এই বিশাল মহাবিশ্বে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকারা হারিয়ে যায় না, যার যার নিজ অবস্থান থেকে ঠিক ঠিক নিজ জাত চিনিয়ে যায় সগৌরবে। হয়তো এই বিশাল ভ্রম্মান্ডে তাদের অবদান নিতান্তই শূণ্যের কোঠায়। তবুও সে শূণ্যের কোঠাও একীভূত হয়ে রূপ নেয় এই মহাবিশ্বে। কারণ কোন চেষ্টাই এবসলিউট জিরো নয়। এমনকি পরাজয় ও এবসলিউট জিরো নয়। কারণ, পরাজয়টা হয়তো বা সাময়িক, কিন্তু অভিজ্ঞতা ক্রমবর্ধমান। তাই পরাজয় ও কোন না কোন ভাবে অবদান রাখে পরবর্তী জয়ে। তবে এই গল্পটি পরাজয়ের নয়। স-মহিমায় সগৌরবে অর্জিত কোন এক জয়ের।
যুদ্ধ পরিচালনা হয় বিশাল বড় বৃত্তে। যার সীমা পরিসীমা কদাচিৎ আলোচিত। আর এই বৃত্তের কেন্দ্র একাই বৃত্ত কে সুরক্ষা দেয় না। দেয় বৃত্তের ভেতর অবস্থিত প্রতিটি বিন্দু। হোক তা ক্ষমতাধর অথবা কোন ক্ষুদে সৈনিকের একটি গুলি। প্রতিটি বিন্দু কণা রক্ত, প্রতিটি বিন্দু পরিমাণ পদক্ষেপ এক্ষেত্রে একেকটি মহান গল্প, স্বর্ণাক্ষরে লিখা ইতিহাস। ঠিক তেমনই এক গল্প নিয়েই তৈরি এই গল্প। যা আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করে এসেছি।
বেশ কিছুদিন যাবত রিভিউ লিখার বাইরে থাকায় খানিকটা মরচে ধরেছে বৈকি। তাই ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টি তে দেখার আবেদন রইল, আর আমার রিভিউ বরাবরই গতানুগতিক নয় এও জানিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। Greyhound - তেমনই এক সৈনিকের গল্প। একজন ক্ষুদে সৈনিকের মাথা উঁচু করে শত্রুর মোকাবেলা করার গল্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যোগদানের কিছু মাস পরের ঘটনা। সমুদ্রপথে মিত্র পক্ষের বহর সুরক্ষিত অবস্থায় গন্তব্যে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব পরে এক অনভিজ্ঞ এক নেভি অধিনায়কের উপর। যেটা তার প্রথম মিশন, নেভি অধিনায়ক হিসেবে। আর এই অনভিজ্ঞ অধিনায়কের চতুরতা, বিচক্ষণতার সর্বোচ্চ পরিমাণ পরীক্ষা হয় এই মিশনে। যেখানে তাকে লড়তে হয় জার্মান সাবমেরিনের এক বহরের সাথে। যেখানে ৪৮ ঘণ্টার এক বিশাল সময় ধরে কোনরকম এয়ার সাপোর্ট ছাড়া লড়াই করে যায় Greyhound নামের এই যুদ্ধ জাহাজ ও তার সাথের অন্য যুদ্ধ জাহাজগুলো। আর এই ৪৮ ঘণ্টার সময়টুকু কিভাবে বিচক্ষণতা আর বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তের দরুন লড়াই করবার গল্প নিয়েই এই চলচ্চিত্র। যারা যুদ্ধের ইতিহাস ভিত্তিক চলচ্চিত্র পছন্দ করেন তাদের জন্য অবশ্যই রিকমেন্ড করবো। সাধারণ ভিউয়ারদের ও বলবো , নিরাশ হবেন না। আর Tom Hanks এর অভিনয় বরাবরই আপনাকে মুগ্ধ করে এসেছে বৈকি, চলচ্চিত্রের মূল ভূমিকায় আছেন তিনি।
আই এম ডি বি লিংক
যদিও কোণ নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক ঘটনার উপর নির্ভর করে মুভিটি বানানো হয়নি। এত মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন ঘটনার উপর নির্ভর করে C.S. Forester’s 1955 novel, The Good Shepherd এর ২৭০ পৃষ্ঠার উপন্যাসের ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। যেখান শুধুমাত্র রণ-যুদ্ধের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। আশা করি চলচ্চিত্রটি উপভোগ্য হবে আপনাদের জন্য, নিরাশ হবে না বৈকি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২০