যশোরের চৌগাছায় অজ্ঞাত ব্যক্তির দেওয়া চেতনানাশক খেয়ে আনোয়ারা বেগম (৬০) নামে এক নারী মারা গেছেন। তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মনু মাস্টারের (৭০) অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
তারা উভয়েই চৌগাছা উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের আন্দারকোটা গ্রামের বাসিন্দা।
তাদের একমাত্র ছেলে মাসুদ রানা মালয়েশিয়া প্রবাসী এবং এক মেয়ে লিপি আমেরিকার নাগরিক। স্বামী-স্ত্রীও দির্ঘদিন যাবৎ আমেরিকায় থেকে দেশে বাড়িতে এসে বসবাস করছিলেন।
নিহতের ভাইপো হাফিজুর রহমান বলেন, আজ রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে হঠাৎ কিছুটা চেচামেচি শুনে এ বাড়িতে আসি। এসে দেখি চাচা এবং চাচি উভয়েই ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছেন। তারা বারবার টয়লেটে যাচ্ছিলেন এবং তাদের গায়ে ময়লাও লেগে ছিল। এ অবস্থায় দ্রুত চৌগাছা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের যশোরে জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন ডাক্তাররা। যশোরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে চাচির মৃত্যু হয়। চাচা মনু মাস্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রতিবেশী সেলিনা বেগম বলেন, চেচামেচি শুনে এগিয়ে দেখি, একজন লোক দ্রুত পায়ে সেখান থেকে চলে যাচ্ছে। শুনেছি, তিনি চাচা-চাচির ধর্মআত্মীয়। তাদের মেয়ে লিপি আমেরিকা থাকেন। সেখান থেকে শনিবার কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন। আজ সকালে চাচা (মনু মাস্টার) চৌগাছার একটি ব্যাংক থেকে সেই টাকা তুলে আনেন।
নিহতের পুত্রবধূ নার্গিস বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি সকাল সাতটার সময় ছেলেমেয়েকে নিয়ে চৌগাছায় স্কুলে চলে যান। বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে এসে জানতে পারেন তার শ্বশুর এবং শাশুড়িকে চৌগাছা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে যশোর হাসপাতালে নেয়ার পথে শাশুড়ির মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, শ্বশুর-শাশুড়ির এক ধর্মআত্মীয় চুয়াডাঙ্গার দিকে বাড়ি হবে। আমার শ্বশুর এবং শাশুড়ি তার সাথে মাঝেমধ্যে মোবাইলফোনে কথা বলতেন। গত রাতেও আমার শ্বশুর তার সাথে কথা বলেছেন। সেসময় মেয়ে টাকা পাঠিয়েছে একথাও জানান। তবে কত টাকা ছিল সেটা আমি জানি না।
চৌগাছা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত আব্দুল হাই জানান, তাদের বেলা সাড়ে এগারটার দিকে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
স্বরূপদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চেতনানাশক জাতীয় কিছু খাওয়ানোর ফলে মুরব্বি দুজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনোয়ারা বেগম মারা যান।
হাসপাতালের সিনিয়র নার্স সালমা বেগম ডাক্তার ওবায়দুল কাদের উজ্জ্বলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আননোন বা ওটিসি পয়জনিং রোগী হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আনোয়ারা বেগমকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
চৌগাছা থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকেই ঘটনা শুনছি। এখনই খবর নিয়ে দেখছি।
০৭.১০.১৮
Attachments area
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫৫