপনি কি এরকম নিজের বা নিজের পরিবারের কারো এরকম মৃত্যু চান?
যদি আপনি বিদেশে থাকেন, তাহলে ভুলেও বাংলাদেশে ফেরত আসবেন না। আর আসলেও ১৪ দিন বাসায় নিজের রুম থেকে বের হবেন না, সবার থেকে আলাদা থাকুন।
যারা মসজিদে যাবার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তারা কি চাচ্ছেন দলে দলে মুসলমান মারা যেয়ে মসজিদ পার্মানেন্টভাবে খালি হয়ে যাক? আপনার এই জিদে কার মুনাফা হবে? কিছুদিন ঘরে একা নামাজ পড়লে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে? যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ বিদেশ থেকে না এসে থাকেন - তাহলে ঘরে বাবা, ভাই, চাচা, দুলাভাই সবাইকে নিয়ে জামাত করলে কি সমস্যা হবে? এখানে ঈমানের পরীক্ষার কিছু নাই। বাংলাদেশের ৯০% মানুষ মুসলিম, আর বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ রাষ্ট্র। সারাদিন যখন দুর্নীতি চলে তখন ঈমানী জোশে কেউ কি বলছেন, "আজকে থেকে কাউকে ঘুষ দিব না, হারাম কামাই করব না। নিজের জীবন গেলে যাবে কিন্তু মুখ দিয়ে একটা মিথ্যা কথা বলব না। কোন জায়গায় অন্যায় হতে দেখলে পুলিশ, মাস্তান, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ যেই হোক, সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করব।"
যারা মুখে মাস্ক পরছেন না, এই কথা বলছেন যে আল্লাহ যখন মৃত্যু দিবে তখন হবে। আপনারা কি জীবনে ফার্মেসিতে যান নাই? তখন কি ঈমানের জোর ছিল না? তখন কি জন্য শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করে প্যারাসিটামল খাওয়া বাদ দেন নাই?
করোনা-য় পূর্ন চিকিৎসা পেলে মৃত্যুর হার সাধারণত ৩% - সেটা তাও বৃদ্ধরা। আপনার পরিবারে বা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বৃদ্ধ নাই? আর যারা জীবিত থাকবে তাদের ফুসফুসের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হবে ৩০% অর্থাৎ আপনি পরবর্তীতে কোন ভারী কাজ করতে পারবেন না। সারাজীবন অল্পতেই অসুস্থ হবেন। গড় আয়ু অনেক কমে যাবে। যার বয়স এখন ২০ বা ৩০ তিনি হয়ত ৪৫ বা ৫৫ তেই বিদায় নিবেন।
সিদ্ধান্ত আপনার।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:২৯