জীবন থেমে থাকে না, কারো জন্য।
সময় যেমন আপন গতিতে চলে, প্রকৃতি সময় কে কখনো থামিয়ে দেয় না! থেমে যায় সত্তা! থেমে যায় সত্তার নিজস্ব জীবন। তবুও সময় এগিয়ে চলে আপন গতিতে! আর থেমে থাকা সত্তা পিছিয়ে পরে সময় থেকে, জীবনের মূল গতিপথ থেকে, পিছিয়ে পরে অন্য সবার থেকে! এটাও নাহয় কঠোর চিরন্তন সত্যগুলোর মতই একটি সত্য!
প্রেমে পরা খুব কঠিন কিছু কি? আমার তেমনটা মনে হয় না! আবেগ কিংবা অনুভূতি দিয়ে ভালোবাসার বীজ বোপন করা যায় অনেকটা সহজেই। অতঃপর সেই প্রেম কে যত্ন নেওয়া, নিয়মিত প্রয়োজনীয় আবেগ ঢেলে সাজানো, ভালোবাসাকে পূর্ণতা দেওয়া বেশ সহজ!
এতটুকু পড়েই ব্যর্থ প্রেমিক/প্রেমিকা কিংবা সফল প্রেমিক/প্রেমিকা, যাই বলি!
পাঠক/পাঠিকার দল, হুংকার ছেড়ে বলে উঠলো, থামুন!
তড়িঘড়ি বলে নেই, ধৈর্য ধরুন, আরেকটু সামনে তো এগিয়ে যান!
ভালোবাসা কে খুব সহজ করে ফেলছি? কিংবা মনে হচ্ছে ভালোবাসার মত স্বর্গীয় আবেগটিকে এভাবে সস্তা বানিয়ে ফেলছি বারংবার সহজ বলে? আসলে আমার উদ্দেশ্য এমনটাই ছিল, স্বর্গীয় এই আবেগটাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধাভরা তুচ্ছতা দেখানো।
এবার তবে ভাবুন, "স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন" পড়েছেন তো এই ভাবসম্প্রসারণটি?
এবার তবে মূলকথা বলি, কিসের মধ্যে কি? পান্তা ভাতে ঘি ঢেলে দিচ্ছি? উহু! মনে হয় না ! উত্তর পাবেন, আগে পড়তে থাকুন লেখাটি! অধৈর্য হলে চলবে কি করে? ধৈর্য যে মহৎ গুণ! আর জীবনেও বেশ উপকারি বলে পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত!
ভালোবাসার যত্ন নিতে হয়। আমরা সবাই এটা জানি! আসুন ভালোবাসা রান্না করি তবে এবার! কেকা ফেরদৌসীর ছাত্র ভেবে ভুল করবেন না দয়া করে, ও পথ আমি মাড়াইনি, সে নিশ্চয়তা দিয়ে রাখি।
একটি পাত্র নিন। যার নাম দিলাম ভালো লাগা! এরপর,সে পাত্রে রাগ,ঘৃণা,অভিমান,আদর,ত্যাগ, আত্মত্যাগ, পরিবর্তন সব গুলো একসাথে নিয়ে বিশাল বড় একটি হৃদয়ে ঢেলে দিন। সেকি! পাত্রের নাম বদলে দিলাম? আরে নাহ! আপনিই বলুন, সঠিক পরিমাণে সব দেওয়ার পর পাত্রের নাম তো আপনা আপনি বদলে শুধু "হৃদয়" হয়ে যায় না? ভেবে দেখুন। এবার, প্রেমিক প্রেমিকার মনজোড়া নিয়ে স্বহস্তে ঢেলে দিন। ব্যস, ঝামেলা শেষ! এবার দুজন মিলে দিন জোড়ে ঘুটা! বুঝেছেন তো দুটি হৃদয় দিয়ে দিলেন একটি হৃদয়ে! হয়ে গেলো দু'য়ে মিলে এক! পেয়ে গেলেন প্রেম নামের পাত্র কি করে হৃদয় নাম ধারণ করে নিল?
কি পেলেন? ভালোবাসা! একটি পরিপূর্ণ সম্পর্ক ! রান্না শেষ? ভুল ভাবছেন! রান্না তো শুরু হল সবে মাত্র! উল্লেখিত উপাদানগুলো উদ্বায়ী পদার্থ। এই যে জীবন নামের চুলোতে ভালোবাসা চড়ালেন! এটা জানেন কি? পুড়ে পুড়ে সব আবেগ যে উবে যায়, হাওয়াতে মিলিয়ে যায় ! স্মৃতি হিসেবে! আর তাই ঘুটা দেওয়া চালিয়ে যেতে হয়, চালিয়ে যেতে হয় আবেগ ঢেলে দেওয়ার ব্যাপারটাও !
যতক্ষণ এই প্রক্রিয়ায় কমতি না আসবে, ততক্ষণ সুষ্ঠু ভাবে ভালোবাসাও দৌড়োবে! সাবধান কিন্তু, কমতি এলেই গেলো বুঝি!
এবার দেখুন, হৃদয় নামের পাত্র ভালোবাসা নামধারণ করে ফেললো! এবার বুঝি রান্না সম্পন্ন হয়েই গেলো! আরাম করে উপভোগ করার পালা!
আহা জনাব/জনাবা! থামুন ! সামনে দেখুন!
কঠিন মনে হচ্ছে একটু একটু? আরো ব্যাপার আছে, কখনো কখনো দেখা যাবে এই বুঝি গেলো লাগাম ছিড়ে! ঘুটা দেওয়ার গতি বুঝি কমে এলো একজনের, কিংবা দুজনেরই ! উবে যাওয়ার হার কমে গেলো! আবেগ গুলো জমে যাচ্ছে তো! এ কি করছেন! সচেতন হোন! আবার ঘুটা সমান তালে দেওয়া শুরু করুন!
উফ ! অনেক ক্লান্তি অনুভব হচ্ছে?!
ভয় পাবেন না, আরো আছে তো! ধরুন একজন ঘুটার গতি কমিয়ে দিল , কিংবা কোন একটি প্রয়োজনীয় আবেগ ঢালার প্রক্রিয়ায় ঢিল দিলো! সে পারছে না, পারবেন তো তার জন্য একটু বেশি দিতে? ঘুটার গতি সমান তালে রাখতে? একহাতেই? পারবেন তো তার আবেগ পুরো করে ঢেলে দিতে, সেই ভালোবাসা নামের পাত্রে?! পাত্রের নাম বদলে গেলো! হুম। হৃদয় এখন পুরোপুরি ভালোবাসা হয়েছে, হচ্ছে, হতে থাকবে! এটি তো চিরচলমান প্রক্রিয়া!
খুব বেশি ক্লান্ত হয়েছেন? মনে কি হচ্ছে একটু হলেও? ভালোবাসার শুরুটা কত সহজ, পথটা চলার থেকে?
মিল খুঁজে পেয়েছেন কিছুটা? "স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন"- এই কথাটুকুর সাথে?
তাহলে সময় করে দেখে নিবেন, প্রাক্তন নামের চলচ্চিত্রটি!
ভালোই লাগবে আশা করি!
আর রিভিউ এ কিসব লিখলাম ! আশা করি মুভিটি দেখেই সম্পর্ক খুঁজে নিবেন! উপরে লেখা কথাগুলর সাথে!
শেষ করছি একটি কবিতা দিয়ে, রবীন্দ্রনাথের 'হঠাৎ দেখা' কবিতার কিছু অংশ দিয়ে,
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম নাকি ।
ও বললে, 'থাক এখন যাও ও দিকে'
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে ।
আমি চললেম একা ।।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৪